স্পোর্টস ডেস্ক : দীর্ঘ ১৫ বছর পর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে মুখোমুখি হতে যাচ্ছে ভারত ও আয়ারল্যান্ড। চলমান বিশ্বকাপের ‘এ’ গ্রুপের ম্যাচে আজ মাঠে নামছে ভারত ও আয়ারল্যান্ড। ২০০৯ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সর্বশেষ দেখা হয়েছিলো দু’দলের। বিশ্বকাপের মঞ্চে দ্বিতীয় সাক্ষাৎকে জয় দিয়ে উদযাপন করতে চায় উভয় দলই। নিউইয়র্কে বাংলাদেশ সময় রাত ৮টা ৩০ মিনিটে খেলতে নামবে দু’দল।
২০০৯ সালে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে মুখোমুখি হয়েছিলো ভারত-আয়ারল্যান্ড। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে সেটি ছিল দু’দলের প্রথম মোকাবেলা। ইংল্যান্ডের নটিংহামে অনুষ্ঠিত ঐ ম্যাচে ভারত ৮ উইকেটে হারিয়েছিলো আয়ারল্যান্ডকে। এরপর ছয়টি বিশ্বকাপ চলে গেলেও সংক্ষিপ্ত ভার্সনের মেগা ইভেন্টে দেখা হয়নি তাদের। অবশেষে বিশ্বকাপের নবম আসরে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে একে অপরের বিপক্ষে মাঠে নামবে ভারত-আয়ারল্যান্ড।
২০০৯ সালের বিশ্বকাপের পর তিন দফায় আয়ারল্যান্ড সফরে ৬টি টি-টোয়েন্টি খেলেছে ভারত। সবগুলোতেই জয় পেয়েছে টিম ইন্ডিয়া। তাই আইরিশদের বিপক্ষে এখন পর্যন্ত ৭ ম্যাচ খেলে শতভাগ জয় আছে ভারতের।
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে শতভাগ জয়ের রেকর্ড অব্যাহত রাখার মিশন ভারতের। আগামীকালও ফেবারিট হিসেবেই মাঠে নামবে উপমহাদেশের দলটি। ভারতের প্রধান কোচ রাহুল দ্রাবিড় বলেন, ‘আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে আমাদের রেকর্ড ভালো। এমন রেকর্ডকে আরও শক্ত করতে চাই আমরা। জয়ের জন্য মাঠে নামবে দল। বিশ্বকাপে সবসময়ই ভালো ক্রিকেট খেলে আয়ারল্যান্ড। গত বিশ্বকাপের বড় দুই দলকে হারিয়েছে তারা। এজন্য কালকের ম্যাচ নিয়ে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। প্রতিপক্ষকে কোন সুযোগ দেওয়া যাবে না। পুরো ম্যাচেই আধিপত্য বিস্তার করে খেলতে হবে ভারতকে।’
আয়ারল্যান্ড ম্যাচের আগে যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে ভারতের অনুশীলন ব্যবস্থা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন দ্রাবিড়। কোন মাঠ বা ইনডোরে নয়, ভারতকে অনুশীলন করতে হচ্ছে পাবলিক পার্কে। বিশ্বকাপের আয়োজক যুক্তরাষ্ট্রের এমন আয়োজনে ক্ষোভ প্রকাশ করে দ্রাবিড় বলেন, ‘বিশ্বকাপের অবশ্যই আপনার বড় স্টেডিয়াম বা ক্রিকেট স্টেডিয়াম থাকতে হবে। কিন্তু আমাদের পাবলিক পার্কে অনুশীলন করতে হচ্ছে। পার্কে ক্রিকেটের অনুশীলন করাটা অদ্ভুত ব্যাপার। এটা বিশ্বকাপের মত আসরে একেবারেই বেমানান।’
বিশ্বকাপের আগে একটি অফিসিয়াল প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছে ভারত। বাংলাদেশের বিপক্ষে ঐ ম্যাচে ব্যাটিং-বোলিং প্রস্তুতি বেশ ভালোভাবেই সেরেছে টিম ইন্ডিয়া। প্রথমে ব্যাট করে ৫ উইকেটে ১৮২ রান করে ভারত। জবাবে ৯ উইকেটে ১২২ রান করে বাংলাদেশ। ৬০ রানের জয়ে প্রস্তুতি পর্ব শেষ করে টিম ইন্ডিয়া। এর আগে গেল দু’মাস আইপিএল নিয়েই ব্যস্ত সময় পার করেছে এ বছর মাত্র ১টি টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলা ভারত। গত জানুয়ারিতে ঘরের মাঠে আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজ ৩-০ ব্যবধানে জিতেছিলো ভারত।
এদিকে চলতি বছর দু’টি দ্বিপাক্ষিক ও একটি ত্রিদেশীয় সিরিজে অংশ নেয় আয়ারল্যান্ড। আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের কাছে তিন ম্যাচের সিরিজ ২-১ ব্যবধানে হারলেও, নেদারল্যান্ডস ও স্কটল্যান্ডকে নিয়ে হওয়া ত্রিদেশীয় সিরিজে চ্যাম্পিয়ন হয় আইরিশরা।
২০০৯ থেকে সবগুলো বিশ্বকাপে খেলেছে আয়ারল্যান্ড। এরমধ্যে ২০২২ সালে সর্বশেষ আসরেই সবচেয়ে বেশি ৩ ম্যাচ জিতেছিলো তারা। গ্রুপ পর্বে দুই ম্যাচ ও সুপার টুয়েলভে ১টি ম্যাচ জিতেছিলো আইরিশরা। এরমধ্যে গ্রুপ পর্বে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৯ উইকেটে এবং সুপার টুয়েলভে ইংল্যান্ডকে বৃষ্টি আইনে ৫ রানে হারায় তারা।
আগের বিশ্বকাপের সাফল্যকে এবার ছাড়িয়ে যাবার স্বপ্ন দেখছে আয়ারল্যান্ড। অধিনায়ক পল স্টার্লিং বলেন, ‘গত বিশ্বকাপে আমাদের পারফরমেন্স খুবই ভালো ছিলো। দুই বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ইংল্যান্ডকে হারিয়েছিলাম আমরা। এবার আগের বিশ্বকাপের সাফল্যকে ছাড়িয়ে যেতে চাই। এই বিশ্বকাপেও আবারও বিশ্বকে চমকে দিতে চাই।’
ভারত দল : রোহিত শর্মা (অধিনায়ক), হার্দিক পান্ডিয়া (সহ-অধিনায়ক), যশস্বী জয়সওয়াল, বিরাট কোহলি, সূর্যকুমার যাদব, ঋষভ পান্থ (উইকেটরক্ষক), সঞ্জু স্যামসন (উইকেটরক্ষক), শিবম দুবে, রবীন্দ্র জাদেজা, অক্ষর প্যাটেল, কুলদীপ যাদব, যুজবেন্দ্রা চাহাল, আর্শদীপ সিং, জসপ্রিত বুমরাহ, মোহাম্মদ সিরাজ।
আয়ারল্যান্ড দল : পল স্টার্লিং (অধিনায়ক), মার্ক অ্যাডায়ার, রস অ্যাডায়ার, এন্ড্রু বলবির্নি, কার্র্টিস ক্যাম্ফার, গ্যারেথ ডেলানি, জর্জ ডকরেল, গ্রাহাম হিউম, জশ লিটল, ব্যারি ম্যাককার্থি, নেইল রক, হ্যারি টেক্টর, লরকান টাকার, বেন হোয়াইট, ক্রেইগ ইয়াং।