মো: আলীমুজ্জামান : TEAM TRC স্বপ্ন দেখে এ দেশ একদিন দুর্নীতি মুক্ত করে জাতির জনক এর শেষ ইচ্ছা পূরণ করে উনার রক্তের ঋণ শোধ করতে পারবে। ১৯৭৪ শেষ সময় থেকে ১৯৭৫ এর ১৫ই আগস্ট পর্যন্ত সকল ভাষণ ও সম্মেলনে উনার বলা সকল কথা ছিল দুর্নীতির বিরুদ্ধে। উনার সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধান মন্ত্রী সেই স্বপ্ন পূরণে সকল পর্যায়ে সরকারি কর্মকর্তা গণকে বেতন বৃদ্ধি সহ অনেক সুবিধা দেওয়ার পরও সেটা কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। অবশ্য সেটার জন্য সরকারি কর্মকর্তার চাইতে এ দেশের ব্যবসায়ী গণের ভ্যাট আইন সম্পর্কে সঠিক ধারণা না থাকার কারণ বেশি বলে আমরা মনে করি। যে কোন প্রকার রাজস্ব সংক্রান্ত ঝামেলা তৈরি হলে সহজ সমাধান করতে ম্যানেজ পদ্ধতিতে সমাধান খুঁজতে চান। এই সহজ সমাধান খুঁজতে গিয়ে এক সময় এমন ভাবে জড়িয়ে যান যে সেটা থেকে বের হওয়ার আর কোন উপায় থাকে না। ব্যাবসায়ী গণের চাইতে আরো গুরুত্বপূর্ণ হল সেখানে কাজ করা কর্মকর্তা ও বিভিন্ন প্রকার অ্যাডভাইজার গণ। যারা কোন ভাবেই আইনের চ্যালেঞ্জ নিতে চান না বা সেভাবে নিজেদের প্রস্তুত রাখেন না। একটা প্রতিষ্ঠানের মালিক বর্তমানে রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া থেকে বের হতে চান কিন্ত সঠিক উপায় বা পদ্ধতি খুঁজে পাচ্ছেন না।
সরকার বিভিন্ন প্রকার রাজস্ব কর্মকর্তার বাহিরে সকল স্তরের ট্যাক্স পেয়ার এর সহযোগিতার জন্য প্রায় আঠার হাজার ITP লাইসেন্স দিয়েছেন ও বর্তমানে ভ্যাট কনসালটেন্সি লাইসেন্স প্রদান করছেন। আমাদের দেশে বিভিন্ন প্রকার প্রফেশনাল প্রতিষ্ঠান Gi লোকবল সমুহ বড় বড় কর্পোরেট হাউস গুলিতে বড় বড় পদে বসে আছেন কিন্ত বাংলাদেশে এমন কোন প্রতিষ্ঠান পাওয়া যাবে না যেখানে রাজস্ব কর্মকর্তা গণ গিয়ে দলিলাদি নিয়ে আসলে রাজস্ব ফাঁকি এর কেস থেকে মুক্ত থাকতে পারবেন এমন চ্যালেঞ্জ কয়টা প্রতিষ্ঠান নিতে পারবেন? অথচ এমন অনেক প্রতিষ্ঠান আছে যারা কোন না কোন ভাবে শতভাগ বা এরও অধিক ভ্যাট বিভিন্ন ভাবে প্রদান করছেন। তাহলে আসল সমস্যা কোথায়?
আসল সমস্যা হল সঠিক ভাবে দলিলাদি সংরক্ষণ না করা ও প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আন্ত বিভাগীয় সমন্বয় না থাকা। একই ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন নেওয়া বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা গণ নিজেদের আলাদা করে রাখে ও সকল প্রকার দলিলাদি আলাদা ভাবে সংরক্ষণ করে। অবশ্য সেটা প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনেই করে থাকেন। যদি কোন প্রতিষ্ঠান মনে করেন এভাবে চলে দিন পার করছেন এবং ভাল লাভ করে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেছেন কিন্তু সেটা আর বেশি দিন হয়ত পারবেন না। কনসালটেন্সি পেশায় আসার পর আমরা ভ্যাট ফ্রী ও ভ্যাট প্রদান করা এমন কিছু বিশাল বিশাল রাজস্ব ফাঁকি এর দাবিনামা দেখেছি যার বেশির ভাগ সঠিক ভাবে দলিলাদি সংরক্ষণ ও সেটার উপস্থাপন করতে না পারার কারনে, অনেক ব্যয় বহুল ভাবে দাবিনামা শেষ করতে দেখেছি যে যার আসলে কোন যক্তিকতা ছিল না। অনেক অন্যায় সুবিধা নেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন প্রতিষ্ঠানের প্রধান কর্মকর্তার সঠিক ভাবে উপস্থাপন করতে না পারার কারণে। সরকার বিভিন্ন ভাবে উৎসে কর কর্তন করে নেন, সেটার সঠিক ব্যবহার আমরা করতে জানি না বলে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি, অবৈধ সুবিধা না হয় অধিক রাজস্ব প্রদান করে সমস্যার সমাধান করছি।
আমরা মনে করি এ সকল সমস্যার সমাধান হল সঠিক আইনের জ্ঞান, আইনের ব্যবহার জেনে সঠিক ভাবে দলিলাদি সংরক্ষণ ও যে কোন প্রকার রাজস্ব অডিট ফেস করতে সংরক্ষিত দলিলাদি সম্পর্কে পূর্বে থেকে সঠিক ব্যাখ্যা বিশ্লেষন তৈরি করে রেখে উহার সঠিক উপস্থাপন করতে পারলে রাজস্ব দায় মুক্ত থাকা যাবে। অডিট করতে আসা রাজস্ব কর্মকর্তা আপনার প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে বেশি জানেন না কারণ আপনি সারা বছর যে কাজ করেন উহা তিনি এক/ দুই সপ্তাহের বেশি সময় দেখার সুযোগ পান না। যদি আইনের প্রতি বিষয় কাজ করার সময় মাথায় থাকে তাহলে উনাকে যে কোন অযৌক্তিক দাবি চ্যালেঞ্জ করার ক্ষমতা আপনার থাকে তাহলে কোন ভাবেই অনৈতিক সুবিধা প্রদান করতে হবে না ইনশাআল্লাহ।
যদি দেশের সকল ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান এই পদ্ধতির আওতায় নিজেদের শক্তিশালী করতে পারে তাহলে দুর্নীতি দুর করে জাতির জনকের সপ্নের সোনার বাংলা গড়তে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী হাতকে শক্তিশালী করা যাবে।
TEAM TRC কনসালটেন্সি পেশায় আসার শুরু থেকে চেষ্টা করে যাচ্ছেন ভ্যাট সিস্টেম উন্নয়ন নিয়ে ব্যবসায়ীদের সচেতন করতে নিজ অর্থায়নে বিভিন্ন ধরনের প্রচার কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ডাক্তার এজাজ আহমেদ অভিনীত প্রথম ভ্যাট সংক্রান্ত নাটক তৈরি ও এশিয়ান টিভি তে প্রচার বানিজ্যিক আমদানি কারক দের নিয়ে পাবলিক লাইব্রেরী অডিটোরিয়াম এ সেমিনার আয়োজন করেন। সেখানে কয়েক শত ব্যবসায়ী সহ এনবিআর ও কর্পোরেট সেক্টরের সেরা ব্যাক্তি গণ ভ্যাট সিস্টেম উন্নয়ন এর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে বক্তব্য দেন। সেখানে TRC LEAD CONSULTANT মূল উপস্থাপনায় প্রমাণ করেন কে সঠিক ভ্যাট ব্যবস্থাপনা এর আওতায় আসলে দ্রব্য মূল্য ৩-৪% হারে কমানো সম্বব। যাতে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ করা যায়। এ ছাড়াও আমাদের ইউটিউব চ্যানেল TRC – REVENUE এর মাধ্যমে নিয়মিত আইনের বিষয়গুলো সহজ ভাবে উপস্থাপন করে ভিডিও আপলোড করা সহ বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমের দ্বারা আমরা ব্যবসায়ীদের কমপ্লায়েন্স হওয়া যে অধিক লাভজনক সেটা বোঝানোর চেষ্টা করে যাচ্ছি।
TEAM TRC – সঠিক ভ্যাট ম্যানেজমেন্ট এর আওতায় সারা দেশের ব্যবসায়ীদের আনতে ভ্যাট সিস্টেম উন্নয়ন নিয়ে সারাদেশ ব্যাপী কাজ করার উদ্যোগ নিয়ে বিভিন্ন বিভাগ সমূহে অফিস খোলার পরিকল্পনা গ্রহণ করছেন। এছাড়াও বাংলাদেশের কর্পোরেট সেক্টরের ভ্যাট, ট্যাক্স, কাস্টমস ও হিসাব বিভাগের কর্মকর্তা দের নিয়ে পারস্পরিক নলেজ শেয়ারিং এর জন্য ASSOCIATION FOR REVENUE MANAGEMENT (ARM) নামে একটি সংগঠন তৈরি করার প্রস্তুতি নিচ্ছে যে সংগঠন টির মূল উদ্দেশ্য হলো নলেজ শেয়ারিং করে পেশায় নিজেদের আরো দক্ষ জনশক্তি তৈরি করে ন্যায্য ভ্যাট প্রদানের মাধ্যমে নিজেদের প্রতিষ্ঠানকে ভ্যাট দায় মুক্ত রাখতে পারেন। আমরা এ সকল কাজ করে যাচ্ছি কনসালটেন্সি পেশার পরিবর্তন আনতে।
সাধারনত ব্যবসায়ীগণের ধারনা হল কন্সালটেন্টগন রাজস্ব কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে নিজেরা অনৈতিক সুবিধা নিয়ে বা দিয়ে কাজ উদ্ধার করেন। আমরা সে চিন্তার পরিবর্তন আনতে চাই। আইনের মধ্যে থেকে যত টুকু সুবিধা পাওয়া যায় বা উহার ব্যবহারিক কার্যের দ্বারা যে সুুবিধাগুলি ব্যবসায়ীগন পাবেন সেটা পাওয়ার নিশ্চয়তা প্রদান করতে চায়। দেশের ব্যবসায়ীগন সফল ও ভ্যাট দায়মুক্ত থেকে ব্যবসায় পরিচালনা করতে পারলে ও সরকার ন্যায্য রাজস্ব প্রাপ্তির নিশ্চয়তা বিধান করা গেলে মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর স্বপ্নের রুপকল্প-২০৪১ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে বলে মনে করে।
লেখক : কলামিস্ট