নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে ও ডেইরী উন্নয়ন প্রকল্পের (এলডিডিপি)উদ্যোগে মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলায় সুলভ মূল্যে ডিম বিক্রি কার্যক্রম শুধু কাগজ-কলমেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। এ নিয়ে ভোক্তা পর্যায়ে দেখা দিয়েছে চরম অসন্তোষ।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, দেশব্যাপী খামারি পর্যায় থেকে ভোক্তা পর্যন্ত ডিমের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় জনসাধারণের মধ্যে অস্বস্তি বিরাজ করে। ডিমের সরবরাহ বৃদ্ধি ও মূল্য স্থিতিশীল রাখতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সুলভ মূল্যে প্রকল্পের আওতায় ডিমের বাজার সৃষ্টি কার্যক্রম শুরু করার নির্দেশনা দেয়া হয়। এলডিডিপি সমিতির সদস্যরা সরাসরি খামার থেকে মাঝখানের পাইকার ও খুচরা বাইপাস করে সরাসরি ভোক্তাদের কাছে কমমূল্যে ডিম পৌছে দিতে পারে। সেই হিসেবে সিংগাইর প্রাণিসম্পদ হাসপাতালে গত ২৪ নভেম্বর থেকে শুরু হলে এ কার্যক্রম শুধু কাগজ- কলমেই রয়েছে সীমাবদ্ধ। ফলে, ভোক্তা সাধারণের মধ্যে বিরাজ করছে চরম অসন্তোষ।এদিকে,গত ২৭ ও ২৮ নভেম্বর সকাল এগারোটা থেকে শুধুমাত্র ১ ঘন্টার জন্য স্টাফ (এলএফএ) প্রণব কুমার সিংহকে দেখা গেছে পিজি’র নাম ছাড়া ব্যানার টাঙিয়ে মাত্র ৫ খাচি ডিম নিয়ে অফিসের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে।
এ সময় তাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, খামারে ডিম পাওয়া যায় না তাই বাজার থেকে ক্রয় করে এনে বিক্রি করছি। সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক এ প্রকল্পে হাঁস-মুরগি উৎপাদনকারী দলের( পিজি) খামারীরা শতভাগ নারী উদ্যোক্তার মাধ্যমে তাদের উৎপাদিত এবং সংগৃহীত ডিম বিপণনের কাজ বাস্তবায়ন করবেন। ভোক্তাদের চাহিদা মেটাতে তারা সূলভ মূল্যে নির্ভরযোগ্য উৎসের মাধ্যমে সরবরাহ করবেন। পিজি গ্রুপের উৎপাদিত নিরাপদ এবং গুণমান সম্পন্ন ডিম যৌথ উদ্যোগে বাজারজাত করবেন। ডিম সংগ্রহ ও সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য সাত সদস্য বিশিষ্ট একটি ব্যবস্থাপনা কমিটি থাকবে। ওই কমিটি নির্ধারিত মুরগির খামার থেকে পাইকারি দামে প্রতিদিন ডিম সংগ্রহ করবেন। কমিটি প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে পরামর্শ করে নির্ধারিত স্থানে সুলভ মূল্যে টোল ফ্রি ডিম বিক্রির ব্যবস্থা করবেন।
অপরদিকে, এ কার্যক্রম তদারকির জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে আহ্বায়ক ও প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাকে সদস্য সচিব করে ৭ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি থাকবে। কমিটি পিজি কর্তৃক পরিচালিত ডিম বিক্রির কেন্দ্র পরিদর্শন ও বিপনন ব্যবস্থাপনা পর্যবেক্ষণ করে ক্রেতার মতামত সংগ্রহ করার কথা।
এ প্রসঙ্গে ইউএনও কামরুল হাসান সোহাগ বলেন, বিষয়টি অফিসিয়ালি আমাকে অবগত করা হয়নি,আমার কাছে কেউ আসেননি। সরকারি এ উদ্যোগ শতভাগ বাস্তবায়নের দাবী ভোক্তা সাধারণের।
প্রাণিসম্পদ ডেইরী উন্নয়ন প্রকল্পের সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ডা.মোসা: তানিয়া আক্তার বলেন,সরকারি নির্দেশনা চলমান রাখার জন্য প্রতিদিন ৪/৫ খাচি ডিম বিক্রি করা হচ্ছে। ডিম কোত্থেকে আসে, ডিম সংগ্রহ, বিক্রি ও ব্যবস্থাপনা কমিটিতে কারা আছেন এমন প্রশ্নে তিনি সদুত্তর দিতে পারেননি।
সিংগাইর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা.মো.সাজেদুল ইসলাম বলেন,ডিমের চাহিদা তৈরী করছি। যদি মানুষ চায়,ধীরে ধীরে বৃদ্ধি করব। ডিম সংগ্রহ ও বিপণন এবং বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটি সম্পর্কে তার বিস্তারিত জানা নেই বলেও স্বীকার করেন তিনি।
এ ব্যাপারে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা.মুজিবর রহমান বলেন,কার্যক্রম সম্পর্কে ইউএলওকে তো অবশ্যই জানতে হবে। আমাদের পিজি গ্রুপ থেকে ডিম এনে বিক্রি করার কথা। আমরা স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে এ কাজটা করি। যদি কার্যক্রম না হয়ে থাকে আগামীকাল থেকে চালু করার ব্যবস্থা করব ইনশাআল্লাহ।