চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গা শহরের জান্নাতুল মওলা কবরস্থানের কাছে থেকে হাত-পা বাধা অবস্থায় উদ্ধার হওয়া যুবক সেনা সদস্য না বলে জানা গেছে।
শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে চুয়াডাঙ্গা আর্মি ক্যাম্প থেকে একজন কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আর্মি ক্যাম্প সুত্রে জানা গেছে, গত দু’দিন আগে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার যুবক শরিফুল ইসলাম শান্ত চুয়াডাঙ্গা শহরের গোরস্থানপাড়ার ওমর আলীর মেয়ে প্রেমিকা উর্মির সঙ্গে দেখা করতে আসেন। গত দু’দিন ঘুরাঘুরি শেষে শুক্রবার রাতে প্রেমিকা উর্মিকে নিয়ে পালানোর কথা ছিল। তবে পালানোর সময় প্রেমিকার পরিবারের সদস্যদের হাতে ধরা পড়লে তারা শান্তকে পিটিয়ে জান্নাতুল মওলা কবরস্থানে ফেলে রাখে।
আর্মি ক্যাম্প সুত্রে আরও জানা গেছে, শরিফুল ইসলাম শান্ত বাংলাদেশ আর্মির সঙ্গে কোন সম্পর্ক নেই। তার নিকট থেকে পাওয়া আইটেমগুলো চট্টগ্রাম আর্মি স্টোর থেকে কেনা হয়েছে।
এর আগে, শনিবার (১১ জানুয়ারি) বেলা ১২টার দিকে স্থানীয়রা হাত-পা বাধা অবস্থায় জান্নাতুল মাওলা কবরস্থানের মধ্যে পড়ে থাকতে দেখে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এ কল দিয়ে পুলিশকে জানায়। পরে সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে তাকে মুমুর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া শীতের পোশাক দেখে পুলিশের প্রাথমিক ধারণা ছিল তিনি সেনাসদস্য হতে পারেন।
যুবককে উদ্ধারের পর চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) খালেদুর রহমান জানিয়েছিলেন, শনিবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে জানতে পারি জান্নাতুল মাওলা কবরস্থানের বাগানের মধ্যে হাত-পা বাঁধা ও অচেতন অবস্থায় এক ব্যক্তি পড়ে আছেন। পরে আমিসহ পুলিশের টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে যুবককে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
তিনি আরও বলেন, হাসপাতালে ভর্তির কিছুক্ষণ পর একটু সুস্থতাবোধ করলে নিজের নাম শরিফুল ইসলাম শান্ত বলে জানান তিনি। নিজেকে একজন সেনাবাহিনীর সৈনিক বলেও দাবি করেন। তার কর্মস্থল খুলনায় ও বাড়ি চট্রগ্রামে বলে জানিয়েছিলেন তিনি।
ওসি খালেদুর রহমান বলেন, ঘটনাস্থল থেকে সেনাবাহিনীর মনোগ্রামযুক্ত শীতের পোশাক (ট্রাকসুট) ও জ্যাকেটের একটা পাট (গলায় মাফলার হিসেবে ব্যবহার করা হয়) পাওয়া গেছে। হাতে থাকা ঘড়িটিও সেনাবাহিনীর মনোগ্রামের রঙের সঙ্গে মিল রয়েছে। এছাড়া, তার প্রাথমিক আলামত ও চুলের কার্টিং দেখে ধারণা করা হচ্ছিলো তিনি সেনাসদস্য হতে পারেন। যাচাই করার জন্য বিজিবি ও সেনাসদস্যদের জানানো হয়।
বিজিবি যাচাই করে জানিয়েছেন এই যুবকের সঙ্গে বিজিবির কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। তবে সন্ধ্যায় চুয়াডাঙ্গা আর্মি ক্যাম্প থেকে জানানো হয়, বাংলাদেশ আর্মির সঙ্গে তার কোন সম্পর্ক নেই। প্রেমিকাকে নিয়ে পালানোর সময় ধরা পড়ে। পরে প্রেমিকার পরিবারের সদস্যরা তাকে পিটিয়ে হাত-পা বেধে ফেলে চলে যায়।