ওমর ফারুক খোন্দকার, অনিক (মালদ্বীপ): এক মুঠো সুখ, আর এক গুচ্ছ খুশির ফাল্গুন। ঋতুরাজের ছোঁয়ায়, মালদ্বীপ প্রবাসীদের এক বুক ভালোলাগার উৎসব, দ্রোহ ও বিচ্ছেদের রঙ ছড়ানো বসন্ত উদযাপন। বাঙ্গালিয়ানার এই দিনে শাড়িতে মুখর ছিলো প্রবাসী ললনারা। খোপায় ফুল, মাথায় ফুলের মুকুট, বেলি ফুলের মালা, কাঁচের চুড়ি, কপালে রক্তিম লাল টিপে নীলাভ অপরূপ প্রকৃতিকে আপন করে নিয়েছেন তারা। পাজামা-পাঞ্জাবিতে রঙ্গিন যুবক বয়োবৃদ্ধরা। ষড়-ঋতুর দেশে কোমলতার প্রতীক নিয়ে ঋতু বসন্ত, ফাল্গুন মাসকে বরণ করতে বাসন্তী সাজে রাঙ্গিয়েছেন মালদ্বীপকে।
“সমুদ্রের পাড়ে বাসন্তী হাওয়া,
বাসন্তী সাজে রঙ্গিন মালদ্বীপ”
স্লোগানকে সামনে রেখে ১৪’ই ফেব্রুয়ারি এই স্মরণীয় দিনটি আরো স্মরণীয় করে রাখার জন্যে প্রবাসী বাংলাদেশীদের উদ্যোগে ভারত মহাসাগরের সুনীল পানিবেষ্টিত মালদ্বীপের নীলাভ সমুদ্র সৈকতের হাওয়ায় রঙ-বেরঙের শাড়ি পরে বাসন্তী সাজে সেজে ফাল্গুনী উৎসবের আনন্দে যোগদেন সকল পেশার প্রবাসীরা। হাজারো ব্যস্ততার মাঝে প্রবাসীদের একত্রিত করতে সার্বিক সহায়তার প্রদানে ছিলেন মালদ্বীপের বাংলাদেশ হাইকমিশন। এছাড়াও বষন্ত বরণের আয়োজন ও বিশেষ তত্ত্বাবধানে ছিলেন হাইকমিশনার এর সহধর্মিনী মি. নাওমি নাহরিন কনিকা এবং অনুষ্ঠানটির সার্বিক সমন্বয়ে ছিলেন হাইকমিশনের কাউন্সেলর এর সহধর্মিনী মি. রোমানা রাজিয়া সিদ্দিকা।
এ উৎসবকে কেন্দ্র করে উৎসবস্থল পরিনত হয়েছিল সকল পেশার প্রবাসীদের মিলন মেলায়। মিলন মেলাকে আরও প্রাণবন্ত করতে তাদের সাথে যোগ দিয়েছেন বাংলাদেশ হাইকমিশনার রিয়ার এডমিরাল এস এম আবদুল কালাম আজাদ, কাউন্সেলর (শ্রম) মো. সোহেল পারভেজ, তৃতীয় সচিব চন্দন কুমার সাহা, তৃতীয়বারের সিআইপি নির্বাচিত ও গ্লোবাল রিচস গ্রুপের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো. সোহেল রানা, ভিউ কনস্ট্রাকশন প্রা. লি. এর সিও দুলাল হোসেন, ঢাকা ট্রেডার্স এর সিও বাবুল হোসেন, ব্যবসায়িক আলতাফ হোসেন, এন.বি.এল মানি ট্রান্সফার এর সিইও মাসুদুর রহমান, চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. মোক্তার আলী লস্কর, ডা. জেবা উন নাহার, ডা. ফারহানা, ডা. আসিফ, ডা. হুরিয়া, ডা. সুজন ও তাদের পরিবারবর্গ, হাই কমিশনের সকল কর্মকর্তা কর্মচারী ও তাদের পরিবারবর্গ, প্রবাসী বাংলাদেশী পরিবারের সদস্য সহ ও সাংবাদিকবৃন্দের উপস্থিতি ছিলো।
অনুষ্ঠানে নিয়ে আসা প্রবাসীদের ঘরে তৈরী করা ফাগুনের পিঠা ও দেশীয় খাবার পরিবেশনে বাড়তি আনন্দ নিয়ে আসে। অনুষ্ঠানে আগতরা জানান, সামাজিক এবং রাজনৈতিক অনুষ্ঠানের বাইরেও বাংলাদেশের সার্বজনীন এমন উৎসবের আয়োজনে দেশের আমেজ পাওয়া যায়। এসব আয়োজন অব্যাহত রাখার আহ্বান তাদের। প্রবাসী বাঙ্গালীদের মধ্যে পারস্পরিক সম্প্রীতি বৃদ্ধি এবং নতুন প্রজন্ম ও স্থানীয়দের মাঝে বাংলাদেশী সংস্কৃতি তুলে ধরাই ছিলো অনুষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য।
উক্ত অনুষ্ঠানে নারী, পুরুষ ও শিশুদের উপস্থিতিতে প্রাণবন্ত করে তোলে বাসন্তী উৎসবকে। আর এই প্রবাসি বাঙালিরা রাঙানো বসন্তে সোনার মাটি বাংলাদেশের আস্বাদ ক্ষণিকের জন্যে লাভ করেও প্রবাসে যথেষ্ট আনন্দিত।