ঈদ এলেই মহাসড়কগুলো হয়ে যায় যেন এলোমেলো অবস্থা আর রাস্তার যানগুলোর স্থির চিত্রের স্থায়ী রূপ। প্রতি বছরের ন্যায় সরকারের পক্ষ থেকে নানা উদ্যোগ নেয়ার কথা বলা হলেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না।বরং দীর্ঘায়িত হচ্ছে যানজটের লম্বা সারি। এবার আবার ঈদের আগে দেশের মহাসড়ক গুলোতে সৃষ্টি হয়েছে অসহনীয় যানজট। এতে করে মহাভোগান্তিতে পড়েছেন ঈদে ঘরমুখী মানুষ। যানজটের পাশাপাশি কোনো কোনো এলাকায় বৃষ্টি যাত্রীদের দুর্ভোগ আরও বাড়িয়েছে। অতিরিক্ত যানবাহনের কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে সৃষ্টি হয়েছে দীর্ঘ যানজটের।
ঢাকা থেকে সিলেট ও ঢাকা-চট্টগ্রাম পথে যেতে কাচপুর পেরিয়ে যাওয়ার পর গাড়িগুলোকে দীর্ঘক্ষণ আটকে থাকতে হচ্ছে নারায়ণগঞ্জের কাচপুর ও ভুলতায়, যেখানে ফ্লাইওভারের নির্মাণকাজ চলছে। খানাখন্দ ভরা সড়কের কারণে সিলেট মুখী যাত্রীদের যানজটের ধকল পোহাতে হচ্ছে নরসিংদীর ঘোড়াশালে।
এছাড়া যাত্রাবাড়ী থেকে কাচপুর সেতু পেরিয়ে যাওয়ার পরপরই বাম দিকে সিলেট মহাসড়ক, আর সোজা চলে যায় চট্টগ্রাম মহাসড়ক। নাজুক কাচপুর সেতুতে নিত্য সময় যানজট লেগে থাকায় সিলেটগামী অনেক বাস ডেমরা সেতু হয়েই রাজধানী ছাড়ে। তবে কাচপুর সেতু হয়েও যায় অনেক বাস। সেখানে দীর্ঘ যানজট পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের।
এদিকে দেশের উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় ৪০টি জেলায় যাতায়াতে গাবতলী আন্তজেলা বাস টার্মিনালের আগে-পরে রাতে দীর্ঘ যানজট হচ্ছে। এই পথের মূল সমস্যা অব্যবস্থাপনা ও যানবাহনের এলোমেলো চলাচল। এ রুটে উত্তরাঞ্চলের জেলা গুলোতে যাওয়ার পথে আমিনবাজার সেতু পার হওয়ার পর ঢাকামুখী পথে তীব্র যানজটে পড়তে হচ্ছে যাত্রীদের। এই জট গাবতলী থেকে ছয়-সাত কিলোমিটার দূর পর্যন্ত বিস্তৃত হচ্ছে। কল্যাণপুর পর্যন্ত ধরলে জটের দৈর্ঘ্য দাঁড়ায় প্রায় ১০ কিলোমিটার।
এছাড়া মহাখালী টার্মিনাল থেকে বাস আবদুল্লাহপুর, টঙ্গী-ভোগড়া বাইপাস ও টঙ্গী স্টেশন রোড এলাকায় দিয়ে বিভিন্ন গন্তব্যে যায়। বিশেষ করে ঢাকা-টাঙ্গাইল, ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-সিলেট রুটে ভোগান্তিতের পড়ছে সাধারণ মানুষ। মূলত এই পথে খানাখন্দ ও বাড়তি যানবাহনের চাপে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে।
অন্যদিকে গর্ত-জলাবদ্ধতার কারণে যাত্রাবাড়ী হয়ে পূর্বাঞ্চলের যাত্রাও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট রুটে যাত্রীরা ঢাকা থেকে বের হওয়ার পথেই পোহাতে হচ্ছে কয়েক ঘন্টার যানজট দুর্ভোগ।
পরিবহনমালিক-শ্রমিকেরা জানান, গাবতলী, মহাখালী ও সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল এবং এগুলোর আশপাশের এলাকা থেকে প্রতিদিন ১০ হাজারের মতো দূরপাল্লার বাস চলাচল করে। ঈদে এই সংখ্যা আরো বেড়ে যায়। এসব বাসের একটা বড় অংশই সন্ধ্যা থেকে ভোরের মধ্যে আসা-যাওয়া করে। ফলে ওইসময় যানজন আরো মারাত্মক আকার ধারণ করে। ঈদের আগে যানবাহনের চাপ বেড়ে যাওয়ায় দুর্ভোগ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন পরিবহন সংশ্লিষ্টরা।
প্রত্যেকেই তাঁদের স্বজনদের সাথে নির্বিঘ্নে যাতে বাড়িতে ঈদ উৎযাপন করতে পারে সেই বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে আরো বেশি নজরদারি থাকা দরকার। ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা নিরাপদ হোক, শুভ হোক।