মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায় নিরাপদ ও সম্মানজনক প্রত্যাবাসনের পরিবেশ যাচাই করার জন্য মিয়ানমার ও বাংলাদেশের সাথে চুক্তি করছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর। গত শুক্রবার জেনেভায় বাংলাদেশের সাথে এই চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান হয়।
বাংলাদেশের পক্ষে পররাষ্ট্র সচিব মো: শহীদুল হক এবং ইউএনএইচসিআরের পক্ষে সংস্থার প্রধান ফিলিপ্প গ্রাণ্ডি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। বাংলাদেশ শুরু থেকেই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় জাতিসংঘকে সংযুক্ত করার কথা বলে আসছিল কিন্তু মিয়ানমার বরাবরই দ্বিপাক্ষিকভাবে বিষয়টার সমাধান করতে চেয়েছে।
কিন্তু এখন মিয়ানমারই ইউএনএইচসিআররের যুক্ত করতে প্রস্তাব দিয়েছে। এর কারণ হচ্ছে, আগামী ২৯ ও ৩০ এপ্রিল নিরাপত্তা পরিষদের প্রতিনিধি দল ঢাকায় আসছে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অবস্থা সরেজমিন দেখার জন্য। পাশাপাশি হেগস্থ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মানবতা বিরোধী অপরাধে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে চার্জগঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
যে কোন ধরনের আন্তর্জাতিক শাস্তি এড়াতে মিয়ানমার প্রত্যাবাসন নাটক জোরদার করতে চাচ্ছে। কিন্তু তাদের প্রকৃত উদ্দেশ্য মোটেই পরিষ্কার নয়। যাতে আন্তর্জাতিক সাম্প্রদায় মিয়ানমারের উপর চাপ প্রয়োগ অব্যাহত রাখে সে জন্য বাংলাদেশের কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত রাখতে হবে।
মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের কথা বলে শুধুই সময় ক্ষেপণ করেই যাচ্ছে। ১৯৯২-৯৩ সালেও তারা একই রকম নাটক করেছিল এবং শেষ পর্যন্ত ৫ লাখ রোহিঙ্গা থাকা অবস্থায় প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া বন্ধ করে দিয়েছিল। এবারও তারা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরুই করছে না।
এবারও তাদের দুরভিসন্ধিমূলক তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কয়েক দফা প্রত্যাবাসন শুরুর তারিখ দিয়ে তারা তা শুরু করেনি। এখন ইউএনএইচসিআর যুক্ত হওয়াতে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া আর এক দফা পেছাল।
রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাগরিক, তাদের সেদেশে ফেরত যেতেই হবে। ইউএনএইচসিআর যুক্ত হওয়াতে একটু সময় ক্ষেপণ হলেও ভাল হলো। এই প্রক্রিয়ায় জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীকে যুক্ত করা হলে আরো ভাল হয়। রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতন করে মিয়ানমার রাষ্ট্র হিসেবে মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে, তাদের শাস্তি পেতেই হবে। তারা রোহিঙ্গাদের ফেরত নিক আর নাই নিক। জাতিসংঘকে কে এই উদ্যোগ নিতে হবে।