কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক : স্বল্পোন্নত দেশগুলোর বিষয়ে ৫ম জাতিসংঘ সম্মেলনে (এলডিসি ৫: সম্ভাবনা থেকে সমৃদ্ধি) যোগ দিতে আজ কাতারের রাজধানী দোহার উদ্দেশে রওনা হবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, সম্মেলনে বাংলাদেশ এলডিসি থেকে সহজ উত্তরণের জন্য বৈশ্বিক সমর্থন চাইবে বলে আশা করা হচ্ছে। ৫-৯ মার্চ দোহায় অনুষ্ঠিতব্য সম্মেলনে এই গ্রুপের সদস্য রাষ্ট্র হিসাবে এটি ঢাকার শেষ অংশগ্রহণ বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ বাংলাদেশ ২০২৬ সালের মধ্যে ফোরাম থেকে উত্তরণ লাভ করতে যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্মেলনে একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন। তিনি এলডিসি ৫ সম্মেলনে তার অংশগ্রহণ ছাড়াও কাতারের প্রতিপক্ষের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন।
৮ মার্চ পর্যন্ত কাতারে অবস্থানকালে কাতারের আমিরের সঙ্গে তার বৈঠকের কথা রয়েছে। জ্বালানি খাতে সহযোগিতাসহ দ্বিপাক্ষিক বিষয়গুলো আলোচনায় স্থান পাবে।
প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইট শনিবার (৪ মার্চ) সকাল ১১টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করবে, যা দোহায় স্থানীয় সময় দুপুর আড়াইটায় হামাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের কথা রয়েছে।
একই দিন (শনিবার বিকেলে) শেখ হাসিনা কাতার ন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে (কিউএনসিসি) জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস, ইউএনজিএ প্রেসিডেন্ট সাবা করোসি এবং ইউএনডিপি প্রশাসক আচিম স্টেইনারের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
৫ মার্চ, প্রধানমন্ত্রী কিউএনসিসি-তে বিশেষ অতিথি হিসেবে সম্মেলনের উদ্বোধনী পূর্ণাঙ্গ সভায় বক্তৃতা করবেন।
পরে, তিনি কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি, রুয়ান্ডার প্রেসিডেন্ট পল কাগামে, বাণিজ্য ও উন্নয়ন বিষয়ক জাতিসংঘ সম্মেলনের সেক্রেটারি জেনারেল রেবেকা গ্রিনস্প্যান এবং ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) মহাসচিব ডোরেন বোগদান-মার্টিনের সঙ্গে আলাদা বৈঠক করবেন।
এছাড়াও, তিনি কিউএনসিসি-তে বিনিয়োগ ও অংশীদারিত্বের উপর এলডিসি ৫ সম্মেলনে উচ্চ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের মধ্যাহ্নভোজে যোগ দিবেন। যৌথভাবে বাংলাদেশ, লাওস এবং নেপাল আয়োজিত “২০২১ সালের উত্তরণের জন্য টেকসই ও সহজ রূপান্তর” শীর্ষক একটি অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা দেয়ার কথা রয়েছে।
৬ মার্চ, শেখ হাসিনা সেন্ট রেজিস দোহায় “দ্য রাইজ অব বেঙ্গল টাইগার: পটেনশিয়াল অফ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ইন বাংলাদেশ” শীর্ষক একটি ব্যবসায়িক শীর্ষ সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করবেন। তিনি মালাবির প্রেসিডেন্ট ড. ল্যাজারাস ম্যাককার্থি চাকওয়েরার সঙ্গে বৈঠক করবেন।
তিনি কিউএনসিসি-তে “স্মার্ট ও উদ্ভাবনী সমাজের জন্য এলডিসিতে গবেষণা ও উন্নয়নে বিনিয়োগ” শীর্ষক একটি পার্শ্ব ইভেন্টে অংশগ্রহণ করবেন। এছাড়াও, তিনি আবাসিক স্থানে আঞ্চলিক দূত সম্মেলনে যোগ দেবেন।
প্রধানমন্ত্রী ৭ মার্চ বিশেষ অতিথি হিসেবে “আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও আঞ্চলিক সমন্বয়ে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি” শীর্ষক একটি উচ্চ-পর্যায়ের সংলাপে যোগ দিবেন, ডেনমার্কের উন্নয়ন সহযোগিতা বিষয়ক মন্ত্রী ড্যান জর্জেনসেনের সঙ্গে বৈঠক করবেন, এবং “সহজ ও টেকসই উত্তরণের জন্য বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব: স্মার্ট বাংলাদেশের লক্ষ্যে অগ্রসর হওয়া” শীর্ষক অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। পরে, তিনি কাতারে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশীদের আয়োজিত একটি নাগরিক সংবর্ধনায় যোগদান করবেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৮ মার্চ (বুধবার) সকালে ঢাকার উদ্দেশে দোহা ত্যাগ করবেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাবলিক ডিপ্লোম্যাসি উইংয়ের মহাপরিচালক সেহেলি সাবরিন বৃহস্পতিবার এক ব্রিফিংয়ে বলেছেন, বিশ্ব মন্দা ও কোভিড-১৯ প্রভাবের পরিপ্রেক্ষিতে এখন স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশের জন্য প্রযোজ্য বাণিজ্য সুবিধাগুলো ২০২৬ সালের পরেও অব্যাহত রাখতে শেখ হাসিনা উন্নত দেশগুলোকে অনুরোধ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
মুখপাত্র বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করবেন যে, এলডিসি ও উন্নয়নশীল দেশগুলো মহামারীর কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হয়েছে, অন্যদিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ উন্নত দেশগুলোর তুলনায় তাদের অর্থনীতিকে বেশি বিপর্যস্ত করেছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ব্যাখ্যা করবেন যে, কীভাবে মহামারী এবং যুদ্ধ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে মন্থর এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে দরিদ্র ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। সূত্র-বাসস।