কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক : রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে বেকারিতে নৃশংস জঙ্গি হামলার ৮ বছর আজ। হাইকোর্টের রায়ের পর ৮ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো তা প্রকাশ হয়নি। রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা বলছেন, পূর্ণাঙ্গ রায় হাতে পাওয়ার পর ফাঁসির দণ্ড থেকে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্তদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। কারাগারে রয়েছেন আরও ৮ জন।
নৃশংস ওই হামলার ঘটনায় করা মামলায় ২০১৯ সালের ৭ ডিসেম্বর ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল ৭ জঙ্গিকে মৃত্যুদণ্ড ও একজনকে খালাস দেন। পরে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন আসামিরা। গেল বছর অক্টোবরে ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানি শেষে বিচারপতি সহিদুল করিমের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ ৭ জঙ্গির মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেন। কিন্তু এখনো প্রকাশ হয়নি সেই পূর্ণাঙ্গ রায়।
রোববার অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, এ আসামিদের জন্য—যারা ধর্মের নামে, উগ্রবাদিতার নামে নিরপরাধ দেশি-বিদেশি মানুষদের হত্যা করেছিল তাদের জন্য মৃত্যুদণ্ডই যথার্থ ছিল। কিন্তু কী কারণে হাইকোর্ট বিভাগ তাদের আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন তা পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি পেলে জানতে পারবো এবং রাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট বিভাগকে জানাবো। এরপর আপিল করা হবে কি না, নির্দেশনা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা চালিয়ে বিদেশি নাগরিকসহ ২০ জনকে হত্যা করেন নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন নব্য জেএমবির (আত্মঘাতী) সদস্যরা। বিদেশিদের মধ্যে ছিলেন ৯ ইতালীয়, ৭ জাপানি, ১ ভারতীয়, ১ বাংলাদেশি-আমেরিকান দ্বৈত নাগরিক। এ ঘটনায় সন্ত্রাসীদের ছোড়া গ্রেনেডের আঘাতে প্রাণ হারান বনানী থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাউদ্দিন আহমেদ ও সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) রবিউল ইসলাম।
হামলার পর জিম্মিদশার অবসানে সেনাবাহিনীর কমান্ডো অভিযানে নিহত হন পাঁচ জঙ্গি। তারা হলেন- মীর সামেহ মোবাশ্বের, রোহান ইবনে ইমতিয়াজ ওরফে মামুন, নিবরাস ইসলাম, খায়রুল ইসলাম পায়েল ও শফিকুল ইসলাম উজ্জ্বল। এ ছাড়া বিভিন্ন সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানের সময় নিহত হয়েছেন নব্য জেএমবির আরও আট সদস্য।
ওই ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গুলশান থানায় একটি মামলা করেন ওই থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রিপন কুমার দাস। পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের পরিদর্শক হুমায়ুন কবির মামলাটি তদন্ত করে ২০১৮ সালের ১ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন।
২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান একজনকে খালাস দিয়ে সাতজনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে রাজীব গান্ধী, আসলাম হোসেন ওরফে র্যাশ, আব্দুস সবুর খান, রাকিবুল হাসান রিগ্যান, হাদিসুর রহমান, শরিফুল ইসলাম ওরফে খালেদ ও মামুনুর রশিদ। খালাস পান মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান।