স্পোর্টস ডেস্ক : রিতু মনি ও অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতির অসাধারন ব্যাটিং দৃঢ়তায় নারী বিশ্বকাপ বাছাইয়ে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দুই উইকেটে শ্বাসরুদ্ধকর জয় পেয়েছে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। এটি টুর্নামেন্টে টানা দ্বিতীয় জয় টাইগ্রেসদের।
রোববার (১৩ এপ্রিল) লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশের বোলারদের ব্যর্থতার সুযোগ নিয়ে আইরিশরা ২৩৬ রানের কঠিন লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয়। কঠিন এই লক্ষ্যে খেলতে নেমে প্রথম ওভারেই ধাক্কা খেলেও জয়লাভ করে বাংলাদেশ।
ব্যাটিংয়ে নেমে ৬ রানে প্রথম উইকেট হারায় আয়ারল্যান্ড। প্রাথমিক ধাক্কা সামলে অধিনায়ক গ্যাবি লুইস ও অ্যামি হান্টারের ব্যাটিংয়ে স্কোর এগিয়ে যায় তাদের। হান্টার ৩৩, ওরলা প্রেন্ডারগাস্ট ৪১ করেন। লরা ডিলেনি’র ব্যাট থেকে আসে ৬৩ রান। ৮ উইকেটে ২৩৫ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়ে আইরিশরা। রাবেয়া খান ৩টি, ফাহিমা খাতুন নেন ২টি উইকেট।
টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে থাইল্যান্ডকে হারায় বাংলাদেশ। আইরিশদের হারালে পয়েন্ট টেবিলে এগিয়ে যাবে টাইগ্রেসরা। কিন্তু দ্বিতীয় জয়ের লক্ষ্যে ২৩৬ রানের টার্গেটে শুরুতেই পড়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে। মাত্র ২ রানে হারায় দুই ওপেনারকে। শারমিন আক্তারকে নিয়ে দলকে লড়াইয়ে ফেরানোর চেষ্টা করেন অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি। শারমিন ২৪ করে ফেরেন। অধিনায়ক জ্যোতি খেলেন ৫১ রানের ইনিংস। ৯৪ রানে ৫ উইকেট হারালে পরাজয় চোখ রাঙ্গাতে থাকে বাংলাদেশকে।
দলকে খাদের কিনারা থেকে টেনে তোলেন রিতু মনি। তার লড়াকু ব্যাটিংয়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রন নেয় বাংলাদেশ। ফাহিমা ২৮ ও জান্নাতুল ফেরদৌস ১৯ করেন। শেষ পর্যন্ত নাহিদাকে নিয়ে দলকে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে দেন রিতু। খেলেন ৬৭ রানের হার না মানা ইনিংস। ১৮তে নটআউট থাকেন নাহিদা। ৮ বল হাতে রেখেই ম্যাচ জিতে নেয় বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের ক্রিকেটে জ্যোতি যেন আশার আলো। একজন অধিনায়ক, যিনি দল খারাপ খেললে সতীর্থদের সাহস দেন। ভালো করলে কৃতিত্বের ভার দেন অন্যদের। এমন অধিনায়কই তো চান সবাই। ব্যর্থতার দায়ভার নিজের কাঁধে নিতে দ্বিতীয়বার ভাবেন না, সাফল্যের ভাগও সবার মাঝে বিতরণ করে দেন।
জ্যোতি শব্দের অর্থ আলো। নামের মতোই আলো ছড়িয়ে যাচ্ছেন তিনি। দলকে বেঁধেছেন এক সুতোয়। চলমান নারী ওয়ানেডে বিশ্বকাপের বাছাইপর্বেই যেমন মুন্সিয়ানা দেখাচ্ছেন। দলকে বেঁধেছেন এক সুতোয়। চলমান নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপের বাছাইপর্বেই যেমন মুন্সিয়ানা দেখাচ্ছেন। দুই ম্যাচেই ক্যাপ্টেন ছিলেন ‘ফ্যান্টাস্টিক।’
থাইল্যান্ডের সঙ্গে প্রথম ম্যাচে দ্রুততম শতক। এতটুকুই যথেষ্ট তাকে তুলে ধরতে। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচে ম্যাচসেরা হতে পারেননি। কিন্তু, যা করেছেন তাতেই মূলত দলের ভিত মজবুত হয়েছে। উইকেটের পেছনে বিশ্বস্ত হাতে তিন তিনটি স্ট্যাম্পিং! ব্যাট হাতে হাল ধরেছেন এমন এক সময়ে, ২ রানে ২ উইকেট হারিয়ে ব্যাকফুটে বাংলাদেশ। জ্যোতির ৬৮ বলে ৫১ রানের ইনিংস পরিস্থিতি অনুকূলে এনে দেন। যাতে ভর দিয়ে রিতু মনি ও নাহিদা তুলিতে শেষ আঁচড় দেন। বাংলাদেশ তুলে নেয় রোমাঞ্চকর জয়।
২৭ বছর বয়সী জ্যোতি জানেন দলের সীমাবদ্ধতা। যতটুকু আছে তা নিয়ে কীভাবে লড়াই করতে হয়, সেটিও জানেন ভালোভাবে। তাই তো, কাঁধে বিশাল দায়িত্বের ভারে এতটুকু নুইয়ে পড়ছেন না।