কর্পোরেট ডেস্ক: প্রকাশনা সংস্থা ‘ঐতিহ্য’ অমর একুশে বইমেলা ২০২৪ উপলক্ষ্যে প্রকাশ করতে যাচ্ছে ৬টি নতুন রচনাবলিসহ ৪৮টি বিষয়ের উপর ২৩০+ বই। সে ধারাবাহিকতায় আজ ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ প্রকাশিত হলো—
*তত্ত্ববিশ্ব
*প্লোটোর কাব্যভাবনা
-বদিউর রহমান
প্রচ্ছদ: ধ্রুব এষ
মূল্য: ২২০ টাকা
বিশ্বখ্যাত দার্শনিক প্লেটোর জন্ম এথেন্সে। প্লেটোর জন্মের সঠিক তারিখ জানা যায়নি- তবে তিনি যে খ্রিষ্টপূর্ব ৪২৮ থেকে ৩৪৮ পর্যন্ত প্রায় আশি বছর বেঁচে ছিলেন তা প্রায় সর্বজনবিদিত। প্লেটোর শিক্ষা লাভ সক্রেটিসের কাছে। প্লেটো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত না হয়ে দর্শন চর্চায় আত্মনিয়োগ করেন। তাঁর খ্যাতিমান গ্রন্থ ‘রিপাবলিক’। ‘রিপাবলিক’ মূলত রাজনীতি বিষয়ক গ্রন্থ। এর বাইরে ‘রিপাবলিক’-এ উঠে এসেছে দুনিয়ার হাজারো বিষয়। শিল্প-সাহিত্য, কাব্য-কলা কোনো কিছুই বাদ যায়নি তাঁর ভাবনা থেকে।
এরিস্টটলকে সাহিত্যতত্ত্বের গুরু বলা হলে, প্লেটোকে বলতে হয় গুরুর গুরু। অথচ প্লেটোর কাব্যভাবনা বা সাহিত্যতত্ত্ব নিয়ে বাংলা ভাষায় এযাবৎ তেমন কোনো কাজ হয়নি। ফলে প্লেটোর কাব্যভাবনা বা সাহিত্যতত্ত্বে আগ্রহী পাঠক বিষয়টি থেকে দূরেই থেকে গেছেন। অন্যদিকে কথিত কাব্য বা কবি বিরোধী প্লেটো যে কবিতা লিখেছেন- এ তথ্য আমাদের অজানাই থেকে গেছে দীর্ঘকাল। প্লেটোর বিশ্বখ্যাত পুস্তক ‘রিপাবলিক’। ‘রিপাবলিক’ গ্রন্থে উচ্চারিত কাব্যভাবনার বাংলা ভাষান্তর বর্তমান গ্রন্থ; এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে প্লেটো রচিত এগারোটি কবিতার বাংলা রূপান্তর।
এই গ্রন্থ পাঠকের কাছে এক নতুন প্লেটোকে উন্মোচন করবে।
*কবিতা
*রাংতায় মোড়া উৎসব
-সৈকত ঘোষ
প্রচ্ছদ: ধ্রুব এষ
মূল্য: ১৬০ টাকা
একজন মেরিনার কি কোনো কবির স্বপ্নে নৌ-অভিযানের পসরা বিছিয়ে দিতে পারেন, যা একটা উপমহাদেশের মানচিত্র সম্পূর্ণ পাল্টে দিতে পারে! ট্রান্সফেমোরিয়ল প্রস্থেসিস-এর ঐন্দ্রজালিক পরিক্রমায় স্বপ্নানুলালিত জীবনের যাবতীয় ফাইভস্টার পার্সে নিয়ে কবিকে বোধহয় সেকারণেই আল্টিমেটলি পৌঁছে যেতে হয় অনন্ত কোনো স্টেশনের দিকশূন্যতায়। পার্থিবের গায়ে লেগে থাকা প্রতিটি আঁচড় সেখান থেকে রচনা করে চেনা ভূগোল আর অচেনা ইতিহাস। এই অনির্বচনীয়কে তখন সেলিব্রেট না করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে না। কভারলেস এই আশ্রয়টুকুই কবির কাছে আসলে নিখুত শূন্যের কৌতূহল। চোখভর্তি অবাক নিয়ে দেখে চলেছেন ক্রমাগত আপডেটেড হয়ে চলা সেই ভার্সানগুলো। আর ‘অন্ধকারের সংজ্ঞা বদলে দিচ্ছে’ অগুনিত আলোপোকা- অদৃশ্যের পরমাণু থেকে দৃশ্যানুর দৃষ্টান্তমূলক উল্লম্ফনে।
হাছন রাজার গানে শূন্যে ঘর বাঁধার মতোই সৈকতের অনুভবে তাই ধরা পড়ে অনস্তিত্বের নিগড়ে আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধা মানুষদের তবু being এর মোড়কে আদতে nothingness-কেই আঁকড়ে থাকার এক রিডিকিউলাস প্রচেষ্টা। প্রেম, দ্রোহ আর বাস্তবতার অনুচ্চ পরিধি ছাপিয়ে রাংতায় মোড়া জীবনের মহোৎসব তাই হয়ে উঠতে পেরেছে এক পরিপূর্ণ আত্মানুসন্ধান। ‘শূন্যের পংক্তিতে শূন্য/ তার ভিতর শূন্যের ডালপালা…’ আসলে ঈশপোনিষদের … পূর্ণমদ: পূর্ণমদম পূর্ণাৎ পূর্ণমুদচ্যতে।/পূর্ণমাদায় পূর্ণমেদাবশিষ্যতে।’-রই প্রতিস্বর।
*রাজনীতি
*নব্বুই-এর অভ্যুত্থান
সম্পাদনা: সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী
প্রচ্ছদ: ধ্রুব এষ
মূল্য: ৪০০ টাকা
নব্বই-এর অভ্যুত্থানের মূল আওয়াজটা ছিল ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক’। আওয়াজটি মূর্ত করে তুলেছিলেন তরুণ নূর হোসেন। অভ্যুত্থানের ভেতর দিয়ে সেদিনকার স্বৈরশাসকের পতন ঘটেছে, কিন্তু গণতন্ত্র যে মুক্তি পেয়েছে এমনটা দাবী করবার উপায় নেই। এমনকি স্বৈরশাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের পতনও স্থায়ী হয় নি; রাজনীতিতে তিনি ফিরে এসেছিলেন, এবং তাঁর প্রতিষ্ঠিত জাতীয় পার্টি এখনও সক্রিয় রয়েছে। এর কারণ হলো রাষ্ট্র ও সমাজে কোনো বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটে নি। জনগণের জয় হয়েছিল, কিন্তু সেই জয় স্থায়ী হয় নি। প্রমাণিত হয়েছে যে বুর্জোয়াদের শাসন জনগণের মুক্তি তো আনবেই না, বরঞ্চ বিভিন্ন নামে স্বৈরতন্ত্রই কায়েম রাখবে।
তবে নব্বই হারিয়ে যায় নি। ওই অভ্যুত্থান আমাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অংশ হয়ে আছে; এবং সে বলছে যে ঐতিহ্যের সম্প্রসারণ সম্ভব। কিন্তু তার জন্য জনগণের পক্ষের রাজনৈতিক শক্তির বিকাশ প্রয়োজন। আর সে জন্য চাই সমাজ- পরিবর্তনকামী রাজনৈতিক সংগঠন।
*প্রিয় ১৫ গল্প
*প্রিয় ১৫ গল্প : মঈনুল আহসান সাবের
*মঈনুল আহসান সাবের
প্রচ্ছদ: ধ্রুব এষ
মূল্য: ৬৫০
যত না নগর ও নাগরিক জীবনযাপন, তারও বেশি নগরমননের দিকে নিবদ্ধ মঈনুল আহসান সাবেরের চোখ। এই মধ্যবিত্ত কোনও বিপ্লবের জন্মযন্ত্রণা থেকে বেড়ে ওঠেনি; এ মধ্যবিত্ত সমাজ গড়ে উঠেছে আটপৌরে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার দৌলতে, গ্রাম থেকে অনোন্যপায় হয়ে নগরে এসে। সাবেরের চোখ এই নাগরিক মধ্যবিত্তকে নির্মোহ অবলোকনের চোখ।
এমন নয় সাবেরের গ্রাম অপরিচিত; কিন্তু তিনি সময় থেকে এগিয়ে থাকেন, তার অবলোকনের চোখ সমকালীন অন্যদের অনেক আগেই বুঝে নেয়, গ্রাম আর গ্রাম থাকতে পারছে না, থাকতে পারবে না। যে-নগর আমাদের আগামীকালকে গ্রাস করবে সেখানে মধ্যবিত্তের দোলাচলই হবে দ্রষ্টব্য। সঙ্গত কারণেই সাবেরের কথাসাহিত্যের ভরকেন্দ্র ব্যক্তি, মধ্যবিত্ত; তাঁর গল্পের নগরমনন, মধ্যবিত্তের নগরমনন। নগর নিয়ে আমাদের প্রায় সব কথাসাহিত্যই নস্টালজিয়ায় আক্রান্ত। আমাদের গল্পের রাষ্ট্রে সাবেরের কৃতিত্ব এখানেই যে, নগর ও নগরজীবন শ্রেণিনির্বিশেষে আমাদের সকলের জন্যে নতুন যে-নৈতিকতা ও মনন তৈরি করছে সেসব তিনি তার সৃজনশীলতা দিয়ে তুলে এনেছেন। মধ্যবিত্তকে তিনি এই সৃজনশীলতার কেন্দ্রবিন্দুতে রেখেছেন, কেননা শেষ পর্যন্ত মধ্যবিত্তই বিদ্যমান নগরমননের প্রাণ।
সাবেরের গল্প অনালোচিত, কেননা তেমন কোনও বৈদগ্ধ আমাদের নেই বললেই চলে, যা দিয়ে আমরা ধারণ করব নগরমননকে, কেননা আমাদের মনন তত নাগরিক নয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমাদের একদিন সাবেরের এই নগরমনন পরিবৃত গল্পগুলির কাছেই ফিরতে হবে- কেননা এই নগরমননেই রয়েছে ব্যক্তিকে, স্বাধীনতাকে অনুভব করার মধ্যে দিয়ে ব্যক্তি ও সমাজের দর্শনকে অনুভব করার এক ধ্রুপদ কথন।
ইমতিয়ার শামীম
*প্রবন্ধ ও সংকলন
*সাহিত্যের উদ্দেশ্য
-সফিকুন্নবী সামাদী
প্রচ্ছদ: ধ্রুব এষ
মূল্য: ৩৬০ টাকা
মুনশী প্রেমচন্দের (১৮৮০-১৯৩৬) নাম শোনেননি কিংবা তাঁর রচনার সঙ্গে পরিচিত নন, এমন শিক্ষিত মানুষ গোটা ভারতবর্ষে বোধ করি বিরল। হিন্দি কথাসাহিত্যের ভিত রচনা করেন তিনি। ১৪টি উপন্যাস এবং শ তিনেক গল্প নিয়ে তাঁর কথাসাহিত্যের ভান্ডার ঋদ্ধ। ভারতবর্ষের রাজনীতি-অর্থনীতি-সমাজ বিষয়ে তাঁর দৃষ্টি ছিল সচেতন। প্রেমচন্দ তাঁর রচনার মাধ্যমে ভারতবর্ষের মানুষের সেবা তথা জাতির সেবা করতে চেয়েছিলেন এবং এই কর্মের মাধ্যমেই জাতীয় আন্দোলন এবং স্বাধীনতাসংগ্রামে অংশগ্রহণ করছেন। প্রবন্ধ, নিবন্ধ এবং সম্পাদকীয় লিখেছেন নিজের সম্পাদিত এবং অন্যান্য পত্রপত্রিকায়। তাঁর প্রবন্ধের নির্বাচিত সংকলন বর্তমান গ্রন্থ ‘সাহিত্যের উদ্দেশ্য’। এই প্রবন্ধগুলোর বিষয় ভাষা ও সাহিত্য। এই গ্রন্থের মাধ্যমে সাহিত্যপ্রেমী এবং ভারত-হিতৈষী মুনশী প্রেমচন্দকে চিনে নিতে পারে পাঠক সহজেই।
*আবৃত্তি
*স্বপ্নের ধ্বনিরা
-জীবিনানন্দ দাশ
সংকলন- মাহমুদুল হাকিম তানভীর
প্রচ্ছদ: ধ্রুব এষ
মূল্য: ৪৫০ টাকা
বাংলা কবিতায় জীবনানন্দ দাশ মানেই একটি স্বতন্ত্র ভুবন। যে ভুবনের দেখা যারা পেয়েছে, কেবল তারাই বোঝে এই পৃথিবীর মগ্নতার ভাষা। যেন কোনো মায়াহরিণ, ছুটে চলে হৃদয়ের গভীর অরণ্য দিয়ে; যে পৃথিবী সবদিক থেকেই পরিপূর্ণ। ভালোবাসা, বেদনাসক্তি, আত্মদর্শন, জীবনের গভীর থেকে গভীরতম উপলব্ধি কি নেই জীবনানন্দ দাশের কবিতায়! জীবনকে নিংড়ে দেখেছেন জীবনের জটিল পথরেখাগুলো। শিক্ষিত পরিবারে বেড়ে উঠেছেন কবি জীবনানন্দ দাশ। মা কুসুমকুমারী দাশ স্বয়ং একজন কবি।
ইংরেজি সাহিত্যের ছাত্র থেকে শিক্ষক হয়ে উঠেছেন। অথচ বাংলা সাহিত্যের ভুবনে জীবনানন্দ দাশ চিরউজ্জ্বল কীর্তি রেখে গিয়েছেন। কবিতা, উপন্যাস, প্রবন্ধ, ছোটগল্প, ডায়েরিতে নিজেকেই বারবার দেখে নিয়েছেন আপন বৈভবে। মুখ লুকানো এই নিভৃতচারী কবির কাছে লেখার টেবিল, খাতার পাতাই যেন আয়নার মতো ছিল। লেখাগুলো নিয়ে বারবার নিরীক্ষা করেছেন, লুকিয়ে রেখেছেন ট্রাঙ্কবন্দি করে। কবিতা প্রকাশে ছিলেন অসম্ভব বিশ্লেষনী চিন্তাধারার।
* গল্প
* প্রিয় প্রেম,প্রিয় পাপ
-মুম রহমান
প্রচ্ছদ: ধ্রুব এষ
মূল্য: ১৮০ টাকা
মুম রহমানের বেশ কিছু গল্প নিয়ে লেখা বই ‘প্রিয় পাপ, প্রিয় পাপ’ । যেখানে ‘প্রিয় পাপ’, ‘তিলোত্তমা মুখার্জি’,‘অহেতুক পয়লা ফাল্গুন’, ‘সত্যি নাটক’ এবং ‘প্রিয় প্রেম’ মতো চমৎকার কিছু গল্প।
*বঙ্গবন্ধু
* বঙ্গবন্ধু প্রসঙ্গে –অন্নদাশাঙ্কর রায়
সালাম আজাদ
প্রচ্ছদ: ধ্রুব এষ
মূল্য: ৪৭০ টাকা
বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পরে কাঁদতে কাঁদতে অন্নদা শঙ্কর রায় ‘কাঁদো প্রিয় দেশ’ শীর্ষক যে লেখাটি লিখেছিলেন তা ভারতের কোন পত্রিকাই তখন ছাপতে রাজি হয়নি। লেখাটি শেষ পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায়ের মাধ্যমে ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধী পর্যন্ত পৌঁছে। লেখাটির ইংরেজি অনুবাদ পাঠ করে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী অন্নদাশঙ্কর রায়কে যে চিঠি লিখেছিলেন তা পাঠকদের জন্য বর্তমান গ্রন্থে সংকলিত হয়েছে। তাছাড়া এই সময় অন্নদাশঙ্কর রায়ের লেখা কবিতাটি ‘যদকাল রবে পদ্মা মেঘনা…’ বছর ধরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অন্যতম জনপ্রিয় স্লোগান। যা এখনো সমানভাবে জনপ্রিয়। শুধু তাই নয় ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু জাদুঘরের সম্মুখে একমাত্র অন্নদাশঙ্কর রায়ের সেই কবিতাটিই পাথরে খোদাই করে রাখা আছে। এর অর্থ বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পরে তাঁকে নিয়ে অন্নদাশঙ্কর রায়ের চেয়ে আবেগময় ও গুরুত্বপূর্ণ কবিতা বাংলা সাহিত্যে এখনো পর্যন্ত আর লেখা হয়নি।
এই গ্রন্থে লেখক সালাম আজাদ নিজের কমিটমেন্ট থেকে এবং আন্নদাশঙ্কর রায়ের সঙ্গে লেখকের ব্যক্তিগত ও ঘণিষ্ট সম্পর্কের সূত্রে বিভিন্ন সময় তাঁর সঙ্গে আলাপচারিতায় নানা প্রবন্ধ, নিবন্ধ ও সাক্ষাৎকার বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিক সমূহে লিখেছিলেন, প্রকাশ করেছিলেন। সেসব লেখার সংকলনই এই গ্রন্থ। এ গ্রন্থের মধ্যে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে অনেক অজানা তথ্য, একই সঙ্গে অন্নদাশঙ্কর রায়ের মূল্যায়ন পাঠক অবগত হবেন বলে প্রত্যাশা করি, বইয়ের বিবিধ অধ্যায়ে যে সব লেখা রয়েছে- তা কিছুটা ভিন্ন হলেও আগ্রহী পাটকদের জন্য তা যথাযথ বলেই বিশ্বাস করি।
*উপন্যাস
*লবঙ্গলতার সই
-মঈন শেখ
মূল্য: ৩৭০ টাকা
‘কুসুম কথা’ উপন্যাসের মাধ্যমে মঈন শেখ দুই বাংলাতে বিশেষ খ্যাতি পান এবং ‘লবঙ্গলতার সই’ সেই ধারাবাহিকতার চতুর্থ উপন্যাস। উল্লেখ্য যে এটিও প্রকাশিত হয় ভারতের খ্যাতিমান পত্রিকা ‘কৃত্তিবাস’-এর ২০২৩ সালের শারদীয় সংখ্যায়। প্রশংসিত হয় দুই বাংলায়।
মনোজগতের এক বিস্তর আবাস ‘লবঙ্গলতার সই’। মানব জীবনের জটিল অধ্যায়ও বলা যেতে পারে। লবঙ্গলতা ছেঁড়া টাকার বেপারি অধীরের বউ। পান বেপারি নেকবরের বউ শাকিলা। এই দুই পরিবারের মধ্যে কাকতালীয়ভাবে যোগাযোগ ঘটে। লবঙ্গলতা ভাড়া থাকে শাকিলার বড় চাচার বাড়িতে। সেই সূত্রেই তাদের যাওয়া আসা শুরু হয়। রসে টইটুম্বুর লবঙ্গলতা। সারা পাড়া মাতিয়ে রাখে। দাপায় মানুষের উঠোনে, বারান্দায় আর মনের মাচায়। অন্যদিকে নেকবরও রসে কম নয়। ভাব হয় দু’জনে। প্রথমে শাকিলা সহজভাবে নিলেও পরে নিতে পারে না। সন্দেহের ঘুণপোকা বাসা বাঁধে মনে, মগজে। তার ধারণা নেকবরের সাথে লবঙ্গলতার শারীরিক সম্পর্ক বেশ তুঙ্গে। তাই নেকবর শাকিলাকে অবহেলা করছে। লবঙ্গলতা শাকিলাকে সই ডাকে। শাকিলা তা সহ্য করতে পরে না। নানা ঘাত প্রতিঘাতের মধ্যে শাকিলা এক সময় মানসিক রুগিতে পরিণত হয়। অনেকটা ওথেলো সিন্ড্রমের মতো। কিন্তু শাকিলা জানে না, লবঙ্গলতার শরীর ও মনের এক অজানা রহস্যকে। এই অজানা অধ্যায়ই চরম উৎকর্ষতা দেয় উপন্যাসের নানা নাটকীয়তায়। পাঠককে করে তোলে জিজ্ঞাসু। আসলে মনোবিকলনের এক চরম পর্যায় হলো ‘লবঙ্গলতার সই’। বাকি জিজ্ঞাসার উত্তরগুলো তোলা থাক পাঠকের জন্য।
*অনুবাদ
*দ্য ফরটি রুলস অব লাভ
-এলিফ শাফাক
অনুবাদ: সাজিদ উল হক আবির
মূল্য:
এলিফ শাফাকের ‘দ্য ফরটি রুলস অব লাভে’র বঙ্গানুবাদ ও কিছু প্রাসঙ্গিক ভাবনা
জন্মসূত্রে তুর্কি ও বর্তমানে তুর্কি-ব্রিটিশ প্রবাসী ঔপন্যাসিক এলিফ শাফাকের ভক্ত মাত্রই জানেন, জনপ্রিয় যেকোনো উপন্যাসের মতো, এলিফ শাফাকের ‘দ্য ফরটি রুলস অব লাভ’ প্রকাশের পরপরই অনূদিত হয়ে গেছে আমাদের মাতৃভাষায়। তবুও কেন আরও একবার এই বই অনুবাদের প্রয়াস হাতে নেওয়া? এই প্রশ্নের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কিছু চিন্তা এবং অনুবাদের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেওয়া অনুবাদক হিসেবে জরুরি মনে করছি।
পুরো উপন্যাসে ছোট ছোট যে সমস্ত কবিতার ব্যবহার আছে, আমি তারে শাব্দিক অনুবা করিনি, ভাবানুবাদ করেছি। শাব্দিক অনুবাদ অনেক ক্ষেত্রেই অনুবারে সৌন্দর্যকে হত্যা করে। এত ব্যাখ্যার বলে যদি এক কথায় এটা এলিফ শাফাকের উপন্যাসের ভাবানুবাদ বলতাম, তাহলেও হতো। কিন্তু আমি অনুবাদকের জায়গা থেকে বিষয়টি বিস্তারিত ব্যাখ্যা করে বলার প্রয়োজন বোধ করেছি। কারণ ভাবানুবাদ বলতে আমারে বেশ যা প্রচলিত, এটা সে অর্ ভাবানুবাদ নয়। এলিফ শাফাক যা বলেননি, বা বোঝাননি এমন কিছু আমি সংযোজন করিনি এই অনুবাদ। একই সঙ্গে তিনি যা বলতে চেয়েছেন, তা বা দিইনি কোথাও। শাফাকের উদ্দেশ্য ছিল শামস-রুমি সম্পর্কের মর্মমূলকে স্পর্শ করা। তাতে তিনি সফল। অনুবাদক হিসেবে আমার উদ্দেশ্য ছিল এলিফ শাফাকের এই বইটির রুহকে ধারণ করা। আমি তাতে কতটুকু সফল হতে পেরেছি, তা আমার প্রিয় পাঠকরাই বিচার করবেন। এবং সহৃদয় পাঠকের পাঠে যদি কোনো ভুলত্রæটি ধরা পরে, আমার গোচরে আনলে তা পরবর্তী সংস্করণে সংশোধন করে নেবো বলে আশা রাখি।