সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: প্রেমের টানে এক চীনা নাগরিক এখন সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার বিয়ারা গ্রামে অবস্থান করছেন। বিয়ে করেছেন এই গ্রামের অন্তরা খাতুন (২৭) নামের এক মেয়েকে। তিনি গাজীপুরের একটি পোশাক কারখানায় চকুুরি করেন। এদিকে বিদেশী নাগরিক জামাইকে দেখতে গ্রামবাসী অন্তরাদের বাড়িতে ভীড় করছেন।
সোমবার দুপুরে বিয়ারা গ্রামে গিয়ে কথা হয় অন্তরা আর চেংনাং এর সাথে।
এসময় অন্তরা জানান, কয়েক বছর পূর্বে বাবা মার পছন্দের ছেলের সাথে তার বিয়ে হয়। সেইঘরে তার নয় বছর বয়সী একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। এরই মধ্যে স্বামীর সাথে বনিবনা না হওয়ায় তাদের ডিভোর্স হয়ে যায়। পরে তিনি গাজীপুরের একটি পোশাক কারখানায় কাজ নেন। চারমাস পূর্বে তিনি সন্তানকে নিয়ে গাজীপুরের একটি রেস্টুরেন্টে যান। সেখানে দেখা হয় চীনা নাগরিক চেংনাং এর সাথে। এসময় অন্তরাকে দেখে চেংনাং এর ভালো লাগে। দুজন সামাজিক মাধ্যমে ফেসবুকে বন্ধু হন এবং মোবাইল ফোন নম্বর বিনিময় করেন। এরপর থেকে দুজনের মধ্যে যোগাযোগ বাড়তে থাকে।
অন্তরা বাংলা লিখে চীনা ভাষায় অনুবাদ করে চেংনাং এর নিকট পাঠান। এরপর থেকে বেশ কয়েকবার তারা একসাথে ঘুরে বেড়ান। এক পর্যায়ে চেংনাং এর অনুরোধে অন্তরা তার পিতাকে বিষয়টি খুলে বললে তিনি বিয়েতে রাজী হন। দুই পরিবারের সম্মতিতে গত ২২ নভেম্বর গাজীপুর কোর্টে গিয়ে হলফনামার মাধ্যমে চেংনাং ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে অন্তরাকে বিয়ে করেন। এরপর গত শনিবার স্বামীকে নিয়ে অন্তরা বাবার বাড়ি কাজিপুরের বিয়ারা গ্রামে আসেন।
অন্তরার পিতা আব্দুর রশিদ জানান, মেয়ের পছন্দের এই বিয়েতে আমি রাজী হয়েছি। এখন মেয়ে জামাই আমার বাড়িতে আছে।
অন্তরা জানান, চেংনাং এখন বাংলা শিখছেন। আর আমিও চায়না ভাষা শেখার চেষ্টা করছি। তবে কথাবার্তা এখনো ট্রান্সলেট করে আদান প্রদান করি। আমি তাকে আমার পূর্বের বিয়ের কথা বলি। তিনি আমার মেয়েকেও দেখেছেন। সব মেনে নিয়েই তিনি বিয়ে করেছেন। আমরা দুজনে এখন সুখেই আছি।
নিজের অনুভূতির কথা জানতে চাইলে চেংনাং বলেন, আমার বাড়ি চীনের হুনান প্রদেশে। আমার পিতার কারখানা আছে। বন্ধুদের সাথে বাংলাদেশে ঘুরতে আসি। অন্তরাকে দেখে আমার ভালো লাগে। আমরা দুজন কথাবার্তা বলি। একসাথে অনেক সময় কাটাই। এরপর বিয়ে করি। বিয়ের বিষয়টি দেশে তার পিতামাতাকে জানিয়েছেন। শীঘ্রই স্ত্রীকে নিয়ে দেশে যাবেন বলে তিনি জানান।’