স্পোর্টস ডেস্ক : সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানকে রেখেই পাকিস্তানের বিপক্ষে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের দল ঘোষনা করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর জাতীয় দলের হয়ে সাকিবের খেলা অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে।
সরকার পতনের পর আওয়ামী লীগের অধিকাংশ সংসদ সদস্য পলাতক আছেন। সরকার ক্ষমতাচ্যুত হবার সময় গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি লিগে খেলতে কানাডায় ছিলেন আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য সাকিব। এরপরই সাকিবের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিতয়তার মুখে পড়ে। কিন্তু পাকিস্তান সিরিজে খেলার জন্য সাকিবের সম্মতি নিতে তার সাথে কথা বলে বিসিবির নির্বাচক প্যানেল। এখন যুক্তরাষ্ট্রে পরিবারের সাথে থাকা সাকিব সরাসরি পাকিস্তানে দলের সাথে যুক্ত হবেন।
বাংলাদেশ ক্রিকেটের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ৬৭ টেস্টের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন সাকিব। যেহেতু জাতীয় দলের ক্রিকেট থেকে তামিম ইকবাল দূরে আছেন, তাই বিশেষ করে টেস্ট দলে সাকিবের অভিজ্ঞতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
দল নির্বাচক প্যানেলের চেয়ারম্যান গাজী আশরাফ হোসেন লিপু বলেন, ‘এই সংস্করণে সেরা খেলোয়াড় বাছাই করার উপর জোর দেওয়া হয়েছে। এটি ভারসাম্যপূর্ণ দল। মুশফিকুর রহিম, মোমিনুল হক এবং সাকিব আল হাসানের মতো খেলোয়াড়রা মোট ২১৬টি ম্যাচ খেলেছেন এবং এমন অভিজ্ঞতার কোন বিকল্প নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে স্পিন বিভাগ সামলাচ্ছেন তাইজুল ইসলাম এবং মেহেদি হাসান মিরাজ। দু’জনে একত্রে ৩৫০টির বেশি উইকেট শিকার করেছেন। আমরা আশা করি নাজমুল হোসেন শান্ত, লিটন দাস এবং অন্যান্য ব্যাটাররা ভালো করবে। কারণ পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দিতাপূর্ণ ক্রিকেট খেলতে হলে দলীয় পারফরমেন্সের প্রয়োজন।’
প্রত্যাশা অনুযায়ী দলে কোন চমক নেই। কারণ টেস্টের বিবেচনায় থাকা খেলোয়াড়দের উপরই আস্থা রেখেছে নির্বাচক প্যানেল।
দলে ফিরেছেন টেস্ট ক্রিকেট থেকে বিরতি নেওয়া পেসার তাসকিন আহমেদ। গত মার্চে শ্রীলংকার বিপক্ষে অনুষ্ঠিত টেস্ট সিরিজে খেলেননি তিনি। তবে প্রধান নির্বাচক জানিয়েছেন, শুধুমাত্র দ্বিতীয় টেস্টে খেলবেন তাসকিন।
আশরাফ বলেন, ‘তাসকিনসহ আমরা পাঁচজন পেসার বেছে নিয়েছি। তবে শুধুমাত্র দ্বিতীয় টেস্টে খেলবেন তাসকিন। গেল বছরের জুন থেকে টেস্টে বোলিং করছে না সে। এজন্য বড় ফরম্যাটে ছন্দ ফিরে পেতে তাকে পাকিস্তান ‘এ’ দলের বিপক্ষে দ্বিতীয় চার দিনের ম্যাচের জন্য বাংলাদেশ ‘এ’ দলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।’
তিনি আরও বলেন, ‘এছাড়াও ওয়ানডে ম্যাচের জন্য ‘এ’ দলে কয়েকজন পেসার যোগ দিতে পারে এবং এজন্যই আমাদের ব্যাকআপের প্রয়োজন ছিল। আমাদের পেসাররা বৈচিত্র্যময় বোলিং, গতি এবং বল সুইং করতে পারে। বিশ্বমানের ব্যাটারদের বিপক্ষে তাদের পারফরমেন্স দেখার অপেক্ষায় আছি।’ এ পর্যন্ত পাকিস্তানের মুখোমুখি হওয়া ১৩ টেস্টের একটিতেও জিততে পারেনি বাংলাদেশ। ২০১৫ সালে ঘরের মাঠে ড্র হওয়া ম্যাচটি এখন পর্যন্ত টাইগারদের সেরা সাফল্য। পাকিস্তানের মাটিতে নিজেদের শেষ টেস্টে ইনিংস ব্যবধানে হেরেছিলো বাংলাদেশ।
আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের সিরিজ খেলতে আগামীকাল পাকিস্তানের উদ্দ্যেশে রওনা দিবে বাংলাদেশ দল।
২১ আগস্ট থেকে রাওয়ালপিন্ডিতে প্রথম টেস্ট এবং ৩০ আগস্ট থেকে করাচিতে দ্বিতীয় টেস্ট শুরু হবে। প্রথম টেস্ট খেলতে ১৭ আগস্ট রাওয়ালপিন্ডি রওনা হবার আগে ১৪ থেকে ১৬ আগস্ট পর্যন্ত লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে অনুশীলন করবে পুরো দল।
বাংলাদেশ দল : নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), মাহমুদুল হাসান জয়, জাকির হাসান, সাদমান ইসলাম, মোমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, লিটন দাস, মেহেদি হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, নাঈম হাসান, নাহিদ রানা, শরিফুল ইসলাম, হাসান মাহমুদ, তাসকিন আহমেদ ও সৈয়দ খালেদ আহমেদ।