সেলিম রেজা সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছে অর্ধশতাধিকের বেশি ইটভাটা। কিন্তু বেশির ভাগ ইটভাটায় নেই কোন পরিবেশ ছাড়পত্র। নেই সরকারী অনুমতি সংক্রান্ত্র কোন প্রকারের কাগজপত্র। কেউ কেউ সরকারী সব রকম কাগজপত্র আছে বলে দাবী করলেও তা দেখাতে পারেননি। পরিবেশ সংক্রান্ত ছাড়পত্র ছাড়া ইটভাটাগুলো চলার কারণে পরিবেশ ছাড়পত্রে উল্লেখিত নিয়ম কানুনও তারা জানেন না। তাই পরিবেশ দূষিত হয় এমন সব কার্যকলাপের মাধ্যমেই চলছে ইটভাটাগুলো। রায়গঞ্জের ইটভাটাগুলোর মধ্যে উপজেলার পাঙ্গাসী ইউনিয়নের দেউলমুড়া গ্রামে অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠেছে সুরমা ইটভাটা।’
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সিরাজগঞ্জ-রায়গঞ্জ আঞ্চলিক সড়ক সংলগ্ন পাঙ্গাসী ইউনিয়নের দেউলমুড়া গ্রামে গড়ে উঠেছে সুরমা ইটভাটা। এই ইটভাটার চারিদিকে তিনফসলী জমির মধ্যে ধান,ভুট্টা ও আখের মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে সুরমা ইটভাটা। ইটভাটার দূষিত ধোঁয়া,কাচা ইটের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ফসলগুলো। এখানে ভাটা স্থাপনের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরে আবেদন করেছিলেন ভাটার মালিক আলহাজ্ব দানেজ আলী। কিন্তু পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্তাব্যক্তিরা তদন্তে এসে দেখতে পান ঘনবসতি এলাকা তথা আবেদনকৃত ইটভাটার উভয় পাশে তিন ফসলি জমি আছে বিধায় তারা পরিবেশের ছাড়পত্র দেননি। অথচ পরিবেশ অধিদপ্তরকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ভাটার মালিক আলহাজ্ব দানেজ আলী সরকার পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়াই তার ছেলে জাহিদ সরকারি কর্মকর্তা বলে তার নাম ব্যবহার করে গায়ের জোরে অবৈধভাবে সুরমা ইটভাটাটি পরিচালনা করছেন। এমনকি বড় শ্রমিকদের দিন হাজিরা বেশী বিধায় তিনি শিশু শ্রমিকদের দিয়ে ভাটার কাজ করছেন।’
(১১ মার্চ ২০২৩ইং) তারিখে সুরমা ইটভাটায় গিয়ে দেখো যায়,দেউলমুড়া গ্রামের মজিরর এর ছেলে শিশু শ্রমিক ফরজ (১২) ও রমজান (১০), আলম এর পুত্র তানজিদ (১০), মান্নান এর পুত্র খোকন (১২), ইসলামপুর গ্রামের রশিদ এর পুত্র সোহেল রানা (১১) সহ ১০-১২জন শিশু পড়াশোনা বাদ দিয়ে শিশু শ্রমিক হিসেবে কাঁচা ইট তৈরী ও শুকানোর কাজ করছে।’
স্থানীয় কৃষকরা অভিযোগ করে বলেন, সুরমা ইটভাটার কারণে আমরা ঠিকমতো ফসল ঘরে তুলতে পারি না। অন্যান্য জমির চেয়ে ভাটার নিকটতম জমির ফসল উৎপাদন কম হয়ে থাকে। ভাটার পুর্বদিকে বাড়িঘর হওয়ায় আমের মুকুল গুলো ঝড়ে পড়ে যাচ্ছে।,
তাছাড়া ইটভাটা গুলোতে মাটি আনা নেয়ার কাজে ব্যবহৃত মাটি ভর্তি ট্রাক ও মাহেন্দ্র ট্রাক গুলো যাতায়াত করার ক্ষেত্রে ফসলী জমি ও সরু সড়ক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে এবং ইটভাটা গুলো বিভিন্ন সময়ে প্রভাবশালীদর ছত্র ছায়ায় নীরিহ কৃষকদের ফসলি জমির মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেন।,এবিষয়ে সুরমা ইটভাটা স্বত্তাধিকারী আলহাজ্ব দানেজ উদ্দিন বলেন,দীর্ঘ ৫ বছর পূর্বে বগুড়ার পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিবেশ এর ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করেছিলাম। কিন্তু পরিবেশ অধিদপ্তর আমার ভাটার ছাড়পত্র দেয়নি। ব্যবসা করার স্বার্থে পরিবেশের ছাড়পত্র ছাড়াই ভাটা চালাচ্ছি।’
এবিষয়ে রায়গঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার তৃপ্তি কণা মন্ডল বলেন,সুরমা ইটভাটা পরিবেশ ছাড়পত্র ও শিশু শ্রমিক দিয়ে কাজ করানোর বিষয় আমার জানা ছিল না। তদন্তপূর্বক পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র বিহীন সুরমা ইটভাটা বন্ধের ব্যবস্থা গ্রহণ করব।