নিজস্ব প্রতিবেদক : বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে আজ থেকে শুরু হচ্ছে ৬ দিনব্যাপী পুলিশ সপ্তাহ ২০২৩। এবারের পুলিশ সপ্তাহের প্রতিপাদ্য বিষয় হলো, ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে পুলিশ আছে জনতার পাশে।’
মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুলিশ সপ্তাহের প্রথম দিন সকাল ১০টায় রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স মাঠে বার্ষিক পুলিশ প্যারেডের মধ্য দিয়ে পুলিশ সপ্তাহের উদ্বোধন করবেন। তিনি পুলিশের বিভিন্ন কন্টিনজেন্ট ও পতাকাবাহী দলের সুশৃঙ্খল ও দৃষ্টিনন্দন বর্ণিল প্যারেড পরিদর্শন এবং অভিবাদন গ্রহণ করবেন। তিনি পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্যে দিক নির্দেশনামূলক বক্তৃতা করবেন।
এ উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী প্রদান করেছেন।
বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেন, জঙ্গি দমনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে ‘রোল মডেল’ হিসেবে স্বীকৃত।
পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে বাংলাদেশ পুলিশের বর্তমান ও সাবেক সকল সদস্যকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিধান এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত ঐতিহ্যবাহী ও প্রচীন প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পুলিশ।
বাণীতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আশা করি, বাংলাদেশ পুলিশের প্রত্যেক সদস্য মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে দায়িত্বপালন করবেন। আমি বিশ্বাস করি, আপনারা সততা, নিষ্ঠা ও মানবিকতার সঙ্গে দায়িত্বপালনের মাধ্যমে বাংলাদেশ পুলিশকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের প্রত্যাশিত ‘জনগণের পুলিশ’ হিসেবে গড়ে তুলতে নিরলসভাবে কাজ করবেন।’
এবারের বার্ষিক পুলিশ প্যারেডে অধিনায়ক হিসেবে নেতৃত্ব দিবেন খুলনা রেঞ্জের পুলিশ সুপার কাজী মইন উদ্দিন। তার নেতৃত্বে বিভিন্ন কন্টিনজেন্টের পুলিশ সদস্যরা প্যারেডে অংশ নেবেন। পুলিশ সপ্তাহের প্রতিটি অনুষ্ঠান যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অনুষ্ঠিত হবে।
২০২২ সালে অসীম সাহসিকতা ও বীরত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ ১৫ জন পুলিশ সদস্যকে ‘বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম)’, ২৫ জনকে ‘রাষ্ট্রপতির পুলিশ পদক (পিপিএম)’ এবং গুরুত্বপূর্ণ মামলার রহস্য উদঘাটন, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, দক্ষতা, কর্তব্যনিষ্ঠা, সততা ও শৃঙ্খলামূলক আচরণের মাধ্যমে প্রশংসনীয় অবদানের জন্য ২৫ জন পুলিশ সদস্যকে ‘বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম)-সেবা’ এবং ৫০ জনকে ‘রাষ্ট্রপতির পুলিশ পদক (পিপিএম)-সেবা’ প্রদান করা হয়। প্রধানমন্ত্রী পদকপ্রাপ্তদের পদক পরিয়ে দিবেন।
পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব এবং ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি) পৃথক বাণী দিয়েছেন। পুলিশ সপ্তাহের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে জাতীয় দৈনিক পত্রিকাসমূহ বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে। এ উপলক্ষে সরকারি-বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
পুলিশ সপ্তাহ ২০২৩ এর উল্লেখযোগ্য কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির (পুনাক) স্টল পরিদর্শন, পুলিশ সদস্যদের সাথে প্রধানমন্ত্রীর কল্যাণ প্যারেড, প্রধানমন্ত্রীর ঊর্ধ্বতন পুলিশ অফিসারগণের উদ্দেশ্যে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য, ঊর্ধ্বতন পুলিশ অফিসারগণের উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রপতির ভাষণ, আইজিপি’র র্যাংক ব্যাজ, শিল্ড প্যারেড, অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার পুরস্কার বিতরণ, পুলিশ কর্মকর্তাগণের সঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সম্মেলন ইত্যাদি।
পুলিশ সপ্তাহের বিভিন্ন কর্ম অধিবেশনে বিগত এক বছরের কার্যক্রম পর্যালোচনা করে পরবর্তী বছরের কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করা হবে। পুলিশ সপ্তাহ শেষ হবে ৮ জানুয়ারি।