মোস্তফা,নরসিংদী প্রতিনিধি: শহীদ আসাদের আত্মদান এতটাই ভারী ছিল যে তার পথ ধরে চূর্ণ হয়ে গিয়েছিল স্বৈরশাসকের দীর্ঘদিনের সাজানো মসনদ। তার রক্তের পথ বেয়েই ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান বলে মন্তব্য করে বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, দু:খজনক হলেও সত্য যে ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানের নায়ক শহীদ আসাদ আজ অবহেলিত।
শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) যাদু মিয়া মিলনঅয়তনে শহীদ আসাদ দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ আয়োজিত স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ১৯৯১ সালে ঢামেকের মূল ফটকের বাইরে ডাকসু ও শহীদ আসাদ পরিষদের যৌথ উদ্যোগে ‘আসাদের শার্ট’ নামে একটি ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়। পরে ঝড়ে এটি ভেঙে গেলেও নতুন করে সেটি আর স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এর মধ্যে সরকার বদল হয়েছে। বর্তমান সরকারও ক্ষমতায় আছে দীর্ঘ সময়। তারপরও চতুর্ভুজ আকারের এ স্তম্ভটির চারদিকে থাকে পানের পিক ছিটানো। পেছনে মাটির বিশাল স্তূপ, সঙ্গে আবর্জনা ও ময়লা পানি।
ন্যাপ মহাসচিব আরো বলেন, ১৯৬৯ সালে প্রতিবাদের ক্ষুদ্ধ প্রতীক হিসাবে আইয়ুব গেটের নামফলক গুড়িয়ে দিয়ে রক্ত দিয়েই লেখেন আসাদ গেট। আজ সেই আসাদ গেট আর চেনার উপায় নাই। সেই গেইটে পোষ্টারে ছেয়ে থাকে। অনাদরে আর অবহেলায় পড়ে আছে নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার ধানুয়া গ্রামে তার সমাধি। সরকারি উদ্যোগের অভাবে নতুন প্রজন্ম ভুলতে বসেছে মহান আসাদের বীরত্বগাথা।
তিনি বলেন, শহীদ আসাদ ছিলেন মুক্তির লক্ষ্যে পরিচালিত এই ধারাবাহিক সংগ্রামের একটি আলোক নিশান এবং ২০ জানুয়ারি তার শহীদ হওয়ার সময় তার পরিহিত রক্তভেজা শার্ট হয়ে উঠেছিল এই সংগ্রামেরই একটি অনন্য প্রতীক। যে জন্যই কবি শামসুর রাহমান যথার্থই তার কবিতার মধ্য দিয়ে ব্যক্ত করেছিলেন,‘আসাদের শার্ট আজ আমাদের প্রাণের পতাকা।’
তিনি বলেন, এখনো শহীদ আসাদের শার্ট তাই শোষণ-বঞ্চনা, বৈষম্য এবং যেকোনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে সংঘটিত লড়াইয়ের প্রতীক হয়ে সংগ্রামের নির্দেশনা জাগায়। তাই শহীদ আসাদ মুক্তির লড়াইয়ের প্রাণের পতাকা হিসেবেই এখনো পতপত করেই উড়ে চলেছে।
বাংলাদেশ ন্যাপ ঢাকা মহানগর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. কামাল ভুইয়া’র সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশগ্রহন করেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান স্বপন কুমার সাহা, যুগ্ম মহাসচিব মো. মহসীন ভুইয়া, মহানগর সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মো. নজরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় নেতা মতিয়ারা চৌধুরী মিনু, এখলঅস হক, মিতা রহমান, মো. আমজাদ হোসেন, মহানগর নেতা হাবিবুর রহমান প্রমুখ।