তিমির বনিক, স্টাফ রিপোর্টার: বাল্লা স্থলবন্দর দেশের ২৩তম বন্দর। ২০১৬ সালে সাবেক নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান এ বন্দরের ঘোষণা করেন। হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার কেদারাকোট এলাকায় প্রায় ১৩ একর জমির ওপর এ বন্দরের অবকাঠামো তৈরির কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। বাংলাদেশ অংশে নির্মাণকাজ ষাট ভাগ শেষ হলেও ভারতীয় অংশের নির্মাণকাজ শুরু না হওয়ায় স্থলবন্দরটি যথাসময়ে চালু নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। তবে বন্দরটি চালু হলে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য বাড়বে। পাশাপাশি সৃষ্টি হবে নতুন কর্মসংস্থান।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের এ পারে কেদারাকোট ওই পারে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের পাহাড়মুড়া এলাকার সঙ্গে এ স্থলবন্দর দিয়ে সংযোগ স্থাপিত হবে। বাল্লা স্থলবন্দরের ভেতরে ভূমির মালিকরা এখনও জমির মূল্য পায়নি। যে কারণে ১৮-২০টি পরিবারের স্থলবন্দরের ভেতরে খুব কষ্টে বসবাস করতে হচ্ছে। তাদের ভবিষ্যতে কী আছে, এ নিয়ে শঙ্কা রয়েছে সেখানকার মানুষের।
জমসের আলী, বসয় ১০৭ বছর। বাড়ির ভিটেসহ ৮৩ শতক জমি স্থলবন্দরের ভেতরে। সব কাগজপত্র সংশ্লিষ্ট দফতরে জমা দিয়েও টাকা পাচ্ছেন না। আবদুল খালেক বয়স ৭০ বছর, বসত বাড়ির ১০ শতক জমি বন্দরে পড়েছে, এখনও টাকা পাননি। প্রায় সবার একই বক্তব্য কাগজপত্র জমা দিয়েও টাকা পাচ্ছেন না।
কথা হয় সানু মিয়া, মরম আলী, জমিলা বেগমের সঙ্গে। তারা জানান, শুধু বসতঘর ক্ষতিগ্রস্তের টাকা পেয়েছেন, তবে এখনও জমির টাকা পাননি।
এদিকে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মাহবুব আলী সম্প্রতি বাল্লা স্থলবন্দর নির্মাণকাজ পরিদর্শন করে সংবাদকর্মীদের জানিয়েছেন ২০২৩ সালের জুনের মধ্যেই নির্মাণকাজ শেষ হবে।
জানা গেছে, ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতায় দীর্ঘদিন আটকে থেকে ২০২১ সালের ৭ অক্টোবর বন্দর নির্মাণকাজ শুরু হয়। উভয় দেশের নির্মাণকাজ সমানভাবে এগিয়ে গেলে ২০২৪ সালের মধ্যেই বন্দর চালুর ব্যাপারে আশাবাদী সংশ্লিষ্টরা।
জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান বলেন, বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ হয়ে গেছে। এ ছাড়া ভেতরে বেশ কিছু অবকাঠামো তৈরির কাজ চলছে। আমরা আশা করছি, বেশ তাড়াতাড়ি নির্মাণকাজ শেষ হবে। ভারতীয় অংশে কাজ শুরু হয়নি জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি আমার এখতিয়ারে বহির্ভূত।
স্থলবন্দর নির্মাণে দায়িত্বে থাকা লোকজনে সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্থলবন্দরের চারদিকে দেয়াল ওঠে গেছে। দেয়ালের মধ্যে কিছু ফাঁকা জায়গা দিয়ে অধিগ্রহণকৃত ভূমির লোকজন যাতায়াত করেন। আর স্থলবন্দরের কাজ পুরোদমে চলছে। প্রায় ৬০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে দাবি করেছেন স্থলবন্দরের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলী। উপসহকারী প্রকৌশলী আবুল খায়ের জানান, বাল্লা স্থলবন্দরের জমি অধিগ্রহণের কাজ ২০১৭ সাল থেকে শুরু হয়।
বিভিন্ন জটিলতা শেষে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারির দিকে অধিগ্রহণ সম্পন্ন হয়। অধিগ্রহণের পুরো টাকা জেলা প্রশাসকের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও অধিগ্রহণকৃত ভূমি মালিকদের সহায়তার জন্য স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, প্রজেক্ট ডিরেক্টর, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী, নির্বাহী প্রকৌশলী জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে নিয়মিত যোগাযোগ করেছেন।