বগুড়া প্রতিনিধি: গত ৬ ডিসেম্বর পূর্ব শত্রুতার জেরে স্থানীয় প্রভাবশালীদের দ্বারা মারপিটের শিকার হন বগুড়ার ধুনটের স্কুল শিক্ষিকা ফৌজিয়া হক বিথী। ঘটনার পর তিনি থানায় এজাহার দায়ের করেন। কিন্তু থানার ওসি সাইদুল আলম গত এক মাসেও সেটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করেননি। ওসি মামলা না নেয়ায় ওই প্রভাবশালী পক্ষের প্রতিনিয়ত অত্যাচার এবং হুমকি ধামকিতে নিরাপত্তাহীনতা ভুগছেন স্কুল শিক্ষিকা।
এর আগে গত ৫ ডিসেম্বর স্কুল যাওয়ার পথে বগুড়ার ধুনটের বেলকুচি সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা ফৌজিয়া হক বিথী স্থানীয় প্রভাবশালীদের দ্বারা মারপিটের শিকার হন। পরে ৭ ডিসেম্বর তিনি থানায় এজাহার দায়ের করেন। বিথী বেলকুচি গ্রামের রাজ্জাকুল কবির বিদ্যুৎ এর স্ত্রী।
বিথী এজাহারে উল্লেখ করেন, গত ৫ ডিসেম্বর তিনি বাড়ি থেকে বের হয়ে পায়ে হেটে বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে কয়েকজন স্থানীয় প্রভাবশালী তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ এবং কুরুচিপূর্ণ ইঙ্গিত করেন। এরপর তিনি বিষয়টি তার ভাতিজা রাশেদ বাবু ভুট্টু, রাসেল মাহমুদকে জানালে তারা প্রতিবাদ করে। এতে তারা তাদের উপর ক্ষিপ্ত হয়। পরে গত ৬ ডিসেম্বর বিকাল আনুমানিক ৫টায় রাশেদ বাবু ভুট্টু ও রাসেল মাহমুদ বেলকুচি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গেলে আসামীরা তাদের মারপিট করে। এ খবর শুনে তিনি তার ছেলে আহনাফ কবির বর্ণিল (১৫) কে নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। তিনি আসামীদের বাধা দিলে তারা তাকেও মারপিট করেন। পরে তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন আসলে আসামীরা তাদের ফেলে চলে যায়।
স্কুল শিক্ষিকা ফৌজিয়া হক বিথী বলেন, গত ৭ ডিসেম্বর থানায় এজাহার দিয়েছি। ওসি সাহেব তদন্ত সাপেক্ষের ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত তারা কিছুই করেনি। এজাহারের তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই স্বপন। তাকেও একাধিকবার ফোন দিয়েছি জানার জন্য তারা কি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে কিনা। তিনি জানিয়েছেন, আমরা আপনাকে ডাকবো। তখন থানায় আসেন। কিন্তু তারা আমাকে ডাকেনি। আমি ফোন দিলেও তিনি আর রিসিভ করেন না।
এদিকে আসামী পক্ষের লোকজন দুই তিন পরপর গভীর রাতে আমার বাড়িতে ঢিল ছুড়ছে। মাঝে মধ্যে রাতে দরজায় লাঠি দিয়ে আঘাত করে করে যাচ্ছে। রাস্তাঘাটে চলাফেরার সময় অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। আমার কর্মস্থল স্কুল মাঠে এসেও গালিগালাজ করে। বাড়ি থেকে স্কুল যাওয়ার পথে বা স্কুল থেকে বাড়ি যাওয়ার পথে তাদের লোকজন আমার পিছু পিছু আসে এবং থুথু ফেলে গালিগালাজ করে। গতকাল রাত আড়াইটায় আমার বাড়িতে অনেকগুলো ঢিল ছুড়েছে। আমি খুব অতিষ্ট। আমি এর সুষ্ঠু সমাধান চাই।
এ বিষয়ে ধুনট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইদুল আলম বলেন, এজাহারটা ওই অবস্থাতেই আছে। আমরা তদন্ত করে দেখেছি ওটা নিজেদের পারিবারিক একটা বিষয়। তার ভাতিজার সাথে দ্বন্দ্ব। এটা সামান্য বিষয়। এজাহার করার মতো না আর কি। রাস্তায় গালিগালাজ এটা সত্য বিষয় না। পারিবারিক দ্বন্দ্বের জেরে তাদের মধ্যে একটা মানসিক একটা বিষয় কাজ করছে। বাড়িতে ঢিল ছোড়া বা দরজায় লাঠির আঘাতের কোন তথ্য পাইনি। এজাহারে তো ওরকম কিছু লেখা নেই। এটাকে পারিবারিক বিষয় হয়ে থাকলে থানা থেকে বিষয়টি সুরাহা করার কোন সুযোগ আছে কিনা বা চেষ্টা করেছিলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনও করা হয়নি। তবে আমরা উভয়পক্ষকে ডেকে আপোষ মীমাংসার চেষ্টা করবো।