স্পোর্টস ডেস্ক : চলমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও একই খাদের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে বাবর আজমরা। যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বাজেভাবে হারের পর দ্বিতীয় ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে ১২০ রানের সহজ লক্ষ্য টপকাতে পারেনি পাকিস্তান। ফলে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ১৯তম ম্যাচে পাকিস্তানকে ৬ রানে হারিয়েছে ভারত। সেই সঙ্গে বিশ্বকাপের সুপার এইটে যাওয়ার সম্ভাবনাও ফিকে হয়ে আসল বাবর আজমদের। অন্যদিকে ভারত পেলে টানা দুই ম্যাচে দুই জয়।
রোববার (৯ জুন) ‘এ’ গ্রুপের হাইভোল্টেজ ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল পাকিস্তান। আগে ব্যাট করতে নেমে ১৯ ওভারে ১০ উইকেটে স্কোরবোর্ডে ১১৯ রান তোলে ভারত। জবাব দিতে নেমে ১১৩ রানে থামে পাকিস্তান।
ছোট রান তাড়ায় শুরুটা দেখে শুনে করে পাকিস্তান। মন্থর ব্যাটিংয়ে শুরু করেন দুই ওপেনার বাবর ও রিজওয়ান। পঞ্চম ওভারে এই জুটি ভেঙে স্বস্তি ফেরান জাসপ্রিত বুমরাহ। যাদবের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে ১৩ রান করেন পাকিস্তানের অধিনায়ক।
ওয়ানডাউনে নেমে সমান ১৩ রানে এলবির ফাঁদে পড়েন উসমান খানও। ফখর জামানও আটকে যান সেই ১৩ রানের বৃত্তে। তিনি উইকেট দিয়েছেন পান্ডিয়াকে।
সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মিছিলে উইকেটে আশা জাগিয়েছিলেন রিজওয়ান। কিন্তু উইকেটে সেট হয়ে তিনিও করলেন হতাশ। বুমরাহর বলে বোল্ড হয়ে থামে রিজওয়ানের মন্থর ইনিংস। ৪৪ বলে ৩১ রান করে বিদায় নেন এই ওপেনার।
এরপর নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে পাকিস্তানকে চাপে ফেলে ভারত। সেই চাপ সামাল দিয়ে আর জয়ের কক্ষপথে ফিরতে পারেনি পাকিস্তান।
এর আগে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারেই শাহীন শাহ আফ্রিদিকে ছক্কা হাঁকিয়ে ধাক্কা দেন রোহিত শর্মা। তার ওই ওভারে ৮ রান নেন রোহিত। এরপরই নামে তৃতীয় দফায় বৃষ্টি। আবারও অপেক্ষা!
৩০ মিনিট অপেক্ষার পর ফের শুরু হয় মাঠের লড়াই। স্ট্রাইকে এসে প্রথম বলে নাসিম শাহকে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে শুরু করেন বিরাট কোহলি। এই স্বস্তি অবশ্য শেষ হয়ে যায় এক বল পরেই। নাসিমের করা ওই ওভারের তৃতীয় বল মোকাবিলায় উড়িয়ে মারতে গিয়ে কাভার পয়েন্টে উসমান খানের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন কোহলি (৪)।
পরের ওভারে আবারও পাকিস্তানের উল্লাস। এবারের শিকার রোহিত। শাহিনের করা বলে ফ্লিক করেন রোহিত। টাইমিং ঠিকঠাক ছিল না। ব্যাটের কানায় লেগে বল উপরে উঠে যায়, ডিপ স্কয়ার লেগে তালুবন্দি করেন হারিস রউফ। ১২ বলে ১৩তে থামেন ভারতীয় অধিনায়ক।
দুই বড় তারকাকে হারিয়ে মোমেন্টাম পায় পাকিস্তান। কিন্তু সেটা ভালোভাবে কাজে লাগাতে পারেনি। মোহাম্মদ আমিরের বলে পরপর তিনবার পন্থকে জীবন দেয় পাকিস্তান। তার তুলে দেওয়া তিনটি ক্যাচের একটিও ধরতে পারেননি উসমানরা। পাওয়ার প্লের ছয় ওভারে ৫০ রানে তোলে ভারত।
অষ্টম ওভারে অক্ষর প্যাটেলকে বোল্ড করে ভারতের জমে যাওয়া জুটি ভাঙেন নাসিম শাহ। ১৮ বলে ২০ রানের বেশি যোগ করতে পারেননি অক্ষর। ভাঙে ৩৯ রানের জুটি। পাঁচে নামা সূর্যকুমার যাদবকে চড়াও হতে দেননি রউফ। ৮ বল খেলে ৭ রান করা যাদবকে মিড অফে আমিরের হাতে ক্যাচ বানান রউফ। এরপর নাসিমের বল কট এন্ড বোল্ড হয়ে বিদায় নেন শিভাম দুবে।
১৫তম ওভারে বোলিংয়ে এসেই চমক দেখান আমির। পরপর দুই বলে তুলে নেন দুই উইকেট। প্রথমে থামান জমে যাওয়া রিশাভ পন্থকে। চারবার জীবন পাওয়া পন্থকে বাবরের হাতে ক্যাচ বানান আমির। ৩১ বলে ৪২ রানে পন্থের ইনিংস। এরপর উইকেটে আসা জাদেজাকে টিকতেই দেননি আমির। রানের খাতা খোলার আগেই জাদেজাকে ড্রেসিংরুমে পাঠান অভিজ্ঞ এই বোলার। এরপর হারিস রউফ এসেও এক ওভারে তুলে নেন জোড়া উইকেট। একের পর এক উইকেট হারিয়ে বেশিদূর যেতে পারেনি ভারত। টেলএন্ডারদের ব্যাটে শেষ পর্যন্ত ১১৯ রানে থামে ভারত।
বল হাতে পাকিস্তানের হয়ে ৪ ওভারে ২১ রান দিয়ে তিন উইকেট নিয়েছেন নাসিম শাহ। ২১ রান দিয়ে সমান তিনটি নিয়েছেন হারিস রউফ। ২৩ রান খরচায় আমির নিয়েছেন দুটি উইকেট। একটি নিয়েছেন শাহিন শাহ।