November 22, 2024 - 6:26 pm
তথ‌্য অ‌ধিদপ্ত‌রের নিবন্ধন নম্বরঃ ৭৭
Homeজানা অজানাবিশ্বের ১০ ভয়াবহ ভূমিকম্প

বিশ্বের ১০ ভয়াবহ ভূমিকম্প

spot_img

অনলাইন ডেস্ক : তুরস্ক ও সিরিয়া সীমান্তবর্তী এলাকায় আঘাত হানা ৭.৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। তুরস্ক-সিরিয়ায় ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত ২৩ হাজার ৭০০ ছাড়িয়েছে।

ভূমিকম্পটি তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের গাজিয়ানটেপে সিরিয়া সীমান্তের কাছে আঘাত হানে। গত এক শতাব্দীর মধ্যে এটি ছিল সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্পের একটি। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৮ ভাগ।

তবে এর আগেও বেশকিছু বড় ধরণের ভূমিকম্প দেখেছে বিশ্ব। মাত্রার বিচারে বিশ্বের শীর্ষ ১০ ভূমিকম্প নিয়ে এ প্রতিবেদন:

১. চিলি, ২২ মে ১৯৬০: মাত্রা—৯ দশমিক ৫
এটাকেই এখন পর্যন্ত বলা হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মাত্রার ভূমিকম্প। রিখটার স্কেলে ৯ দশমিক ৫ মাত্রার এই ভূমিকম্পে চিলিতে মারা গিয়েছিল চার হাজার ৪৮৫ মানুষ। আহত হয়েছিল ২০ লাখের বেশি। ১৯৬০ সালে লাতিন আমেরিকার দেশ চিলির দক্ষিণাঞ্চলে এই শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল। এই ভূমিকম্পে পুয়ের্তো সাভেদ্রা নামে একটি সমুদ্রবন্দর পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। এই ভূমিকম্পের ফলে সাগরে সুনামির সৃষ্টি হয়। সুনামিতে সৃষ্ট ঢেউয়ের কবলে পড়ে ফিলিপাইন ও জাপানে মারা গিয়েছিল আরো ১৭০ জন।

২. প্রিন্স উইলিয়াম সাউন্ড, আলাস্কা, ২৪ মার্চ ১৯৬৪: মাত্রা—৯ দশমিক ২
এই ভূমিকম্পের ফলে আলাস্কায় ভয়ংকর ভূমিধসের সৃষ্টি হয়েছিল। এতে সাগরে সুনামিরও সৃষ্টি হয়। মৃতের সংখ্যা ছিল ১২৮ জন আর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ছিল ৩১ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার।

৩. উত্তর সুমাত্রার পশ্চিম উপকূল, ২৬ ডিসেম্বর ২০০৪: মাত্রা—৯ দশমিক ১
ভূমিকম্পের সঙ্গে সমুদ্রপৃষ্ঠের পানির উচ্চতা বেড়ে যাওয়ার একটা সম্পর্ক রয়েছে, এটাই সুনামি নামে পরিচিত। পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতী সুনামি বলা হয় ২০০৪ সালে, একটি ৯ দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকম্পের পর। এশিয়া ও পূর্ব আফ্রিকার ১৪টি দেশে অনুভূত হয়েছিল এই ভূমিকম্প ও সুনামি। এই সুনামিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল ইন্দোনেশিয়া; এক লাখ ৭০ হাজার মানুষ এতে প্রাণ হারায়। অনেক মৃতদেহই উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। মৃতের সংখ্যা নিরূপণ করতে কয়েক মাস সময় লেগে যায়। ইন্দোনেশিয়ার মৎস্য শিল্প ও কারখানার প্রায় ৬০ শতাংশ পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায় এই সুনামিতে।

৪. কামচাটকা, ৪ নভেম্বর ১৯৫২: মাত্রা—৯
রাশিয়ার দূরপ্রাচ্যে আঘাত হেনেছিল শক্তিশালী এই ভূমিকম্প। এর ফলে প্রশান্ত মহাসাগরে সৃষ্টি হয়েছিল সুনামি। কামচাটকা উপদ্বীপ ছিল এই ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল। তিন হাজার মাইলজুড়ে অনুভূত হয়েছিল এই ভূকম্পন, যা রাশিয়ার দূরপ্রাচ্য ও হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জে অনুভূত হয়েছিল। তবে এই ভূমিকম্পে হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। পেরু ও চিলিতেও আঘাত হেনেছিল এই ভূমিকম্প।

৫. আরিকা, পেরু (বর্তমান চিলি), ১৩ আগস্ট ১৮৬৮: মাত্রা—৯
প্রশান্ত মহাসাগরে সৃষ্ট এই ভূকম্পন হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জ পর্যন্ত অনুভূত হয়েছিল। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল দক্ষিণ আমেরিকার আরেকুইপা শহর। সেখানে মারা যায় ২৫ হাজার মানুষ। বলিভিয়ার লা পাজ শহরেও অনুভূত হয়েছিল ভূকম্পন। প্রথম আঘাত হানার চার ঘণ্টা পর ভূমিকম্পটির আফটার শক আঘাত হানে সমুদ্রে। এতে ১৬ মিটার উঁচু ঢেউ আছড়ে পড়েছিল সৈকতে।

৬. লিসবন, ১ নভেম্বর ১৭৫৫: মাত্রা—৮ দশমিক ৭
পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে আঘাত হানা শক্তিশালী এই ভূমিকম্পে শহরের প্রায় অর্ধেক মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল। ভূকম্পনের ফলে সৃষ্ট সুনামি এবং অগ্নিকাণ্ড পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ করে তোলে। উত্তর আমেরিকা, ফ্রান্স ও উত্তর ইতালিতে অনুভূত হয়েছিল এই ভূমিকম্প।

৭. যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূল, ২৬ জানুয়ারি ১৭০০: মাত্রা—৯ (আনুমানিক)
অনেক আগের এই ভূমিকম্পের কোনো দালিলিক প্রমাণ না থাকলেও উত্তর আমেরিকার বাসিন্দারা মুখে মুখে শুনেছেন এই ভূমিকম্প এবং তার ক্ষয়ক্ষতির কথা। উত্তর আমেরিকা মহাদেশের অন্যতম ভয়াবহ ভূমিকম্প মনে করা হয় এটিকে। ভ্যাঙ্কুভার দ্বীপের পাচেনা উপকূলে বসবাস করা জনগোষ্ঠী সুনামিতে সৃষ্ট ঢেউয়ের কারণে তলিয়ে গিয়েছিল।

৮. ইকুয়েডরের উপকূল, ১৩ জানুয়ারি ১৯০৬: মাত্রা—৮ দশমিক ৮
ইকুয়েডর ও কলম্বিয়ার সমুদ্র উপকূলে সৃষ্ট এই সুনামিতে মারা যায় পাঁচ শতাধিক মানুষ। আহত হয় আরো দেড় হাজার। মধ্য আমেরিকা ও সানফ্রান্সিসকোতেও অনুভূত হয় এই ভূমিকম্প। ভূমিকম্পের প্রভাবে হাওয়াইয়ের নদীগুলো প্লাবিত হয়ে বন্যার সৃষ্টি হয়েছিল।

৯. আসাম-তিব্বত, ১৫ আগস্ট ১৯৫০: মাত্রা—৮ দশমিক ৬
ভয়াবহ এই ভূমিকম্পে আসাম-তিব্বতের ৭০টি গ্রাম নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ভারতের আসাম প্রদেশ। এতে মারা যায় ১ হাজার ৫২৬ জন মানুষ। ভূমিকম্পের পরে ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়।

১০. চিলি, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১০: মাত্রা—৮ দশমিক ৮
সপ্তদশ শতক থেকেই চিলিতে ছোট-বড় ভূমিকম্প অনুভূত হয়ে আসছে। ২০১০ সালের এই ভূমিকম্পে প্রাণ হারান ৫২১ জন মানুষ। আহত হন অন্তত ১২ হাজার। আট লাখ মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েন।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন
spot_img

সর্বশেষ সংবাদ

২ কোম্পানির বোর্ড সভার তারিখ ঘোষণা

নিজস্ব প্রতিবেদক : পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ২ কোম্পানির বোর্ড সভার তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। কোম্পানি ২টি হলো-গ্লোবাল...

জেড ক্যাটাগরিতে গ্লোবাল হেভি কেমিক্যালস

নিজস্ব প্রতিবেদক : পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি গ্লোবাল হেভি কেমিক্যালস লিমিটেডের ক্যাটাগরি পরিবর্তন করা হয়েছে। কোম্পানিটিকে ‘বি’ ক্যাটাগরি থেকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। ঢাকা স্টক...

পুঁজিবাজারের ২ কোম্পানির এজিএমের তারিখ পরিবর্তন

নিজস্ব প্রতিবেদক : পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি নাহি অ্যালুমিনিয়াম কম্পোজিট প্যানেল লিমিটেড ও বিবিএস কেবলস পিএলসির বার্ষিক সাধারণ সভার (এজিএম) তারিখ পরিবর্তন করেছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ...

শরীয়াহ পরিপালনে ইউনিয়ন ব্যাংক বদ্ধপরিকর

কর্পোরেট ডেস্ক : ইসলামী ব্যাংকিং এমন এক ব্যাংক ব্যবস্থা যেখানে সকল লেনদেনে সুদ নিষিদ্ধ।ব্যাংকিং সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম ইসলামী শরীয়ার আলোকে পরিচালিত হয়। ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসি....

সাউথইস্ট ব্যাংক, টাইনি টটস ও সামার ফিল্ড স্কুলের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর

কর্পোরেট ডেস্ক : সাউথইস্ট ব্যাংক পিএলসি. টিউশন ফি কালেকশন সার্ভিস, পে-রোল ব্যাংকিং এবং অন্যান্য ব্যাংকিং পরিষেবা প্রদানের জন্য ব্যাংকের হেড অফিসে টাইনি টটস ও...

বরগুনায় প্রান্তিক মানুষের মাঝে এনআরবিসি ব্যাংকের ঋণ বিতরণ

কর্পোরেট ডেস্ক : বরগুনা জেলার বিভিন্ন শ্রেণি পেশার নিন্ম আয়ের প্রান্তিক মানুষদের মাঝে প্রকাশ্যে ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পুন:অর্থায়ন তহবিল কর্মসূচির আওতায়...