নিজস্ব প্রতিবেদক : আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনামলে গুম-খুন ও জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের পৃথক তিন মামলায় ১ ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
বুধবার (২২ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১ এই আদেশ দেন।
ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
এছাড়া গুমের অভিযোগে করা দুটি মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ২০ নভেম্বর দিন ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল। আর গত বছরের ১৮ ও ১৯ জুলাই রামপুরায় গণহত্যা চালানোর অভিযোগে করা মামলায় শুনানির জন্য ৫ নভেম্বর দিন ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল।
এর আগে এদিন সকাল সোয়া ৭টায় কড়া নিরাপত্তায় প্রিজনভ্যানে করে তাদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। সাড়ে ৭টায় প্রিজনভ্যান থেকে নামিয়ে তাদের ট্রাইব্যুনালের হাজতখানায় নিয়ে যান পুলিশ সদস্যরা।
যে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তাদের মধ্যে ১৪ জন কর্মরত আছেন। একজন এখন অবসরকালীন ছুটিতে।
তারা হলেন- র্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, ব্রিগেডিয়ার কে এম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন ও কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (এখন অবসরকালীন ছুটিতে); র্যাবের গোয়েন্দা শাখার সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ রেদোয়ানুল ইসলাম, বিজিবির সাবেক কর্মকর্তা মেজর মো. রাফাত-বিন-আলম।
ডিজিএফআইয়ের সাবেক তিনজন পরিচালক মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকীকেও কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, শুনানি শেষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, আসামিদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গ্রেপ্তার করে ট্রাইব্যুনালে আনলে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। এখন আসামিদেরকে কোন কারাগারে রাখা হবে তা কারা কর্তৃপক্ষ নির্ধারণ করবে।
প্রসঙ্গত, গুম ও খুনের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে গেলো ৮ অক্টোবর গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এর মধ্যে ডিজিএফআইয়ের সাবেক ৫ প্রধানসহ ২৫ জন সেনা কর্মকর্তা রয়েছেন। যা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা। কারণ দেশের ইতিহাসে চাকরিরত অবস্থায় এত সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা এটাই প্রথম।
২১ অক্টোবরের মধ্যে তাদের গ্রেফতার করে ২২ অক্টোবর ট্রাইব্যুনালে হাজির করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছিল।
আরও পড়ুন:
নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ করার জন্য যা কিছু প্রয়োজন, আমরা তা করব: প্রধান উপদেষ্টা


