সাইফুল ইসলাম তানভীর, মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি: ভালোবাসে বিয়ে, মেয়ের পরিবার মেনে না নেয়া, অতঃপর ঈদুল ফিতরে দিন (১১ এপ্রিল) সড়ক দুর্ঘটনায় রহস্যজনকভাবে মোঃ শাকিল (২৩) নিহতের দুই মাস পর আদালতে মামলা করেছেন নিহতের বড় বোন রাশেদা বেগম। নিহত শাকিল মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার ধল্লা ইউনিয়নের আঠালিয়া গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে।
নিহত শাকিলের পরিবারের দাবী তাকে মেয়ের পরিবার ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী দিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় ২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৪-৫ জনকে আসামী করা মামলা করা হয়েছে বলে শনিবার (২২ জুন) দুপুরে নিহতের পরিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
মামলার আসামি করা হয়েছে, একই গ্রামের মৃত ফজল সেকের ছেলে মকবুল (২৫) ও মৃত বরকত মুন্সির ছেলে মঞ্জুরুল ইসলাম (২৫) সহ অজ্ঞাত ৪-৫ জনকে। মামলাটি মানিকগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট -২ এর বিচারক আমলে নিয়ে সিংগাইর থানার ওসিকে আগামী ৭ আগস্ট তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছেন। এর আগে গত ৬ জুন দঃ বিঃ ৩০২, ৩০৪ (খ) ও ৩৪ ধারায় এ মামলাটি দায়ের করেন বলে বাদির আইনজীবি অ্যাডভোকেট মোঃ জহিরুল ইসলাম জানান।
মামলার অভিযোগে প্রকাশ, নিহত শাকিল প্রতিবেশি জনৈক জান্নাতিকে প্রেম করে বিয়ে করে। কিন্তু তার স্ত্রীর পরিবার সে বিয়ে মেনে নেয়নি। দুই পরিবারের মধ্যে বিরোধ মিটাতে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেয় আসামি মকবুল ও মঞ্জুরুল। সুযোগ নিয়ে গত ঈদুল ফিতরের দিন ১১ এপ্রিল দুপুর দেড় টায় ঘুরতে বেড়িয়ে হেমায়েতপুর-মানিকগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের জায়গীর ও ভূমদক্ষিণ স্ট্যান্ডের মাঝামাঝি চলন্ত সিএনজির ভিতরে শাকিলকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে আহত করে মকবুল ও মঞ্জুরুল। এ সময় শাকিলের চিৎকারে চলন্ত সিএনজি আড়াআড়ি হয়ে যায়। এসময় ওই সড়কের এক মোটর সাইকেলের সাথে সংঘর্ষে সিএনজি উল্টে যায়। অজ্ঞাত দুই আসামি পালিয়ে যায়। আসামি মকবুল ও মঞ্জুরুল মৃত্যু নিশ্চিত হয়ে ঘটনাস্থল থেকে উধাও হয়। আশ-পাশের লোকজন নিহত শাকিলকে সাভারস্থ হেমায়েতপুর জামাল ক্লিনিকে ভর্তি করলে বাদির পরিবার ও তার আত্নীয় স্বজনরা দুর্ঘটনার সংবাদ পান।
মামলার বাদি রাশেদা বেগম অভিযোগ করে বলেন, গত রোজার ঈদের দিন আমার ভাইকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে আসামিরা মদ পান অবস্থায় পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে। পুলিশ লাশের সুরতহাল রিপোর্ট করলেও সড়ক দুর্ঘনায় মারা গেছে এমন খবরে আমরা লাশ ময়না তদন্ত করতে দেয়নি। ঘটনার দুই দিন পর হত্যা আসল রহস্য জানতে পারি। পড়ে আদালতে মামলা করি। মামলা সঠিক তদন্তে নিহতের লাশ উত্তোলন করে ময়না তদন্তের দাবিও জানান তিনি।
এ প্রসঙ্গে মামলার আসামী মকবুল ও মঞ্জুরুল হক শাকিলকে হত্যার কথা অস্বীকার করে বলেন, ঈদের নামাজ পড়ে সিএনজি নিয়ে আমরা ঘুরতে বের হই। দুপুরের দিকে আমাদের গ্রামের জনৈক জলিলের ভিটা থেকে শাকিল আমাদের সিএনজিতে ওঠে। এরপর মোটর সাইকেলের সাথে সিএনজির সংঘর্ষে জায়গীর এলাকায় দুর্ঘটনা ঘটে। সেখানেই শাকিলের মৃত্যু হয়।তবে সহপাঠী সকলেই মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন বলে মকবুল ও মঞ্জুরুল স্বীকার করেন।
এ ব্যাপারে সিংগাইর থানার ওসি মোঃ জিয়ারুল ইসলাম বলেন, মামলার সঠিক তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে ।