সাইফুল ইসলাম তানভীর, মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি: কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালীন মানিকগঞ্জের সিংগাইরের ধল্লা খানপাড়া গ্রামের সাদ মোহাম্মদ খান নামের এক মাদরাসা পড়ুয়া ছাত্র পাশের সাভার এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছে। আন্দোলন করতে গিয়ে খাসেরচর গ্রামের একজন রাবার বুলেটে আহত হয়েছে। কিন্তু আন্দোলনের নামে বিভিন্ন জায়গায় তান্ডব ও রাষ্ট্রীয় সম্পদসহ ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনা ঘটলেও রাজধানীর অতি কাছের উপজেলা সিংগাইরে তার কোনো কিছুই ঘটেনি। আন্দোলন চলাকালে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করলেও বর্তমানে তা অনেকটাই কেটে গেছে এলাকার বাসিন্দাদের মন থেকে।
থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এ এলাকার মুক্তিযুদ্ধ চেতনা বিরোধী জামায়াত-বিএনপির বৃহৎ একটা অংশ সাভারের হত্যাযজ্ঞে ও মানিকগঞ্জের আন্দোলনে সরাসরি অংশ নিয়েছে। এমন অভিযোগে এ পর্যন্ত ১৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তা ও প্রশাসনের দাবি, তাদের কঠোর হস্তক্ষেপের কারণে এলাকার অবস্থা স্বাভাবিক রাখা সম্ভব হয়েছে। ঘটেনি কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা। দেশের এ ক্রান্তিলগ্নে তারা স্থানীয় সরকার দলীয় নেতাকর্মীদের পাশে পাননি।
পুলিশ আরো জানায়, যখনই কোনো জামায়াত ও বিএনপি নেতাকে আটক করা হয় তখনই তাদের ছাড়িয়ে নিতে তদবির করে সরকার দলীয় জনপ্রতিনধি কিংবা দলের দায়িত্বশীল পদে থাকা নেতারা। অথচ আন্দোলন চলাকালে এসব নেতারা ছিলেন আড়ালে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সরকার বিরোধী আন্দোলনে মানিকগঞ্জ ও সাভারে নাশকাতাকান্ডে গ্রেফতার হওয়া বিএনপির একাধিক নেতাকর্মীর পক্ষে তদবির করায় জনৈক আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।
এ দিকে, কারফিউ জারির পর থেকে আন্দোলন শিথিল রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বিএনপি-জামায়াতের নেকাকর্মীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রেখেছে। গ্রেফতার আতঙ্কে তারা এলাকা ছাড়া।
সংশ্লিষ্ট পরিবারের লোকজনের অভিযোগ, সিংগাইর থানা এলাকায় কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। তারপরও তাদের প্রতিনিয়ত হয়রানি করা হচ্ছে। এমন অভিযান বন্ধে জোর দাবি ভুক্তভোগীদের।
উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান মাহাবুবুর রহমান মিঠু বলেন, বিএনপি কোনো আন্দোলন করেনি এবং আমাদের কাছে কোনো নির্দেশনাও ছিল না। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে কতিপয় ছাত্রদল নেতা অংশ নিতে পারে স্বীকার করে বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। এ হয়রানি বন্ধের দাবিও জানান তিনি।
সিংগাইর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: জিয়ারুল ইসলাম বলেন, পুলিশ সুপার ও এএসপি সিংগাইর সার্কেল মহোদয়ের দিক-নির্দেশনায় পুলিশ সদস্যদের সার্বক্ষনিক তৎপরতায় থানা এলাকার সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তারা সকলেই আন্দোলনের নামে সাভার ও মানিকগঞ্জের নাশকতাকান্ডে জড়িত। গ্রেফতারকৃতদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনের ভিডিও ফুটেজে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।