মোহাম্মদ রিদুয়ান হাফিজ, কক্সবাজার প্রতিনিধি: চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলার ২৫টি ইউনিয়ন এখনও অন্ধকারে আছে। মঙ্গলবার রাতে ঘূর্ণিঝড় হামুনের তাণ্ডবে বিদ্যুতের খুঁটি ও সংযোগ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এ পরিস্থির সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া ফাইতং ব্রিজ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ওই সড়কে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে যোগাযোগব্যবস্থা।
ঝড়ের তাণ্ডবে চকরিয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ৮২টি খুঁটি ভেঙে যায়। যে কারণে চকরিয়া ও পেকুয়ার ২৫টি ইউনিয়নে লোকজন তিন দিন ধরে অন্ধকারে রয়েছেন। পিডিবি চকরিয়া পৌর সদরে বুধবার বিদ্যুৎ সংযোগ চালু করেছে। জানা গেছে, হামুনের তাণ্ডব শুরু হওয়ার আগেই ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কায় পল্লী বিদ্যুৎ ও পিডিবি বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেয়। ঝড়ে বেশির ভাগ এলাকায় গাছচাপা ও ঝোড়ো বাতাসে বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে যায়। পিডিবি জানায়, ক্ষয়ক্ষতি অপেক্ষাকৃত কম হওয়ায় পৌর এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বুধবার রাতে চালু করা গেছে। তবে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ তা এখনও পারেনি।
পল্লী বিদ্যুতের চকরিয়া অফিসের ডিজিএম সাদিকুল ইসলাম জানান, ৯৩ জন শ্রমিক খুঁটি পুনঃস্থাপনের কাজ করছেন। বৃহস্পতিবার আরও ৩০ জন শ্রমিক যুক্ত করা হয়েছেন।
কক্সবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পেকুয়া সাব-জোনাল অফিস সূত্রে জানা যায়, পেকুয়া উপজেলার ৫৭টি বৈদ্যুতিক খুঁটি ঝড়ে ভেঙে গেছে। হেলে পড়েছে ৭০টি। বিদ্যুতের সমস্যা ছাড়াও ঝড়ে আক্রান্ত এলাকায় মোবাইল নেটওয়ার্ক মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
পেকুয়া সাব-জোনাল অফিসের এজিএম দীপন চৌধুরী বলেন, হামুন ঝড়ে পেকুয়ার বিদ্যুৎ ব্যবস্থার যে অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তা সংস্কারে কাজ চলছে। বৈদ্যুতিক সংযোগ চালু করতে আরও ২-৩ দিন সময় লাগতে পারে। এদিকে অতি বর্ষণে ফাইতং খালের বন্যার পানির স্রোতে ধসে যাওয়া ফাইতং ব্রিজের বিকল্প সড়ক ব্যবস্থা না থাকায় ওই সড়কে যোগাযোগব্যবস্থা দু’দিন ধরে বন্ধ রয়েছে।
ফলে সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়নের মানিকপুরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এতে করে চরম দুর্ভোগে পড়েছে ওই এলাকার প্রায় ১০ হাজার মানুষ।
হামুনের আঘাতে লন্ডভন্ড হয়েছে পেকুয়া উপজেলার একাধিক গ্রাম। ঝড়ে প্রায় দুই হাজার বাড়িঘর ভেঙে গেছে। ভেঙে পড়েছে প্রায় ৫ হাজার গাছ। দেখা দিয়েছে তীব্র বিশুদ্ধ পানির সংকট। তবে এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। উজানটিয়া ও মগনামা ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, উজানটিয়ার খাতুনে জান্নাত ইবতেদায়ি মাদ্রাসার তিনটি ভবনের টিনের চালা সম্পূর্ণ উড়ে গেছে। মগনামা ইউপির চেয়ারম্যান ইউনুছ চৌধুরী জানান, মগনামার প্রায় পাঁচ শতাধিক বাড়িঘর ভেঙে গেছে। এর মধ্যে ৪২টি বাড়ি সম্পূর্ণ উড়ে গেছে।