গাজীপুর প্রতিনিধি : আওয়ামী লীগ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার হবার পর এবার গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে তালাক দিয়েছেন তার স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা জয়ী।
সোমবার (১৫ মে) সন্ধ্যায় তালাকের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর গাজীপুরে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
জানা গেছে, গত ৩০ এপ্রিল জাহাঙ্গীর আলম বরাবর তালাকের নোটিশ পাঠান তার স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা জয়ী।
নোটিশে বলা হয়, ২০১১ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি মিরপুরের বাসিন্দা কাজী ইকবাল বাহার ও মিসেস ফরিদা ইকবালের মেয়ে কাজী রাজিয়া সুলতানা জয়ীর সঙ্গে গাজীপুরের মিজানুর রহমান ও জায়েদা খাতুনের ছেলে জাহাঙ্গীর আলমের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে জাহাঙ্গীর আলম স্ত্রীকে মানসিক নির্যাতন ও অত্যাচার করায়, নিয়মিত ভরণপোষণ না দেওয়ায়, সংসার জীবনে অশান্তি শুরু হয়। এসব অভিযোগের কারণে জয়ী ১৮ নম্বর ধারা অনুযায়ী জাহাঙ্গীর আলমকে তালাকের নোটিশ দেন।
১৯৬১ইং সালের মুসলিম পারিবারিক আইন ৮-নং অধ্যাদেশ, ৫২-নং আইনের ৭(১) ধারা মতে আপনাকে উক্ত মর্মে অবহিত করানো হইল। যথা সময়ে আমাদের উভয়ের মাঝে পরিস্থিতির উন্নতি না হইলে ৯০ দিন পর চুড়ান্ত ভাবে তালাক কার্যকর হবে।
একটি সূত্রে জানায়, বিবাহের পর থেকেই জাহাঙ্গীর আলম নানা ভাবে তাঁর স্ত্রীকে জ্বালাযন্ত্রণা করে আসছিল। নিয়মিত স্ত্রীকে সময় দিতো না সে। ফলে দীর্ঘদিন স্ত্রী জয়া স্বামী ছেড়ে মিরপুর বাবার বাসায় থাকতেন। এছাড়াও একাধিক নারীর সঙ্গে অবৈধভবে সম্পর্ক ছিল সাবেক ওই বহিস্কৃত মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে। জানা গেছে, এক নারী শিক্ষিকাকে তাঁর ব্যক্তিগত লোক দ্বারা কুপ্রস্তাব দেয়া হয়। পরে ওই নারী তাঁর কুপ্রস্তাবে রাজি না হলে তাঁকে বিভিন্নভাবে হুমকী দেয়া হতো। এ নিয়ে ওই নারী শিক্ষিকা জাহাঙ্গী আলমের মধ্যকার আলাপও ফেসবুকে ভাইরাল হয়।
মিরপুর কাজী অফিস বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, মির শাহ আলী কাজী অফিস থেকে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
এব্যাপারে জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়েছে, তবে কোন ভাবেই পাওয়া যায়নি মা জায়েদা খাতুনের নির্বাচন নিয়ে সে ব্যস্তা।
এর আগে, সোমবার (১৫ মে) বিকেলে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমকে স্থায়ীভাবে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এর আগে, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে জাহাঙ্গীর ২০২১ সালের নভেম্বরে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার ও গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ হারিয়েছিলেন। পরবর্তীতে দলের ২২তম সম্মেলনে নিজ আবেদনের প্রেক্ষিতে তাকে ক্ষমা করা হয়েছিল।