কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক : দেশের সবচেয়ে বড় সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র তিস্তা সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার (২ আগস্ট) দুপুরে রংপুর জিলা স্কুল মাঠের সমাবেশ থেকে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে বেক্সিমকো পাওয়ার নির্মিত দুইশ মেগাওয়াটের এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে বিকালে রংপুর থেকে ঢাকা ফেরার পথে হেলিকপ্টারের জানালা দিয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি তিনি এক ঝলক দেখেও নেন।
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় অনাবাদি চরের সাড়ে ছয়শ একর জমিতে গড়ে উঠেছে দেশের সবচেয়ে বড় ও এশিয়ার অন্যতম বড় সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র। তিস্তা সোলার লিমিটেড নামের এই কেন্দ্রটি গড়ে তুলেছে বেক্সিমকোর গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো পাওয়ার লিমিটেড।
তিস্তা পাড়ের লাটশালা এলাকায় বিশাল এই কেন্দ্রটির নির্মাণ শুরু হয় ২০১৭ সালে। বসানো হয় সাড়ে পাঁচ লাখ সোলার প্যানেল। উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করতে সুন্দরগঞ্জের তিস্তা পাড় থেকে রংপুর পর্যন্ত নির্মাণ করা হয়েছে ১২২টি টাওয়ারের ১৩২ কিলো ভোল্টের ৩৫ কিলোমিটার বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন। নির্মাণ করা হয়েছে সাবস্টেশন, বসানো হয়েছে ইনভার্টারসহ সব ধরনের যন্ত্র। গত ডিসেম্বর থেকে পরীক্ষামূলকভাবে জাতীয় গ্রিডে উৎপাদিত বিদ্যুৎ যুক্ত হচ্ছে। এ কেন্দ্র থেকে দিনে দু’শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যোগ হবে।
বন্যা, নদী ভাঙনের মতো প্রাকৃতিক দূর্যোগ থেকে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি রক্ষায় নির্মাণ করা হয়েছে বাঁধ ও চলাচলের জন্য সাত কিলোমিটার সড়ক। যার সুবিধা পাচ্ছেন স্থানীয়রা।
রংপুর সফরে এসে উত্তরের মানুষে জীবনমান উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি পূরনের অংশ হিসেবে এই বিদ্যুতকেন্দ্র উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রকল্পটি নিয়ে বেক্সিমকো পাওয়ার লিমিটেড এর চেয়ারম্যান শায়ান এফ রহমান বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর একটা রোডম্যাপ আছে গ্লোবাল ওয়ার্মিং নিয়ে, পরিবেশ রক্ষা নিয়ে। সরকার এটা নিয়ে অনেক কাজ করছে। বেক্সিমকো অনেক খাতে পাইওনিয়ার। আমরা মনে করি, এই রিনিউয়াবল এনার্জি সেক্টর ভবিষ্যত জ্বালানির জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ হবে। তাই আমরা এখাতে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেই।
এই প্রকল্পটি শতভাগ বেক্সিমকো পাওয়ার লিমিটেডের মালিকায় উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, এই প্রকল্পে অর্থায়নে আমরা দেশে প্রথম সুকুক বন্ড চালু করি। এ প্রকল্পে আমাদের প্রায় ৩০০ মিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছে। ভবিষ্যতে আমরা সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী আরো সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের চিন্তা করছি।
এই প্রকল্প উত্তরবঙ্গে বিদ্যুৎ সরবরাহ বাড়ার পাশাপাশি ব্যবসা বাণিজ্যের সহায়ক পরিবেশ তৈরিতেও ভূমিকা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতেও অবদান রাখবে বলে মনে করেন শায়ান এফ রহমান৷
বিশ্বব্যাপি পরিবেশ রক্ষায় সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনে জোর দেয়া হচ্ছে। উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ও জ্বালানি আমদানি কমাতে সরকারও এখাতে জোর দিয়েছে। যার গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার বেক্সিমকো। উত্তরবঙ্গে আরও একটি সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাস্তবায়ন করছে দেশের শীর্ষ এই শিল্পগ্রুপ।