নিজস্ব প্রতিবেদক: মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে ঝিটকা-বাল্লা-পাটুরিয়া আঞ্চলিক সড়কের ঝিটকা বাজারের পিঁয়াজ হাটা সংলগ্ন খালের ওপর নবনির্মিত ব্রীজের সংযোগ সড়ক নির্মাণের কাজ শুরু করেছে ধ্রুব কানট্রাকশন নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এদিকে ঝিটকা বাজারের সরকারিভাবে বরাদ্দকৃত ও মালিকানা চান্দিনা ভিটির জমি অধিগ্রহণ না করেই সংযোগ সড়ক নির্মাণে শুরু করায় তা বন্ধে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন ঝিটকা বাজার ব্যবসায়ীরা।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার ঝিটকা বাজার বাসস্ট্যান্ডে বাজার ব্যবসায়ীসহ সর্বস্তরের জনগণের আয়জনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
জানা যায়, ঝিটকা- বাল্লা- পাটুরিয়া আঞ্চলিক সড়কের ঝিটকা বাজারের পিঁয়াজ হাটা সংলগ্ন খালের ওপর প্রায় তিন বছর পূর্বে সড়ক বিভাগ ব্রীজটির নির্মাণ কাজ শুরু করে। চলতি বছরে নির্মাণ কাজ শেষ হতেই না হতেই শুরু হয় ব্রীজের দুই পাশে সংযোগ সড়কের কাজ। ২০২২-২৩ অর্থ বছরে এ সংযোগ সড়কটির কাজ পায় ধ্রুব কানট্রাকশন নামের একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। গত ১৫ জানুয়ারি থেকে ব্রীজের দুই পাশে প্রায় এক কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ও ১৮ ফিট প্রস্থের সংযোগ সড়কটির কাজ শুরু হতেই বাজারের ব্যবসায়ীরা কাজে বাঁধা দেয়। কোনো প্রকার নোটিশ না দিয়ে এবং জমি অধিগ্রহণ না করেই সংযোগ সড়ক নির্মাণের কাজ শুরু করায় প্রাথমিকভাবে উপজেলা সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) অবহিত করেন ব্যবসায়ীরা। এতে করে গত শুক্রবার উপজেলা ভূমি অফিস নির্মাণাধীন সড়কের কাজ স্থগিত করে দেন।
গালা ইউনিয়ন ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়, ঝিটকা বাজারের পাশ দিয়ে বয়ে চলা ইছামতি নদীর কোল ঘেঁষে সরকারিভাবে বাসুদেবপুর মৌজায় আরএস রেকর্ড অনুযায়ী বরাদ্দকৃত ২৩টি দোকান ও কালিকাপুর মৌজায় ব্যক্তিমালিকানাধীন ২৫টি চান্দিনা ভিটিতে দোকানঘর রয়েছে। যা সংযোগ সড়ক নির্মাণ করলে সবগুলো দোকানই ভাঙ্গা পরবে। এছাড়াও ১৯৮৫ সালে তৎকালিন রাষ্টপতি কর্তৃক অনুমোদিত দরবারে এ লোকমানিয়ার নামে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত রয়েছে ১৩ শতাংশ জমি। এর মধ্যে ১০ শতাংশে লোকমান এ দরবারিয়ার মাজার শরীফ ও নদীর কুলে ৩ শতাংশের তাঁর উত্তরসূরিদের বাসভবন রয়েছে। যা সংযোগ সড়ক নির্মাণে এই বাসভবনটির সম্পূর্ণ জায়গাটি চলে যাবে।
মানববন্ধনে ব্যবসায়ীরা বক্তব্যে বলেন, প্রায় ২০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী এই বাজার। এখানে বিগত আওয়ামী সরকার আমলে সড়ক বিভাগ স্থানীয় প্রশাসনসহ বাজারের ব্যবসায়ীদের সাথে পরামর্শ না করে অপরিকল্পিতভাবে একটি ব্রীজ নির্মাণ করে।এখন তার সংযোগ সড়ক নির্মাণে বাজারের সরকারিভাবে বরাদ্দ দেয়া ও ব্যক্তিমালিকানাধীন দোকানঘর উচ্ছেদের চেষ্টা করছে। এতে করে প্রায় পাঁচশো পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হবে। অপরিকল্পিত এই বিলাসী সেতু আমরা চাই না। এই সংযোগ সড়কের কাজ বন্ধে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছি।
ঝিটকা বাজার বণিক সমিতির সভাপতি মো. বেলায়েত হোসেনের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, গালা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা মো. রফিকুল ইসলাম মুকুল, ঝিটকা বাজার ব্যবসায়ী মো. আব্দুল হাই শিকাদর পিয়ারা, মো. আবুল বাশার, কামরুল হাসান বিপ্লব ও ঝিটকা দরবার এ লোকমানিয়ার গদীনশীন সৈয়দ আখতার হোসেনসহসহ বাজারের সর্বস্তরের ব্যবসায়ী ও স্থানীয় জনগণ।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহরিয়ার আশরাফ জানান, আমি কাজ বন্ধ রাখতে বলেছি। আইনের বাইরে গিয়ে কারও কাজ করার কোনো সুযোগ নেই। ভূমি অধিগ্রহণ ছাড়া এই কাজ সড়ক বিভাগ করতে পারে না। এটা তাদের এখতিয়ার নেই।