স্পোর্টস ডেস্ক : প্রথম দুই ম্যাচ জিতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নবম আসরের সুপার এইটের পথ অনেকটাই সহজ করে ফেলেছে দু’বার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ। নিজেদের তৃতীয় ম্যাচ জিতলেই গ্রুপ ‘সি’ থেকে প্রথম দল হিসেবে সুপার এইটের টিকিট নিশ্চিত হবে ক্যারিবিয়দের। তাই টানা তৃতীয় জয়ের লক্ষ্য নিয়ে আগামী ১৩ জুন (বাংলাদেশ সময় ভোর ৬টা ৩০ মিনিট) ত্রিনিদাদের ব্রায়ান লারা স্টেডিয়ামে নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অন্য দিকে হার দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপে প্রথম জয় পেতে মরিয়া কিউইরা।
দ্বিতীয়বারের মত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলতে নামা পাপুয়া নিউ গিনির বিপক্ষে ৫ উইকেটের জয় দিয়ে তৃতীয় শিরোপা জয়ের মিশন শুরু করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পরের ম্যাচে বিশ্বকাপে প্রথম খেলতে নামা উগান্ডাকে উড়িয়ে দেয় ক্যারিবীয়রা।
বাঁ-হাতি স্পিনার আকিল হোসেনের ঘূর্ণিতে উগান্ডাকে ১৩৪ রানে বড় ব্যবধানে হারিয়ে রেকর্ড জয়ের নজির গড়েছিলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ। নিজেদের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জয়ের নজির গড়ে ক্যারিবীয়রা।
ঐ ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে ৫ উইকেটে ১৭৩ রান করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। জবাবে আকিলের ঘূর্ণিতে ১২ ওভারে মাত্র ৩৯ রানে অলআউট হয় উগান্ডা। ১১ রানে ৫ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা হন আকিল।
প্রথম দুই ম্যাচ জিতে ৪ পয়েন্ট নিয়েও রান রেটে পিছিয়ে টেবিলের দ্বিতীয়স্থানে আছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে রান রেটে এগিয়ে টেবিলের শীর্ষে আফগানিস্তান। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জিতলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পয়েন্ট হবে ৬। তখন আফগানিস্তান বাদে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পয়েন্ট স্পর্শ করার কোন সুযোগ থাকবে না গ্রুপের অন্য তিন দল- উগান্ডা, পাপুয়া নিউ গিনি ও নিউজিল্যান্ডের। কারন উগান্ডা ৩ ম্যাচে ২ পয়েন্ট, পাপুয়া নিউ গিনির ২ ম্যাচে শূণ্য এবং নিউজিল্যান্ডের হবে ২ ম্যাচে শূণ্য পয়েন্ট হবে (যদি ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হারে)।
তবে নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরে গেলে নিজেদের শেষ ম্যাচ ও গ্রুপের অন্য ম্যাচের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। কিন্তু তৃতীয় ম্যাচ জিতেই সুপার এইট নিশ্চিত করতে চায় ক্যারিবীয়রা। দলের ওপেনার ব্রান্ডন কিং বলেন, ‘জয়ের ধারা অব্যাহত রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এতে দলের সবার মনোবল চাঙ্গা থাকে। আমরা তৃতীয় ম্যাচেও জয় চাই। এই ম্যাচ জিতলে, সুপার এইটও নিশ্চিত হবে আমাদের। তাই এই সুযোগ হাতছাড়া করতে চাই না। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয় দিয়ে সবার আগে সুপার এইট নিশ্চিত করতে চাই।’
অন্যদিকে, বিশ্বকাপের শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি নিউজিল্যান্ডের। আফগানিস্তানের কাছে খুবই বাজেভাবে হেরেছে কিউইরা। গায়ানায় অনুষ্ঠিত ঐ ম্যাচে ৮৪ রানের ব্যবধানে হারে নিউজিল্যান্ড। বিশ্বকাপে সবচেয়ে বড় ব্যবধানে ও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আফগানিস্তানের কাছে প্রথমবারের মত হারের হারের লজ্জা পায় কিউইরা।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচের শুরুতে চাপে পড়ে যায় নিউজিল্যান্ড। টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতে ১৪ দশমিক ৩ ওভারে ১০৩ রান তুলে ফেলে আফগানরা। কিন্তু পরের দিকে নিউজিল্যান্ড বোলারদের নৈপুন্যে ১৫৯ রানে আটকে যায় আফগানিস্তান। নিউজিল্যান্ডের ট্রেন্ট বোল্ট ও ম্যাট হেনরি ২টি করে উইকেট নেন।
এরপর ব্যাট হাতে নেমে আফগানিস্তানের বোলারদের সামনে অসহায় আত্মসমর্পন করে নিউজিল্যান্ড। ২৮ বল বাকী থাকতে ৭৫ রানে গুটিয়ে যায় তারা। দলের হয়ে গ্লেন ফিলিপস ১৮ ও হেনরি ১২ রান করেন। আফগানিস্তানের ফজল হক ফারুকি ও অধিনায়ক রশিদ খান ৪টি করে উইকেট নেন।
আফগানিস্তানের কাছে হারের ধাক্কা ভুলে ঘুড়ে দাঁড়াতে চায় নিউজিল্যান্ড। দলের প্রধান কোচ গ্যারি স্টিড বলেন, ‘প্রথম ম্যাচে আমরা খুবই বাজে ক্রিকেট খেলেছি। আমরা এ ধরণের ক্রিকেট খেলার মত দল নই। আমাদের দল অনেক বেশি ভারসাম্যপূর্ণ ও দক্ষতা সম্পন্ন। পরের ম্যাচেই আমরা ঘুড়ে দাঁড়াতে বদ্ধ পরিকর। ওয়েস্ট ইন্ডিজ নিজেদের কন্ডিশনে শক্তিশালী প্রতিপক্ষ। কিন্তু আমাদের এ ম্যাচে জয় পাওয়া অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ব্যাটিং-বোলিংয়ে সেরা পারফরমেন্স দিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারাতে হবে।’
টি-টোয়েন্টিতে এখন পর্যন্ত ১৯বার মুখোমুখি হয়েছে নিউজিল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এর মধ্যে জয়ের পাল্লা ভারী নিউজিল্যান্ডের। ১০ ম্যাচে জিতেছে কিউইরা। ৪ ম্যাচে জয় পেয়েছে ক্যারিবীয়রা। এছাড়া ৩টি ম্যাচ টাই ও ২টি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়। ৩টি টাইর মধ্যে দু’টিতে সুপার ওভারে জিতেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অন্য টাই ম্যাচটি ২০০৬ সালে হয়েছিলো। ঐ সময় সুপার ওভারের প্রচলন ছিলো না।