সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জ-কাজিপুর আঞ্চলিক সড়কে শালুয়াভিটা হাটে সড়ক ও জনপদ বিভাগের জায়গা দখল করে দোকান নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে বিএনপি নেতা সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে। সাইফুল ইসলাম খোকশাবাড়ি ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক প্রচার সম্পাদক। প্রভাবশালী এই বিএনপি নেতার ভয়ে নির্মাণ কাজে বাঁধা দিচ্ছেনা কেউ।
শনিবার (২১ ডিসেম্বর)। সকালে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, সড়ক ও জনপদ বিভাগের পক্ষ থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের নোটিশ দিলেও তোয়াক্কা করছেনা এই বিএনপি নেতা সাইফুল ইসলাম।
জানা গেছে, সড়ক বিভাগের পক্ষ থেকে জায়গা দখল মুক্ত করার নোটিশ দেওয়া হলেও বিএনপি নেতা সাইফুল ইসলাম, তার শশুর লুৎফর রহমান, আব্দুর রাজ্জাক কুরান, আলতাফ হোসেন, আবু হাসেম, ওলিউল ডাক্তার, জুলহাস ডাক্তার, সমিদুল ইসলাম, সইিদুল ইসলাম, সিরাজুল ইসলাম, জাকির হোসেন, আব্দুল্লাহ ও দোকান পজিশন দিয়েছে ফেজুল হোসেন ২ লাখ ৪৫ হাজার, ফরিদ ২ লাখ, শাহাদত ৪০ হাজার, মুক্তার হোসেন ৫০ হাজার, মৃত হাসিবুল ৭০ হাজার। এই টাকা বিএনপি নেতা নিয়ে সড়ক ও জনপদের জায়গায় অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করে দিচ্ছে। বর্তমানে দোকান ঘর নির্মাণ ও সরকারি জায়গা দখল করে টিনের ঘর নির্মাণ কাজ চলামান রয়েছে।’
শালুয়াভিটা হাটের ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন বলেন, গত বছর এই হাটের ইজারা বাতিল করেছে সরকার। তার পরেও জেলা প্রশাসকের নির্দেশ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও এসিল্যান্ড ঘটনাস্থলে গিয়ে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে সরকারী জায়গা বুঝে নেয়। দীর্ঘদিন ওই জায়গায় ফাঁকা ছিলো। সরকার পতনের সুযোগে এই বিএনপি নেতা অবৈধভাবে একের পর এক সরকারী জায়গা দখল করে ঘর নির্মাণ করে পজিশন দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন।
খোকশাবাড়ি ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি হাফিজুর রহমান খোকা বলেন, সড়ক ও জনপদের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে এসে অবৈধভাবে ঘর নির্মাণ বন্ধের নোটিশ দিয়েছে। তার পরেও দলের নাম ভাঙ্গিয়ে সাইফুল ইসলাম সরকারি জায়গা দখল করে দোকান নির্মাণ করে বিভিন্ন লোকের নিকট থেকে লাখ লাখ টাকা বাণিজ্য করেছে। দলের নাম ভাঙ্গিয়ে সাইফুল ইসলাম যেভাবে চাঁদাবাজি করছে এতে দলের ভাবমুর্তি নষ্ট হচ্ছে। বিষয়টি জেলা বিএনপির নেতাদের দৃষ্টি কামনা করছি।
শালুয়াভিটা বাজার বনিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন জানান, সরকারের প্রতি সম্মান জানিয়ে সরকারি জায়গা ছেড়ে দিয়ে ব্যবসা করে আসছি। কিন্তু বিএনপি নেতা সাইফুল ইসলাম সরকারের নিয়মনীতি না মেনে অবৈধভাবে ঘর নির্মাণ করছে। সড়ক ও জনপদের জায়গা জোড়পুর্বক দখল করায় আমাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এই অবৈধ স্থাপনা দ্রুত বন্ধের জন্য সড়ক বিভাগের কর্মকর্তাদের নিকট আমরা ব্যবসায়ীরা জোড়দাবী জানাচ্ছি।’
সড়ক ও জনপদের জায়গায় ঘর নির্মাণের বিষয়ে জানতে চাইলে ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক প্রচার সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বলেন, এই হাটে আমার সহ অনেক ব্যবসায়ীর দোকান ছিলো। সরকারের পক্ষ থেকে উচ্ছেদ করে দিয়েছিলো। তাই আমি সহ অন্যান্য ব্যবসায়ীরা পুনরায় ঘর নির্মাণ করছি।
পজিশন বাবদ লাখ লাখ টাকা নিচ্ছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঘর নির্মাণের জন্য কিছু টাকা নেওয়া হচ্ছে। সেই টাকা দিয়ে ঘর নির্মাণ করে দিচ্ছি। তবে, টাকা নেই বা না নেই সেটা আমার ব্যাপার।
‘এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ সড়র ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইমরান ফারহান সুমেল বলেন, আমাদের সড়র ও জনপদের জায়গায় অবৈধভাবে দোকান ঘর নির্মাণের বিষয়টি অবগত হয়েছি। পরে গত (১৭ ডিসেম্বর)। দোকান ঘর উচ্ছেদের জন্য লিখিভাবে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এই নোটিশের পরেও কেউ যদি ঘর নির্মাণ করে থাকে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।