মো: লিয়াকত এফসিএমএ, এফসিএ : স্ত্রীর সাথে সহবাস = আমরা কি স্ত্রীকে বাসর রাত থেকে শুরু করে কখনও জিজ্ঞেস করি – তুমি কি আমার সাথে এ মুহূর্তে সহবাসে প্রস্তুত ? না, জিজ্ঞেস করিনা। জিজ্ঞেস করার প্রয়োজন মনে করিনা। কারন আমরা পুরুষ !! পুরুষ শাসিত সমাজে এটা মানায়না। তবে জিজ্ঞেস করা দরকার। ধর্ম আমি কম জানি। আমার যদি ভুল না হয়ে থাকে – ইসলাম ও তাই-ই বলে। ইসলামের ভাষায় এর নাম নারী -অধিকার। মনে আর শরীরের তেজের কারনে এটার নাম হয় ” নারী স্বাধীনতা “। যা তসলিমার ভাষায় ” যৌনাঙ্গের স্বাধীনতা “। সব ধর্মেই অশ্লীল শব্দ ব্যবহার নিষিদ্ধ। মানুষ এসব শব্দ বড় মজা করে গোপনে পড়ে। যেমন মরহুম সৈয়দ সামসুল হকের ” খেলারাম খেলে যা ” আমাদের সময় বইটার প্রচুর চাহিদা ছিল। নির্মলেন্দুগুনের কিছু কবিতা পাঠক খুব মজা করে করে পড়ে। কারন লেখকরা জানেন – বেশিরভাগ মানুষ, বিশেষ করে পুরুষ মানুষ অসুস্থ, গোপনে অশ্লীলতা পছন্দ করে। তাই ধর্ম ভীরু মানুষ তসলিমার অশ্লীল শব্দ পছন্দ করেনি। আমিও না।
আমার ভাগ্নে লন্ডনের এফআরসিএস ডাক্তার। আর তার বিদেশিনী বউও ডাক্তার – শিশু বিশেষজ্ঞ। গত মাসে আক্দ হোল। ভাগ্নের বিয়ের পূর্ব শর্ত – ” আমার ৬ টা বাচ্চা লাগবে “। মেয়েটা বেশ ভালো – ” এক কথায় রাজি”। তার জবাবটা ছিল এভাবে – আমি শিশুদের নিয়ে থাকি। শিশু আমার ভাল লাগে। যদি আমার ৬ টা বাচ্চা নাও হয় – বাকিগুলো এডপ্ট করবো। তবে ৬ টা তোমাকে দেবই। আমি চমকিত হলাম ভাগ্নের রিকুয়ারমেন্ট দেখে আর মেয়েটার প্রতিউত্তর শুনে। প্রশ্ন হচ্ছে – আমরা কি কখনো এ ক্ষেত্রে নারীদের ইচ্ছাকে দাম দেই, দেইনা। আমার নিজের বেলায়ও তেমনটি ছিল। আমার প্রথম বেবি (মঈন ) সিজার হওয়ার ঠিক ৪ মাসের মাথায় দ্বিতীয় বেবি (মেহেদি ) আসে। যেখানে সিজারের ঘা শুকায়নি – হাটতে চলতে অসুবিধা – সেখানে কি দ্বিতীয় বেবি কল্পনা করা যায় ?? স্পেস দেয়া হয়নি। ইসলাম সেটাকেই বলে – ” নারীর অধিকার ” । আবার দুটোই সিজার হওয়ার পর – তৃতীয় বেবি (মেঘনা ) নেয়ার কোন মানেই হয় না। ৪ বছরের মাথায় সেটাও সিজার। শরীরে আর থাকে কি ? তার উপর ছেলে মেয়েদের লালন পালন করা। আমি কি কখন তাদের লালন পালনের ভার নিয়েছি ? না নেইনি। স্ত্রীর প্রতি এ এক বিরাট অত্যাচার। সেটাকেই তসলিমা নাম দিয়েছে – ” জরায়ুর অধিকার “।
বস্তির অনেক প্রেগনেন্ট মেয়েকে জিজ্ঞেস করলে ওরা উত্তর দেয় – ” আমার পেটে এটা কুত্তার বাচ্চা “। বুঝতে বাকি থাকেনা – তাদের যৌন স্বাধীনতা তো নেইই – জরায়ুর স্বাধীনতাও নেই। ইসলাম সেটাকেই বলে – নারী অধিকার , সোচ্চার হয়ে এটা হয়ে যায় ” নারী স্বাধীনতা ” । সাহিত্যিকদের ভাষায় – জরায়ুর অধিকার।
আসুন – আমরা নারীদের অজ্ঞতার সুযোগ নিয়ে তাঁদের কে তাঁদের অধিকার থেকে বঞ্চিত না করি – সেটা যৌন স্বাধীনতাই হউক বা জরায়ুর স্বাধীনতাই হউক।
লেখক : ফেলো আইসিএমএবি ও আইসিএবি এবং কলামিস্ট।