বেনাপোল প্রতিনিধি : বেনাপোল চেকপোস্ট আন্তর্জাতিক কাস্টমস ইমিগ্রেশন প্যাসেঞ্জার টার্মিলালে এপিবিএন পুলিশের বিরুদ্ধে যাত্রীদের হয়রানি, স্বজনপ্রীতি ও উৎকোচ নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
যাত্রী টার্মিনালে কর্তব্যরত এপিবিএনের এএসআই সায়েদুর রহমান এক শ্রেনীর দালালদের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে অর্থের বিনিময়ে লাইনের পিছনে দাঁড়ানো যাত্রীদের সুযোগ বুঝে আগে টার্মিনালের মধ্যে প্রবেশ করাচ্ছে। প্রতিদিন সকালে সবার চোখের সামনে এ ঘটনা ঘটলেও প্রতিবাদ করার বা দেখার কেউ নেই।
শুক্রবার সকালে প্যাসেঞ্জার টর্মিনালে গিয়ে দেখা গেছে মূল লাইন দিয়ে পাসপোর্টযাত্রীদের প্রবেশ না করিয়ে কিছু যাত্রীদের অন্য লাইনে সুযোগ বুঝে প্রবেশ করানো হচ্ছে। এসময় মূল লাইনে দাঁড়ানো সাধারন যাত্রীরা চেঁচামেচি করলে এবং যাত্রীদের এগিয়ে দিতে আসা লোকদের সাথে বাকবিতন্ডা হয় ওই এএসআই এর সাথে। কয়েকজন যাত্রীকে ফিরিয়ে আসতে বললে তারা থমকে দাঁড়ায়। সাথে সাথে ওই এএসআই হতবিহ্বল হয়ে বলেন ওরা ক্যান্সার যাত্রীদের আত্নীয়।
কোথায় ক্যান্সার যাত্রী জানতে চাইলে যাত্রীরা বলেন আমাদের সাথে অন্য কেউ নেই। কোন ক্যান্সার যাত্রীও নেই। তারা বলেন আমরা ফিরব কেন আগে প্রবেশ করিয়ে দেওয়ার জন্য ওই পুলিশের লোককে দুই জন ৩০০ করে ৬০০ টাকা দিয়েছি। আমরা ফিরব না। এভাবে দেখা যায় যেখান দিয়ে ক্যান্সার যাত্রী প্রবেশ করার কথা সেখানে সুযোগ বুঝে ওই পুলিশ কর্মকর্তা একথা বলেন। যাত্রীদের পাসপোর্ট ও নাম ঠিকানা জানতে চাইলে তাদের দ্রুত সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে বন্দরের রুমের মধ্যে প্রবেশ করিয়ে দেয়।
ঢাকার যাত্রী মেহেদী হাসান মুকুল বলেন, আমরা দুর থেকে আসছি। লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। দীর্ঘ সময় ধরে দেখছি ওই পুলিশ অনেক লোক লাইন ভঙ্গ করে স্থল বন্দরের মধ্যে প্রবেশ করাচ্ছে।
এদিকে স্হানীয় লোকজন জানান, প্রতি দিন শত শত দেশি বিদেশি পাসপোর্ট যাত্রীরা আসেন এ চেকপোস্টে। ভোর থেকে বিকেল পর্যন্ত অনেকে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকলেও চেকপোস্টে দায়িত্বরত এপিবিএন ও আনসার সদস্যরা দালালদের সাথে যোগাযোগ করে অর্থের বিনিময়ে অনেক ভারতগামী যাত্রীদের বেলাইনে আগে প্রবেশ করিয়ে দিচ্ছে। বিষয়টি বন্দর, কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ জানলেও এদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্হা গ্রহন করেনি। এর ফলে বিনাবাধায় পাসপোর্টযাত্রীদের কাছ থেকে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এই ২ সংস্থার সদস্যরা।
একজন আত্মীয়কে পৌঁছাতে আসা সাবেক সেনা সদস্য জসিম উদ্দিন বলেন, এপিবিএন এর ওই পুলিশ সদস্যর আচারণ অত্যান্ত খারাপ। সে যাত্রীদের সাথে খারাপ ব্যবহার করছে। আমি অনেক সময় এখানে দাঁড়িয়ে দেখছি উনি যাত্রীদের ইশারা ইঙ্গিতের মাধ্যমে ইমিগ্রেশনে প্রবেশ এর জন্য স্থলবন্দরের টার্মিনালে প্রবেশ করাচ্ছে। ওই সকল যাত্রী অনেক পিছনে ছিল। এ ভাবে লোক কেন প্রবেশ করাচ্ছেন তার কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে সে ক্ষিপ্ত হয়ে যায়।
এপিবিএন পুলিশ সদস্য এএসআই সায়েদুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার জন্য বলেন, এসব ক্যান্সার রোগী। এখানে ১৫ থেকে বিভিন্ন বয়সের প্রায় ৫০ জনের মত যাত্রীকে প্রবেশ করতে দেখা গেছে মাত্র ১০ মিনিট সময়ের মধ্যে। এতগুলো যাত্রী কি ভাবে ক্যান্সার রোগী হয় প্রশ্ন করলে তিনি কথা না বলে চলে যান।
এ বিষয়ে বেনাপোল বন্দর কর্তৃপক্ষের উপ পরিচালক আব্দুল জলিল বলেন, এ ব্যাপারে কোন অভিযোগ পায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্হা গ্রহণ করা হবে।