নিজস্ব প্রতিবেদক : জীবন থাকতে বাংলাদেশের এতটুকু স্বার্থ নষ্ট হতে দেবেন না বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের স্বার্থ কারও হাতে নষ্ট হতে দেবো না। তিনি বলেন, ভোট চুরি এ দেশের মানুষ কখনো মেনে নেয়নি এবং নেবেও না। জনগণের ওপর আমাদের আস্থা ও বিশ্বাস আছে। আমরা কেন ভোট চুরি করবো?
শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোট চুরি করে খালেদা জিয়া নিজেকে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু তা মানুষ মানেনি। আন্দোলনের কারণে তখন খালেদা জিয়া বাধ্য হয়েছিল আবার ভোট দিতে। এরপর আমরা নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসি। তারপর আজকের এই বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “স্বাধীনতা যেন ব্যর্থ না হয়, সেটাই আমার একমাত্র লক্ষ্য। ’৭৫- এ আমার পরিবারের সবাইকে হত্যার পরও ছোটবোন রেহানার সঙ্গে আলাপ করে দেশে ফিরে এসেছিলাম।”
তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ সক্ষমতায় আসার পর খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন, স্বাক্ষরতার হার বাড়ানো, রাস্তা-ঘাটের উন্নয়নসহ বিভিন্ন উন্নয়ন করেছি। কিন্তু ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত আসার পর দেশ আবার পিছিয়ে যায়।”
শেখ হাসিনা বলেন, “সে সময় দেশের স্বার্থে আপোস না করার কারণে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসতে পারেনি। আমার লক্ষ্যই ছিল জীবন থাকতে বাংলাদেশের এতটুকু স্বার্থ নষ্ট হতে দিব না।”
সভাপতি বলেন, আওয়ামী লীগের স্লোগান ছিল ‘আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব।’ মানুষের ভোট দেওয়ার অধিকার, সাংবিধানিক অধিকার আওয়ামী লীগই নিশ্চিত করেছে। আমরা নির্বাচন কমিশন গঠন করে তাদের স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিয়েছি। তাদের আর্থিক সক্ষমতা তাদের হাতে দিয়ে দিয়েছি। সবাইকে ভোটার আইডি কার্ড করে দিয়েছি। নির্বাচন কমিশন নিয়োগ আইন-২০২২ আমরাই করেছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের যদি ভোট চুরির নিয়ত থাকতো, তাহলে তো খালেদা জিয়ার মতো আজিজ মার্কা নির্বাচন কমিশন করতে পারতাম। কিন্তু আমরা তা করিনি।
বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, আমরা ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছি। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে আমাদের কিছু দিন লোডশেডিং দিতে হয়েছিল।
এসময় প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ পরিবারের সদস্যদের নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনা স্মরণ করে তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাকাল থেকে যারা নিহত হয়েছেন তাদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী।
এর আগে ২০৪১ সালের মধ্যে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়’ নিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলন উদ্বোধন করেন দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আজ সকাল সাড়ে ১০টায় শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে এবং জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন তিনি।