স্পোর্টস ডেস্ক : ব্যাটারদের ব্যর্থতায় সিরিজের প্রথম টেস্ট ম্যাচে বাংলাদেশকে ৩২৮ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে শ্রীলঙ্কা। সোমবার (২৫ মার্চ) সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে চতুর্থ দিনে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪৯.২ ওভারে ১৮২ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। ৩২৮ রানের জয়ে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে সফরকারীরা। বাংলাদেশের হয়ে ১৪৮ বলে অপরাজিত ৮৭ রান করেন মুমিনুল হক। দলীয় ৪৭ রানেই পাঁচ উইকেট খুইয়েছিল স্বাগতিকেরা।
চতুর্থ দিনে ব্যাট করতে নেমে ছোট ছোট কয়েকটি জুটিতে লঙ্কানদের জয়োল্লাসের অপেক্ষা বাড়াচ্ছিলেন মুমিনুল হক। তবে শেষ পর্যন্ত ব্যর্থতার বৃত্তেই জায়গা করে নিলো মুমিনুলের সেই প্রতিরোধ। চতুর্থ দিনে ৭ উইকেটে ১২৯ রান নিয়ে মধ্যাহ্ন বিরতিতে গিয়েছিল টাইগাররা। সেখানে থেকে ফিরে ৫৩ রান জড়ো করতেই বাকি ৩ উইকেট হারিয়েছে স্বাগতিকেরা। এতে ১৮২ রানে অলআউট হওয়ায় দিনে ৩২৮ রানের বিশাল ব্যবধানে পরাজয় দেখলো টাইগাররা।
সোমবার (২৫ মার্চ) হারের শঙ্কা নিয়ে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে চতুর্থ দিনে ব্যাটিংয়ে নামেন দুই অপরাজিত ব্যাটার মুমিনুল হক ও তাইজুল ইসলাম। তবে সফরকারীদের ব্যাটিং তোপে দিনের তৃতীয় ওভারেই প্যাভিলিয়নে ফেরেন ‘নাইটওয়াচ’ ম্যান তাইজুল। কাসুন রাজিথার বলে লেগ বিফোর হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। এরপর রিভিউ নিয়েও লাভ হয়নি। ১৫ বলে তার ব্যাট থেকে আসে ৬ রান। তাইজুলের বিদায়ের পর মিরাজকে নিয়ে মুমিনুলের প্রতিরোধ বা হার বিলম্বিত করা জুটিতে পথ দেখে বাংলাদেশ। এই জুটিতে লজ্জার রেকর্ড থেকেও রেহাই পায় লাল-সবুজ শিবির। লঙ্কানদের বিপক্ষে সর্বনিম্ন স্কোর ও হোম ভেন্যুতে নিজেদের সর্বনিম্ন স্কোরের শঙ্কায় পড়েছিল বাংলাদেশ। ৫১ রানে ৬ উইকেট হারানোর পর সপ্তম উইকেটে ৬৬ রান যোগ করে এই জুটি। এতে আর উইকেট না হারানোর স্বপ্ন বুনেছিল বাংলাদেশ। তবে একপর্যায়ে খেই হারিয়ে ফেলেন মিরাজ। দলীয় ১১৭ রানের মাথায় রাজিথার অফ স্ট্যাম্পের বাইরের বলে স্লিপে ধনঞ্জয়ার হাতে ক্যাচ দিয়ে ৬ চারে ৫০ বলে ৩৩ রান করে ফেরেন মিরাজ। এতে ভাঙে তাদের ৬৬ রানের জুটি। মিরাজের বিদায়ে হারের আরও দ্বারপ্রান্তে এসে পৌঁছায় বাংলাদেশ। তবে শরিফুলকে নিয়ে দ্বিতীয় সেশন পর্যন্ত লঙ্কানদের অপেক্ষা বাড়ান সাবেক টেস্ট দলপতি।
এরপর ৪৬ রান করা মুমিনুল অপরাজিত শরিফুলকে নিয়ে মধ্যাহ্নবিরতিতে যান। বিরতি থেকে ফিরে নিজের হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন মুমিনুল। শরিফুলও টাইগারদের সাবেক টেস্ট অধিনায়ককে যোগ্য সঙ্গ দেন। শেষদিকে স্কোরবোর্ডে ৪৭ রান তুলে এই জুটি। কিন্তু কাসুন রাজিথার বলে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন শরিফুল। এরপর দ্রুতই ফেরেন খালেদ আহমেদ এবং নাহিদ রানাও। তবে অপরপ্রান্তে ৮৭ রানে অপরাজিত থেকে দলের বড় ব্যবধানে হার দেখেন মুমিনুল।
লঙ্কানদের হয়ে সর্বোচ্চ পাঁচ উইকেট নেন রাজিথা। এ ছাড়া ফার্নান্দোর তিনটি ও কুমারার শিকার দুই উইকেট।
এর আগে, ধনঞ্জয়া ও কামিন্দু মেন্ডিসের জোড়া সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশকে ৫১১ রানের বিশাল লক্ষ্য ছুড়ে দেয় লঙ্কানরা। মেন্ডিস ১৫৬ ও ধনঞ্জয়া ১০৮ রান করেন। এই দুই ব্যাটার সদ্য সমাপ্ত টেস্টের প্রথম ইনিংসেও সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন। তাদের দুইজনের সেই অনবদ্য সেঞ্চুরিতে ভর করেই প্রথম ইনিংসে ২৮০ রান সংগ্রহ করে শ্রীলঙ্কা। জবাবে, মাত্র ১৮৮ রানে অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ। ৯২ রানের লিড পায় সফরকারীরা। সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট আগামী ৩০ মার্চ চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে