আহসান আলম,চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি : পৌঁষের হাড় কাঁপানো শীতে কাপছে চুয়াডাঙ্গা। মৃদু শৈত্য প্রবাহে বেড়েছে শীতের তীব্রতা। বৃষ্টির মতো ঝরছে ঘন কুয়াশা। গত তিনদিন থেকে সূর্যের দেখা মেলেনি এ জেলায়। ঘন কুয়াশা ও হিমেল হাওয়ায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে এখানকার জনজীবন। শীতে কষ্টে আছেন খেটে খাওয়া ছিন্নমূল মানুষ। সময় মতো কাজে যেতে পারছেন না তারা। খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারন করতে দেখা গেছে এসব মানুষগুলোকে। থমকে গেছে চুয়াডাঙ্গার কর্মচাঞ্চল্য।
তীব্র ঠান্ডায় দেখা দিচ্ছে শীতজনিত নানা রোগ। হাসপাতালে বাড়ছে শিশু ও বয়স্ক রোগীর সংখ্যা। শীতে নষ্ট হচ্ছে মাঠের ফসল। ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে ধানের বীজতলা।
বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বলে জানিয়েছে স্থানীয় আবহাওয়া অফিস।
চুয়াডাঙ্গা বড় বাজার এলাকার রিকশা চালক হামিদুল ইসলাম জানান, “খুব কুয়াশা আর বাতাস বইছে। আমরা সকালে রিকশা নিয়ে বাইরে আসতে পারছি না। আর মানুষও খুব কাজ ছাড়া বাইরে আসছে না। এতে আমাদের আয় কমে গেছে।”
দামুড়হুদা উপজেলার নতিপোতা গ্রামের কৃষক মজিবর রহমান জানান, “ কয়েকদিন ধরি খুব কুয়াশার চাপ। আমাদের ধানের চারা নষ্ট হয়ি যাচি। চারার আগা পুড়ি পচি যাচি। চারা নষ্ট হয়ি গেলি আমরা ধান লাগাবো কি করি?”
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার রকিবুল হাসান বলেন, গত তিন দিন থেকে চুয়াডাঙ্গা ও আশপাশের এলাকা পুরো কুয়াশাচ্ছন্ন রয়েছে। বৃষ্টির মতো ঝরছে কুয়াশা। প্রচণ্ড কুয়াশার চাপ থাকায় সূর্যের দেখা মিলছে না। আজ বৃহস্পতিবার থেকে আবারও মৃদু শৈত্য প্রবাহ শুরু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
তিনি বলেন, গত ১৪ নভেম্বর চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১৩.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।চলতি মাসে টানা তিনদিন দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় এ জেলায়। অর্থাৎ, চলতি ১৫ ও ১৬ ডিসেম্বর দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় চুয়াডাঙ্গায় ৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ১৭ ডিসেম্বর এ জেলায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৯.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত ২৯ ডিসেম্বর এ জেলায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৮.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অর্থাৎ, গত ডিসেম্বর মাসে চারদিন দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করে চুয়াডাঙ্গায়। এ মৌসুমে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে। মৃদু থেকে মাঝারি ও পরে তীব্র শৈত্য প্রবাহে রূপ নিতে পারে।