স্পোর্টস ডেস্ক : ব্যাটিং ব্যর্থতার এক ম্যাচ বাকী থাকতে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে টি-টোয়েন্টি সিরিজ হেরেছে সফরকারী বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। বৃহস্পতিবার (২৩ মে) তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ৬ রানে হেরেছে টাইগাররা। প্রথম ম্যাচ ৫ উইকেটে হেরেছিলো বাংলাদেশ। ফলে ২-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ায় সিরিজ হার নিশ্চিত হয়ে গেল নাজমুল-সাকিবরা।
এ ম্যাচে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৪৪ রান করে স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্র। জবাবে ৩ বল বাকী থাকতে ১৩৮ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। শেষ ১৯ বলে ৫ উইকেট হাতে নিয়ে জয়ের জন্য ২১ রান দরকার ছিলো টাইগারদের। কিন্তু ১৬ বলে মাত্র ১৪ রানে শেষ ৫ উইকেট পতনে বিশ^কাপের আগে শেষ প্রস্তুতির সিরিজে লজ্জাজনকভাবে হেরে গেল বাংলাদেশ।
হিউস্টনের প্রেইরি ভিউ ক্রিকেট কমপ্লেক্সে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিংয়ের সিদ্বান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। ব্যাটিংয়ে নেমে পাওয়ার প্লেতে ৪২ রান তোলেন যুক্তরাষ্ট্রের দুই ওপেনার স্টেভেন টেলর ও অধিনায়ক মোনাঙ্ক প্যাটেল।
পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশের উইকেট না পাবার হতাশা দূর করেন লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেন। নিজের প্রথম ও ইনিংসের সপ্তম ওভারে জোড়া উইকেট শিকার করেন তিনি। ওভারের চতুর্থ বলে ডিপ মিড উইকেটে তানজিদ হাসানকে ক্যাচ দেন ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ২৮ বলে ৩১ রান করা টেলর।
পঞ্চম বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন ক্রিজে আসা নতুন ব্যাটার অ্যান্ড্রিস গাউস। গোল্ডেন ডাক মারেন গাউস। ৪৪ রানেই দ্বিতীয় উইকেট পতনের পর যুক্তরাষ্ট্রকে লড়াইয়ে ফেরান প্যাটেল ও অ্যারন জোন্স। বাংলাদেশে বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের সামনে দ্রুত রান তুলতে পারেননি তারা। দেখেশুনে খেলে ১৫তম ওভারে দলের রান ১শতে নেন দু’জনে। ১৭তম ওভারের প্রথম বলে প্যাটেল-জোন্সের জুটি ভাঙ্গেন মুস্তাফিজুর রহমান। ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ৩৪ বলে ৩৫ রান করা জোন্স শিকার হন ফিজের। তৃতীয় উইকেটে ৫৬ বলে ৬০ রান যোগ করেন প্যাটেল-জোন্স।
দলীয় ১০৪ রানে জোন্সের বিদায়ের পর ১৯তম ওভারে জোড়া উইকেট তুলে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংগ্রহের আশা শেষ করে দেন শরিফুল। ১টি ছক্কা ১০ বলে ১১ রান করা নিউজিল্যান্ডের সাবেক ক্রিকেটার কোরি অ্যান্ডারসনকে এবং ৪টি চার ও ১টি ছক্কায় ৩৮ বলে ৪২ রান করা প্যাটেলকে শিকার হন শরিফুলের। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৪৪ রানের সম্মানজনক সংগ্রহ পায় যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশের শরিফুল, মুস্তাফিজ ও রিশাদ ২টি করে উইকেট নেন।
সিরিজে সমতা ফেরানোর লক্ষ্যে ১৪৫ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে প্রথম ওভারেই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্রের পেসার সৌরভ নেত্রাভালকারের শিকার হয়ে গোল্ডেন ডাক মারেন সৌম্য সরকার।
সতীর্থকে হারালেও দ্রæত রান তোলার চেষ্টা করেন লিটন দাসের পরিবর্তে একাদশে সুযোগ পাওয়া ওপেনার তানজিদ হাসান। কিন্তু ১টি করে চার-ছক্কা মেরে সাজঘরে ফেরেন ১৫ বলে ১৯ রান করা তানজিদ।
৩০ রানে দুই ওপেনারকে হারিয়ে চাপে পড়া বাংলাদেশকে লড়াইয়ে ফেরান অধিনায়ক শান্ত ও তাওহিদ হৃদয়। তৃতীয় উইকেটে ৩৭ বলে ৪৮ রান যোগ করেন দু’জনে। ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ৩৪ বলে ৩৬ রান করে রান আউট হন শান্ত। অধিনায়ক ফেরার পর প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন ২১ বলে ২৫ রান করা হৃদয়। দলের রান ১শ পার হবার পর আউট হন মাহমুদুল্লাহ(৩)। এতে ১০৬ রানে পঞ্চম উইকেট পতনে চাপে পড়ে বাংলাদেশ।
ষষ্ঠ উইকেটে ১৪ বলে ১৮ রান যোগ করে বাংলাদেশকে জয়ের পথে রাখেন সাকিব ও জাকের। কিন্তু চার বলের ব্যবধানে ৩ উইকেট হারিয়ে হারের মুখে ছিটকে পড়ে টাইগাররা। ১৭তম ওভারের শেষ বলে জাকিরকে ৪ রানে শ্যাডিল, আলি খানের পরের ওভারের প্রথম বলে সাকিব (৩০) এবং তৃতীয় বলে খালি হাতে তানজিম বিদায় নিলে ১২৫ রানে অষ্টম উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
নবম ব্যাটার হিসেবে দলীয় ১৩২ রানে আউট হন ১ রান করা শরিফুল। শেষ ওভারে ১ উইকেট হাতে নিয়ে ১২ রান দরকার পড়ে বাংলাদেশের। প্রথম বলে বাই থেকে ১ রান আসার পর, দ্বিতীয় বলে বাউন্ডারি মারেন রিশাদ। তৃতীয় বলে শেষ ব্যাটার হিসেবে রিশাদ আউট হলে ১৩৮ রানে অলআউট হয়ে ম্যাচ হারে বাংলাদেশ। ১৪ রানে শেষ ৫ উইকেট হারায় টাইগাররা। যুক্তরাষ্ট্রের আলি ৩টি, নেত্রাভালকার-শ্যাডলি ২টি করে উইকেট নেন।
আজ একই ভেন্যুতে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি খেলতে নামবে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র।