নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের প্রধান শেয়ার বাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ এ তালিকাভুক্ত চামড়া-শিল্প খাতের অন্তর্ভুক্ত লিগ্যাসি ফুটওয়ার লিমিটেড। কোম্পানিটির অনিয়মই নিয়ম হয়ে দাড়িয়েছে প্রতিনিয়ত। কোম্পানির ওয়েব সাইটে আর্থিক বিবরনী থাকলেও কোম্পানির বোর্ড অফ ডিরেক্টরের বিস্তারিত কোন তথ্য দেওয়া নেই। শুধু নাম প্রকাশ করেই দায় সেড়েছে বোর্ড।
কোম্পানি পর্যবেক্ষনে জানা গেছে, কোম্পানিটির তিন জন স্বতন্ত্র পরিচালকের মধ্যে দুজন কর্পোরেট গভর্ন্যান্স কোডের কোন ভিত্তিতে স্বাধীন পরিচালক হিসেবে নিযুক্ত আছেন, এ সম্পর্কে তাদের ওয়েবসাইট কিংবা প্রকাশিত বার্ষিক প্রতিবেদনেও বিস্তারিত উল্লেখ করেনি।
কোম্পানির বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন কোম্পানি সেক্রেটারি দ্বারা স্বাক্ষরিত থাকলেও, ডিএসইর কোম্পানি প্রোফাইলে, কোম্পানি সেক্রেটারির কোন তথ্য দেওয়া নেই। আদৌ প্রতিষ্ঠানটির কোম্পানি সেক্রেটারি আছে কিনা এ বিষয়ে সংশয় থেকেই যায়।
এ সকল বিষয়ে জানতে, কোম্পানির টেলিফোন নাম্বারে ফোন করে কোম্পানি সেক্রেটারির সাথে যোগাযোগ করতে চাইলে তাকে পাওয়া যায়নি। কোম্পানির এমডিকে ফোনে একাধিক বার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
কোম্পানিটি কোন প্রকার বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ ছাড়াই এজিএম করে যাচ্ছে বিগত তিন বছর। কোন প্রকার পিএসই, ১ম, ২য় ও ৩য় প্রান্তিক এবং সাধারন সভার আগে নোটিশ প্রকাশ ছাড়াই এজিএম করে আসছিলো কোম্পানিটি। এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর তড়িঘড়ি করে কোম্পানিটির ওয়েবসাইট আপডেট করে বিগত কয়েক বছরের বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
২০১৮ সালের ২০ জুন বিএসইসি কর্তৃক ডিসক্লোজার সংক্রান্ত নটিফিকেশন এর ৯ এর ১ নং অনুচ্ছেদে স্পষ্ট বলা আছে যে, পুঁজিবাজারে বিসিইসির তালিকা ভুক্ত সকল কোম্পানিকে এজিএম এর নূন্যতম ১৪ দিন পূর্বে বাধ্যতামুলক তাদের বার্ষিক প্রতিবেদনের সফট কপি কোম্পানির শেয়ার হোল্ডারদের কাছে ইমেইলে পাঠাতে হবে। এবং ৯ এর ২ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে প্রতিটি কোম্পানিকে এজিএম এর ১৪ দিন আগে বার্ষিক প্রতিবেদন কোম্পানি ওয়েবসাইটে প্রকাশের করে সেই তথ্য দৈনিক বাংলা ও ইংরেজি পত্রিকা এবং অনলাইন নিউজ পোর্টালে নোটিশ প্রকাশ করে সাধারন বিনিয়োগকারিদের জানাতে হবে। যার কোনটাই করেনি লিগ্যাসি ফুটওয়ার।
এদিকে কর্পোরেট গভর্ন্যান্স কম্প্লায়েন্স সার্টিফিকেট ছাড়াই ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিলো লিগ্যাসি ফুটওয়্যার লিমিটেড। জানা যায়, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিদর্শনে কোম্পানিটির কারখানা বন্ধ পাওয়া যায়।
ডিএসই তথ্য মতে কোম্পানিটির চলতি বছরের প্রকাশিত অনিরিক্ষিত ১ম প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদনে দেখা যায় ১ম প্রান্তিকে (জুলাই২১-সেপ্টেম্বর২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি ইপিএস দাঁড়ায় ০.০৫ টাকা। একই সময়ে আগের বছর কোম্পানিটির ইপিএস ছিলো ০.০৬ টাকা। ১ম প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট ওপারেটিং ক্যাশ ফ্লো কমেছে ০.৪১ টাকা যা একই সময়ে আগের বছর ছিলো ১.৮৫ টাকা। ১ম প্রান্তিক (৩০ সেপ্টেম্বর) শেষে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য দাঁড়ায় ১০.৮৮ টাকা।
কোম্পানিটির মোট শেয়ার ১ কোটি ৩০ লক্ষ ৭৯ হাজার টাকা ৯৮০ টি। তারমধ্যে ৩০ শতাংশ উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ১০.৭৫ শতাংশ এবং বাকি ৫৯.২৫ শতাংশ শেয়ার সাধারন বিনিয়োগ কারিদের হাতে। কোম্পানিটি ২০০০ সালে পুঁজিবাজারে হয়ে মার্কেটের বি ক্যাটাগরিতে অবস্থান করছে।