আতিকুর রহমান, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহ সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস দূর্নীতির আখড়ায় পরিনত হয়েছে। শিক্ষক নিবন্ধন থেকে পদায়ন, এমপিও থেকে নিয়োগ সব কিছুই হয় টাকার বিনিময়ে। জাল সদনে চাকরী প্রদান ও ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনও হয় অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে। আর এই কাজে সিদ্ধহস্ত ঝিনাইদহ সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসার শেখ মোহাম্মাদ কামরুজ্জামান।
২০২১ সালের ১৮ অক্টোবর ঝিনাইদহ সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হিসাবে যোগদানের পর থেকে নানা অনিয়ম দূর্নীতির সাথে নিজে সম্পৃক্ত রেখেছেন কামরুজ্জামান। ঘুষ ছাড়া ওই অফিসে কোন কাজই হয় না। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করতে মোটা অংকের টাকা দাবী করেন। এদিকে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মোশাররফ হোসেন মাধ্যমিক বিদ্যালয় এমপিভুক্ত করতে জাল সদনে ভুয়া নিয়োগ দেখিয়ে কোরাম পূর্ণ করেন। এই বিদ্যালয় এমপিওভুক্ত করতে অযোগ্য প্রধান শিক্ষককে অর্থের মাধ্যমে যোগ্য বানিয়ে এমপিও আবেদনে সাক্ষর করে ২৩ লাখ টাকা ঘুষ নিয়েছেন এমন কথা চাউর হয়েছে।
অনুসন্ধান করে জানা গেছে, ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মধুহাটী ইউনিয়নের একটি স্কুলে অর্থের বিনিময়ে জাল সদনে চাকরী দিতে ম্যানেজিং কমিটির কাছে সুপারিশ করেন শিক্ষা অফিসার কামরুজ্জামান। এদিকে সারা দেশ ব্যাপী “পারফরমেন্স বেজড গ্র্যান্টস ফর সেকেন্ডরী ইন্সটিটিউটশনস” প্রকল্পের ২০২২-২৩ অর্থ বছরে প্রথম ধাপে সদর উপজেলার ১৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়। পাঁচটি খাতে এই টাকা বরাদ্দের কথা ছিল। কিন্তু সেই টাকা ভুয়া বিল ভাউচারে পকেটস্থ করা হয়েছে। শিক্ষা কর্মকর্তা সুযোগ কাজে লাগিয়ে অনুদান প্রাপ্ত স্কুল ও মাদ্রাসা থেকে ২০ হাজার টাকা সম্মানী হিসাবে নিয়েছেন বলে অভিযোগ। একই ভাবে পিবিজিএসআই প্রকল্পের ২০২৩- ২৪ অর্থ বছরে সদর উপজেলার অনুদান প্রাপ্ত ৭ টি স্কুল থেকেও অর্থ আদায় করেছেন তিনি।
সরজমিনে তথ্য নিয়ে জানা যায়, সদর উপজেলার মধুহাটি ইউনিয়নের বেড়শুলা মাদ্রাসা ও হলিধানী আলিম মাদ্রাসার শিক্ষক নিয়োগে ম্যানেজিং কমিটির অনৈতিক সুবিধা পাইয়ে দিতে লাখ লাখ হাতিয়ে নিয়েছেন শিক্ষা অফিসার কামরুজ্জামান।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসার শেখ মোহাম্মাদ কামরুজ্জামান জানান, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা সঠিক নয়। আমি দুর্নীতি করি না কাউকে করতে দিই না।
এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত জেলা শিক্ষা অফিসার আজহারুল ইসলাম জানান, নতুন যোগদানের কারনে বিষয়টি সম্পর্কে অবগত ছিলাম না। তবে স্কুল নিয়ে জেলায় যদি কেউ দূর্নীতি করে তবে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। যদি কাউকে পাওয়া যায় তবে তথ্য প্রমানের ভিত্তিতে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।