কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক : জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদারের আমন্ত্রণে ৪ দিনের সরকারি সফরের দ্বিতীয় দিনে দেশটির সম্রাট নারুহিতোর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার (২৬ এপ্রিল) জাপানের ইম্পেরিয়াল প্যালেস টোকিওতে তিনি এই সাক্ষাৎ করেন।
এর আগে এদিন সকালে বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রথমেই দেখা করেন বাংলাদেশ-জাপান কমিটি ফর ইকোনমিক কো-অপারেশনের চেয়ারম্যান ফুমিও কুকোবু। এরপর সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন জাইকা প্রেসিডেন্ট ড. তানাকা আকিহিকো। বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন তারা।
পরে স্টেট গেস্ট হাউসেই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন জেট্রো’র চেয়ারম্যান ইশিগুরো নোরিহিকো। পাশাপাশি ছিলেন জাপান-বাংলাদেশ পার্লামেন্টরি ফ্রেন্ডশিপ লীগের প্রেসিডেন্ট তারো আসো। প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরাও উপস্থিত ছিলেন।
এই সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি বিনিয়োগ সম্মেলন এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানেও যোগ দেবেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য চার জাপানি নাগরিককে ‘ফ্রেন্ড অব লিবারেশন ওয়ার অনার’ প্রদান করবেন।
২৭ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টোকিওতে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি এবং জেট্রোর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত বাংলাদেশ বিজনেস সামিটে প্রধান অতিথি হিসেবে ভাষণ দেবেন।
সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী জাপানে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশি ও কমিউনিটি আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।
এর আগে, মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) চার দিনের সরকারি সফরে জাপান পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওইদিন বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ভিভিআইপি চাটার্ড ফ্লাইট জাপানের স্থানীয় সময় টোকিও’র হানেদা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মতে, তার সফরের সময় বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে ক্রয় ছাড়াই প্রতিরক্ষা সহযোগিতাসহ আটটি সহযোগিতা স্মারক (এমওসি) বা চুক্তি সই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বুধবার (২৬ এপ্রিল) বন্ধুপ্রতিম দেশগুলোর দুই প্রধানমন্ত্রীর (শেখ হাসিনা ও কিশিদা ফুমিও) মধ্যে বৈঠকে এমওসি বা চুক্তি সই হবে।
জাপানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে দুই দেশের সরকার প্রধানদের মধ্যে আনুষ্ঠানিক দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে দুই দেশের মধ্যে কৃষি, মেট্রো-রেল, শিল্প আপগ্রেডেশন, জাহাজ পুনর্ব্যবহার, শুল্ক বিষয়ক, মেধা সম্পত্তি, প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, আইসিটি এবং সাইবার নিরাপত্তা সহযোগিতা ইত্যাদি খাতে দুই দেশের মধ্যে দুই নেতার উপস্থিতিতে প্রায় আটটি এমওসি বা চুক্তি সই হতে পারে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্মানে জাপানের প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে নৈশভোজের মাধ্যমে বৈঠকের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হবে।
এটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ষষ্ঠ জাপান সফর। এর আগে প্রধানমন্ত্রী ১৯৯৭, ২০১০, ২০১৪, ২০১৬ এবং ২০১৯ সালে জাপান সফর করেন।
সফরকালে, প্রধানমন্ত্রী কয়েকটি দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পাশাপাশি একটি বিনিয়োগ শীর্ষ সম্মেলন এবং একটি সম্প্রদায়ভিত্তিক সংবর্ধনায় যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তিনি কয়েকজন জাপানি নাগরিকের হাতে ‘ফ্রেন্ডস অব লিবারেশন ওয়ার অনার’তুলে দেবেন। যুক্তরাষ্ট্র ও পরে যুক্তরাজ্য সফর শেষে প্রধানমন্ত্রী আগামী ৯ মে দেশে ফিরবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:
হজের নিবন্ধনের সময় আর বাড়বে না: ধর্ম প্রতিমন্ত্রী
ঈদুল আযহার যাত্রাকেও নির্বিঘ্ন করতে প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ সেতুমন্ত্রীর
সুদান থেকে বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনা হবে : পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী