সাইফুল ইসলাম রুদ্র, নরসিংদী জেলা প্রতিনিধি: চিরকুট লিখে মিফতাউল হাসান প্রতীক (১৮) নামের একছাত্র কলেজ হোস্টেলে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তিনি আব্দুল কাদির মোল্লা সিটি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন।
মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে নরসিংদী শহরের বাসাইল এলাকায় সিটি হাউস নামে একটি ছাত্রাবাসের কক্ষ থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
মিফতাউল হাসান প্রতীক নরসিংদী শহরের বাসাইল এলাকায় সিটি হাউস নামে একটি প্রাইভেট ছাত্রাবাসে থেকে লেখাপড়া করতেন। তিনি ময়মনসিংহ জেলার ধোবাউড়া উপজেলার মাহমুদুল হাসান সোহাগের ছেলে।
প্রতীক মৃত্যুর আগে একটি চিরকুটে লিখেছিলেন- ‘সামিয়া তোমার কথা আমি রাখতে পারলাম না। তুমি আমাকে যথেষ্ট প্রাযােরিটি দিয়েছ। ভালোভাবে পড়াশোনা করো। ফ্যামিলির কথা মেনে চলো। লাইফে অনেক দূর এগিয়ে যাও।’
এদিকে সিটি হাউস ছাত্রবাসের সহকারী হোস্টেল সুপার নাদিমুল ইসলাম বলেন, কলেজ ছুটির পর প্রতীকের রমমেটরা হোস্টেলে এসে রম বন্ধ পেয়ে দরজা খোলার জন্য অনেক ডাকাডাকি করেন। তিনি তাতে সাড়া না দেওয়ায় তারা দরজার ফাঁক দিয়ে ভেতরে কী হচ্ছে তা দেখার চেষ্টা করেন। এ সময় তারা প্রতীককে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। পরে ছাত্ররা খবর দিলে আমরা কয়েকজন মিলে দরজা ভেঙে রমে প্রবেশ করি। পরে ওর বন্ধুরাই তাকে উদ্ধার করে জেলা হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আবদুল কাদির মোল্লা সিটি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. হেরেম উল্যাহ আহছান জানান, কলেজের বাইরে আলাদা একটি প্রাইভেট হোস্টেলে বন্ধুদের সঙ্গে প্রতীক থাকত। ঘটনা শোনার পর ওই হোস্টেলে ছুটে যাই। সেখানে তার বন্ধুর কাছ থেকে একটি লিখিত কাগজ ও বেলুন পাই। বেলুনের মাঝে একটি মেয়ের নাম লেখা রয়েছে। এ ছাড়া মেয়েকে উদ্দেশ করে একটি চিঠি এবং বাবা-মাকে লেখা সান্ত্বনাপত্র পাওয়া যায়।
নরসিংদী জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. এ এন এম মিজানুর রহমান বলেন, মিফতাউল হাসান প্রতীক নামে এক শিক্ষার্থীকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। তার গলায় কালো দাগ রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, গলায় ফাঁস লেগেছিল। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
এ ব্যাপারে নরসিংদী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. কলিমুল্লাহ জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে গেছে। মযনাতদন্তের জন্য লাশ নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। আমরা যেটুকু শুনেছি এটা আত্মহত্যার পরও আমরা তদন্ত করছি। আমাদের তদন্ত এবং মযনাতদন্তের পর প্রকৃত ঘটনাটা জানা যাবে।
এদিকে সদর মডেল থানার ওসি মো. এমদাদুল হকের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।