সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থায় চরম সংকট দেখা দিয়েছে। উপজেলার ২৭৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ১৫৯টি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য পড়ে আছে। এর ফলে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে, প্রশাসনিক কার্যক্রমে ধীরগতি দেখা দিয়েছে এবং শিক্ষার মানেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, অবসর, পদোন্নতি, নতুন নিয়োগ বন্ধ থাকা এবং প্রশাসনিক জটিলতার কারণে এসব বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদ শূন্য রয়েছে। দীর্ঘদিন নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ থাকায় শূন্যতার হার আরও বেড়েছে।
সহকারী শিক্ষকরা জানাচ্ছেন, প্রধান শিক্ষক না থাকায় তাদেরকেই পাঠদান ও প্রশাসনিক দায়িত্ব একসঙ্গে পালন করতে হচ্ছে। এতে নিয়মিত ক্লাস নেওয়া ব্যাহত হচ্ছে এবং শিক্ষার্থীদের শেখার আগ্রহ কমে যাচ্ছে।
উল্লাপাড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম জানান, ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে থেকে সহকারী শিক্ষকরা একযোগে পাঠদান ও প্রশাসনিক কাজ করছেন। এতে শিক্ষার মান রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
পূর্বদেলুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সাহেলা পারভীন বলেন, তাদের বিদ্যালয়ে ২০২২ সাল থেকে প্রধান শিক্ষক নেই। প্রশাসনিক কাজের পাশাপাশি পাঠদানের চাপ সামলাতে গিয়ে বিদ্যালয়ের সামগ্রিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। তাঁর মতে, অভিজ্ঞ শিক্ষকদের পদোন্নতি দিলে সংকট কিছুটা লাঘব হতে পারে।
স্থানীয় শিক্ষানুরাগী কবিরুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিক স্তর একটি শিশুর ভবিষ্যৎ গঠনের ভিত্তি। এ পর্যায়ে শৃঙ্খলা ও নেতৃত্বের অভাব শিক্ষাব্যবস্থার সার্বিক মানকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ছানোয়ার হোসেন জানান, প্রধান শিক্ষক সংকট দীর্ঘদিনের সমস্যা। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তা সম্পন্ন হলে শূন্য পদ পূরণ হবে এবং প্রাথমিক শিক্ষায় গতি ফিরে আসবে।
উল্লাপাড়া এইচ. টি. ইমাম বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ সিরাজুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদ শুধুমাত্র প্রশাসনিক নয়, শিক্ষার মান রক্ষার কেন্দ্রবিন্দুও বটে। দীর্ঘদিন এই পদ শূন্য থাকলে পাঠদান ও সহ-শিক্ষামূলক কার্যক্রম উভয়ই স্থবির হয়ে পড়ে।


