October 9, 2024 - 4:16 pm
তথ‌্য অ‌ধিদপ্ত‌রের নিবন্ধন নম্বরঃ ৭৭
Homeসারাদেশ ও রাজনীতিসারাদেশরায়গঞ্জে ইটভাটার গ্যাসে কৃষকের ধানের সর্বনাশ

রায়গঞ্জে ইটভাটার গ্যাসে কৃষকের ধানের সর্বনাশ

spot_img

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে মোড়দিয়া গ্রামের প্রায় ১৫/২০ বিঘা জমির আধা পাকা ধান ইটভাটা থেকে নির্গত বিষাক্ত গ্যাসে পোড়ে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় অভিযোগ করেছে এলাকার কৃষকরা। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা ক্ষতিপূরণ দাবি করে উপজেলা কৃষি অফিস বরাবর অভিযোগ দাখিল করলেও, সুফল পাচ্ছে না তারা।

আজ শুক্রবার বিকেলে সরেজমিনে উপজেলার মোড়দিয়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, সুপার ব্রিকস এর উত্তর পাশের জমির ধান পুড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। অথচ ইটভাটার দুইশত গজ উত্তর পাশের জমির ধানের কোন ক্ষতি হয়নি।

ফসলি জমির মাঠে গেলে দুর থেকে মনে হবে ধানগুলো পেকে সোনালী বর্ণ ধারণ করেছে। অথচ জমির কাছে গেলে দেখা যাবে পাতাসহ ধানগুলো পুড়ে নষ্ট হয়ে গেছে।
কৃষক ও এলাকার সাধারণ জনগনের অভিযোগ বলেন, গত ২৯ মে বুধবার সন্ধ্যায় সুপার ব্রিকস এর ইট পোড়ানোর কাজে সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তিরা ইট ভাটার ইট পোড়ানো চেম্বারে জমে থাকা বিষাক্ত গ্যাস চেম্বার থেকে ছেড়ে দেন। গ্যাস ছাড়ার সাথে সাথে এলাকার বাতাস উত্তপ্ত হয়ে যায়।

ইট ভাটার বিষাক্ত বাতাস যে দিক দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে সেই দিকের ফসলি জমির আধাপাকা ধান পুড়ে গেছে। সাথে সাথে আশেপাশের বিভিন্ন গাছের সবুজ পাতা ঝড়ে গেছে। কৃষকদের অভিযোগ সুপার ব্রিকস নামক ইটভাটা থেকে ছেড়ে দেয়া ধোঁয়া ও নির্গত গ্যাসেই ধান পুড়ে নষ্ট হয়েছে।

অভিযোগকারী অজিত ও জীবন সহ স্থানীয় কৃষকরা জানান তাদের প্রায় ১৫/২০ বিঘা জমির ধান পুড়ে নষ্ট হয়ে গেছে।

কৃষক জীবন বলেন, ধার দেনা করে তিন বিঘা জমিতে ধান আবাদ করছিলাম, ইট ভাটার গ্যাসে সব ধান পুড়ে শেষ হয়ে গেছে। কৃষক অজিত আড়াই বিঘা বর্গাসহ সাড়ে তিন বিঘা জমিতে ধান আবাদ করেছিলেন। তারা জানান,বর্তমানে ক্ষেতের ধান কাটার উপযোগী হত কিন্ত ইট ভাটার গ্যাসে সব ধান পুড়ে নষ্ট হয়ে গেছে।
কৃষক উৎপল কুমার বলেন, ধানতো পুড়েছেই, সাথে অন্যান্য গাছের কাঁচা পাতাও ঝরে পড়েছে। এভাবে মোড়দিয়া গ্রামের কৃষকের সোনালী ধান গোলায় তোলার স্বপ্ন পুড়ে ছাই হয়ে গেছে ইট ভাট থেকে নির্গত বিসাক্ত গ্যাসে।

সুপার ব্রিকস এর মালিক পক্ষের লোকজনের সাথে কথা বললে তারা ইটভাটার ধোয়া ও নির্গত বিষাক্ত গ্যাসের কারনে জমির ধান পুড়ে যাওয়া ও নষ্ট হওয়ার বিষয়টি প্রাথমিক ভাবে অস্বীকার করেন। তবে তদন্তে বিষয়টি প্রমানিত হলে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের ক্ষতিপূরন প্রদানের আশ্বাস প্রদান করেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুর রউফ বলেন, ইটের ভাটার গ্যাসে ধান পুড়ে যাওয়ার বিষয়ে গ্রামবাসীর দেয়া একটি অভিযোগ পেয়েছি। সরেজমিনে গিয়ে বিষয়টি তদন্ত করে দেখেছি। প্রাথমিক তদন্তে ধারনা করা হচ্ছে ইটভাট্রা নির্গত ধোয়া ও গ্যাসের কারনেই ক্ষেতের ধান নষ্ট হয়েছে।’

উপজেলা চেয়ারম্যান এ্যাড. ইমরুল হোসেন তালুকদার বলেন, ‘বিভিন্ন দুর্যোগের কারণে এমনিতেই তারা অসহায়। তারপর কৃষকের শেষ সম্বল ধান নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তারা আরো ক্ষতির মধ্যে পড়ল। আমি আশা করি ইটভাটার মালিকরা বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে দ্রুত ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকের ক্ষতিপূরণ ব্যবস্থা করবেন।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান জানান , ‘অভিযোগ পেয়ে এ বিষয়টি উপজেলা কৃষি অফিসারকে তদন্তের নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। যদি ইটভাটার বিষাক্ত গ্যাসে কৃষকের ধানের ক্ষতির বিষয়টি প্রমানিত হয় তবে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের অবশ্যই ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। তা না হলে ইটভাটার মালিক সহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন
spot_img

সর্বশেষ সংবাদ