তিমির বনিক, স্টাফ রিপোর্টার: মৌলভীবাজারে বানবাসীরা খাদ্য সংকটে মৌলভীবাজারে গত দুইদিন ভারী বৃষ্টিপাত না হওয়ায় জেলার সাত উপজেলার তিন লক্ষাধিক বানবাসী মানবেতর জীবনযাপন করছেন। অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্রে উঠলেও অধিকাংশ বানবাসীরা খাদ্য সংকটে বিপাকে পড়েছেন। কোথাও সামান্য ত্রাণ পৌঁছালেও বরাদ্দ রয়েছে অপ্রতুল। মানুষের সঙ্গে বিপাকে পড়েছে গবাদিপশুও।
মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, জেলার ৪৯টি ইউনিয়নে ৩ লাখ ৫১ হাজার ১২২ জন মানুষ পানিবন্দি আছেন। ২০৫টি আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে, এখানে ৬৩ হাজার ২৫০ পরিবার আশ্রয় নিয়েছেন।
এদিকে, গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত থাকার পর জেলার বন্যাকবলিত এলাকার উঁচু স্থানগুলো থেকে পানি নামতে শুরু করেছে। পানি যত কমছে, ক্ষয়ক্ষতির চিত্র ততই ভেসে উঠছে।
জানা গেছে, জেলার রাজনগর, কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলার হাকালুকি হাওর তীরের গ্রামগুলোর পানিবন্দি মানুষরা আশ্রয়কেন্দ্রে গেলেও সেখানে পড়তে হচ্ছে ভোগান্তিতে। সরকারিভাবে পর্যাপ্ত শুকনো খাবার পাওয়া যায়নি। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে এরই মধ্যে পর্যাপ্ত খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। এতে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা।
জানা যায়, এখনও যাদের বসতবাড়ি পানিতে তারা নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে কেউ ছুঠছেন স্বজনের বাড়ি আবার কেউ ছুটছেন আশ্রয়কেন্দ্রে। তবে অনেক আশ্রয়কেন্দ্রে এখনো পর্যাপ্ত ত্রাণ পৌঁছায়নি। তাই শুকনো চিড়া-মুড়ি দিয়েই আহার নিবারণের চেষ্টা করছেন। পাশাপাশি মানুষের সঙ্গে বিপাকে পড়েছে গবাদিপশুও।
সিলেটে স্বস্তি, উত্তরাঞ্চলে বন্যার অবনতির শঙ্কা বড়লেখা উপজেলার তালিমপুর এলাকা আজিম উদ্দিন বলেন, আমার তিনটি গরু ও দুইটি ছাগল নিয়ে অনেক কষ্ট আছি। চারদিকে পানি। আমরা খাবার খাচ্ছি, কিন্তু পশুদের খাবার সংগ্রহে করেতে পারছিনা।
সদর উপজেলার খলিলপুর ইউনিয়নের জমসেদ মিয়া বলেন, বন্যায় বন্ধ হয়ে গেছে কাজ। তাই ঘরে নেই খাবার। কাজে যেতে পারিনি। সরকারি কোনো ত্রাণও আসেনি। আমাদের খুব কষ্টে দিন যাচ্ছে।
রাজনগর উপজেলার একটি আশ্রয়কেন্দ্রে তিনদিন ধরে আছেন সুলতানা বেগম। তিনি জানান, প্রথমদিন সরকারি ত্রাণ পেলেও এখন আমরা খাদ্যের অভাবে পড়েছি।
সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার নাসরিন চৌধুরী বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুকনো খাবার বিতরণ করা হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক ড. উর্মি বিনতে সালাম জানান, জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি মনিটরিংয়ে রয়েছে। পানিবন্দি এলাকার মানুষেদের শুকনো খাবার ও চাল দেওয়া হচ্ছে। সরকারি কোষাগার থেকে ক্রমান্বয়ে ত্রান আসা বৃদ্ধি পাবে আশা করি।