সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে সিপাহি পদে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার এক যুবকের কাছ থেকে ২১ লাখ ৭০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কামারখন্দ উপজেলার জামতৈল ইউনিয়নের চরটেংরাইল গ্রামের মো. ফিরোজ উদ্দিন ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে।
প্রতারিত ভুক্তভোগী উল্লাপাড়ার বেতকান্দি গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে মো. আব্দুল মালেক জানান, ফিরোজ উদ্দিন বর্তমানে মিরপুরের সামরিক বাহিনী কমান্ড ও স্টাফ কলেজে অফিস সহায়ক কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে (ব্যক্তিগত নম্বর—১১৯১৪) কর্মরত। ফিরোজ ও তার শ্যালক রাশিদুল ইসলাম (প্রবাসী এজেন্সি ব্যবসায়ী, মধ্য বাড্ডা, ঢাকা) চাকরির আশ্বাস দিয়ে দফায় দফায় ব্যাংক চেক ও নগদে মোট ২১ লাখ ৭০ হাজার টাকা, ৭টি স্ট্যাম্প ও ৭টি চেক গ্রহণ করেন।
এরপর তারা মালেককে ভুয়া নিয়োগপত্র ও জাল পুলিশ ভেরিফিকেশন সরবরাহ করে জানায় যে তার পদায়ন হবে কক্সবাজারের টেকনাফে এবং প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হবে রাজশাহীতে। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে প্রশিক্ষণে যোগ দিতে গেলে মালেক জানতে পারেন, নিয়োগপত্র ও ভেরিফিকেশন দুটোই সম্পূর্ণ জাল।
পরবর্তীতে টাকা ফেরত চাইলে ফিরোজ ও রাশিদুল নানা অজুহাতে সময়ক্ষেপণ শুরু করেন। স্থানীয়ভাবে একাধিকবার সালিশ বৈঠক বসে, যেখানে ফিরোজের মামা ও কামারখন্দ উপজেলার জামায়াতের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আতাউর রহমান মধ্যস্থতা করেন। বৈঠকে টাকা লেনদেনের বিষয়টি প্রমাণিত হলে আতাউর রহমান বোনের সম্পত্তি বিক্রি করে টাকা ফেরতের আশ্বাস দেন এবং মালেকের হাতে ১০টি ব্যাংক চেক তুলে দেন। কিন্তু ব্যাংকে চেক জমা দিলে কর্মকর্তারা জানান, স্বাক্ষর জাল হওয়ায় সেগুলো গ্রহণযোগ্য নয়।
মালেক অভিযোগ করেন, বিষয়টি জেলা জামায়াতের আমির ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের অবহিত করা হলেও কোনো সমাধান হয়নি। বরং সম্প্রতি অভিযুক্তদের পক্ষ থেকে ফোনে হুমকি পাচ্ছেন তিনি। এ বিষয়ে র্যাব-১২-কে অবহিত করা হলেও এখনো কোনো আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে জানান ভুক্তভোগী।
অভিযুক্ত আতাউর রহমান বলেন, “টাকা নেওয়ার বিষয়টি সত্য। বোনের সম্পত্তি বিক্রির পর ফেরত দেওয়ার বিষয়ে ভাগ্নে ও বোন জামাইদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে, কিন্তু তারা টাকা দেয়নি।” তবে চেক জালিয়াতি ও হুমকির অভিযোগ বিষয়ে তিনি মন্তব্য করতে রাজি হননি।
কামারখন্দ থানার এসআই মো. মান্নান বলেন, “ভুক্তভোগীর অনুরোধে উভয়পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করা হয়েছিল। বিবাদীপক্ষ ৩০ নভেম্বরের মধ্যে আংশিক টাকা পরিশোধের প্রস্তাব দেয়, তবে বাদী তা প্রত্যাখ্যান করেন।”
কামারখন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপাশা হোসাইন বলেন, “বিষয়টি সংবাদমাধ্যমের মাধ্যমে জেনেছি। তবে এখনো কেউ আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ দাখিল করেননি।”


