নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে গরু চুরির একটি ব্যতিক্রমী ঘটনা ঘটেছে, যেখানে চোরেরা দুটি গরু চুরি করে নিকটবর্তী স্থানে জবাই করে মাংস নিয়ে পালিয়ে গেছে, তবে ফেলে গেছে কেবল চামড়া। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
গত রোববার রাতে কর্ণফুলীর শিকলবাহা ক্রসিং মোড়ের দক্ষিণ পাশে অবস্থিত শাহ আমিন অ্যান্ড কোম্পানির মালিকানাধীন ‘আরিশ এগ্রো ফার্মে’ এ চুরির ঘটনা ঘটে, যা ২৯ জানুয়ারি (বুধবার) প্রকাশ্যে আসে। এ বিষয়ে কর্ণফুলী থানায় একটি মামলা (মামলা নং-৩৪) দায়ের করা হয়েছে।
কীভাবে ঘটল চুরির ঘটনা?
মামলার এজাহার ও খামারের কর্মচারীদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, রোববার গভীর রাতে খামারের কর্মচারীরা যথারীতি গরুগুলো দেখে ঘুমাতে যান। রাতের কোনো এক সময় চোরের দল খামারে প্রবেশ করে একটি ক্রসব্রিড জাতের বড় গরু ও একটি দেশি জাতের গরু চুরি করে নিয়ে যায়।
পরদিন সোমবার সকালে কর্মচারীরা খামারে গিয়ে দেখতে পান, দুটি গরু নিখোঁজ। সম্ভাব্য স্থানে খোঁজাখুঁজি করার পর খামার থেকে প্রায় ৫০০ মিটার দূরে দুটি গরুর চামড়া পড়ে থাকতে দেখা যায়। চামড়া দেখে তারা নিশ্চিত হন যে এগুলো তাদের খামারের গরুরই ছিল।
চুরির পদ্ধতি ও স্থানীয়দের ধারণা
স্থানীয়দের ধারণা, পূর্বপরিকল্পিতভাবে চোরেরা গভীর রাতে খামার থেকে গরু দুটি নিয়ে গিয়ে নির্জন স্থানে জবাই করে এবং দ্রুত মাংস সরিয়ে ফেলে। চোরদের চিহ্নিত করা না গেলেও এলাকাবাসীর ধারণা, এটি সংঘবদ্ধ চক্রের কাজ, যারা বাজারে মাংস বিক্রির উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে এই চুরি চালিয়েছে।
খামার মালিকের বক্তব্য
মামলার বাদী ও খামারের মালিক জয়নাল আবেদীন বলেন, আমার খামারের দুটি গরুর বাজারমূল্য প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। চোরের দল আমার বিশাল ক্ষতি করেছে। আমি থানায় মামলা করেছি এবং দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।
পুলিশের প্রতিক্রিয়া
এ প্রসঙ্গে কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ শরীফ বলেন, ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে থানায় মামলা নেওয়া হয়েছে এবং একজন তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে। আমরা দ্রুত চোরদের শনাক্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।”
গরু চুরির এই অভিনব কৌশল নতুন উদ্বেগ
সম্প্রতি গরু চুরির ঘটনা বেড়ে চললেও এই ঘটনায় চোরদের কৌশল বেশ ব্যতিক্রমী, কারণ তারা সম্পূর্ণ গরু সরিয়ে না নিয়ে শুধু মাংস নিয়ে গেছে, যা একটি সুসংগঠিত চক্রের কর্মকাণ্ড বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পুলিশ ঘটনাটির তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে, তবে এ ধরনের চুরি ঠেকাতে স্থানীয়দের আরও সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন।