বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না করে সারাদেশে ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান নিষিদ্ধে সরকারের ঘোষণা ও অটোরিক্সা মালিক শ্রমিকদের আন্দোলনে গভীর উদ্বেগ ও উৎকন্ঠা প্রকাশ করে অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ।
সোমবার (২০ মে) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে পার্টির চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভুইয়া এ দাবি জানান।
তারা সরকার চালক ও তাদের পরিবারের কথা চিন্তা না করে হুট করেই ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক বন্ধে সরকারের ঘোষণাকে ‘গণবিরোধী’ আখ্যা দিয়ে অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বলেন, এমনেতেই অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের কারণে অসংখ্য মানুষ কাজ হারিয়ে বেকার হচ্ছে, অন্যদিকে অটোরিক্সা বন্ধের ফলে প্রায় ৩০ লাখ অটোরিকশা চালকের পরিবার আজ পথে বসেছে। রিকশা, ব্যাটারি রিকশা, ভ্যান, ইজিবাইক চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছে, তখন তুঘলকি কায়দায় ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান নিষিদ্ধ করার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ঘোষণা ৫০ লাখ পরিবারকে মানবেতন জীবনের দিকে ঠেলে দেবে, যা সমাজে চরম অস্থিরতা ও নৈরাজ্য তৈরি করবে। আমরা সরকারকে বলতে চাই, অটোরিকশা নিষিদ্ধ করার আগে তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে।
ন্যাপ নেতৃদ্বয় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশে বলেন, আপনারা এসি গাড়িতে চড়ে এসির ঠান্ডা হাওয়া খাবেন আর গরিব রিকশাচালকদের পেটে লাথি মারবেন, এটা হতে পারে না। অটোরিকশা চলছে, চলবে। শ্রমিক ভাইয়েরা এই সিদ্ধান্ত মানে না, মানবে না।
নেতৃদ্বয় বলেন, রিকশা, ব্যাটারি, মোটর আমদানি করে ব্যবসায়ীরা, বিক্রি করে দোকানদার ব্যবসায়ীরা। সেগুলো আমদানি ও বিক্রি বন্ধ না করে রিকশা নিষিদ্ধ অমানবিক। দরিদ্র কর্মহীন মানুষ এনজিওসহ বিভিন্নভাবে ঋণ নিয়ে ৬০-৭০ হাজার টাকা খরচ করে রিকশা কিনে চালিয়ে যখন জীবিকা চালাচ্ছে, তখন সরকারের এই সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই শ্রমজীবী রিকশাচালক-মালিকরা মেনে নেবে না।
তারা আরও বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে দুর্ঘটনার অজুহাত দেখিয়ে অটোরিকশা-ভ্যান বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। অথচ দুর্ঘটনার পেছনে দায়ী সরকারের সুষ্ঠু সড়ক ব্যবস্থাপনার অভাবও সমানভাবে দায়ী। তাছাড়া ব্যবসায়ীদের স্বার্থে ব্যাটারি যন্ত্রপাতি আমদানি, উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের সব রকমের সুযোগ রাখা হয়েছে। সে ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেই, অথচ মাথার ঘাম পায়ে ফেলে কোনোমতে জীবন চালায় যে রিকশা শ্রমিক, তাদের জীবনের ওপর চাপিয়ে দেয়া অন্যায় সিদ্ধান্ত।