ময়মনসিংহ ব্যুরো: ময়মনসিংহের ভালুকায় ধর্ম অবমাননার অভিযোগে দিপু চন্দ্র দাস (২৮) নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার পর মরদেহ পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় গ্রেফতার ১২ আসামিকে তিন দিন করে রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে ময়মনসিংহের ৭ নম্বর আমলি আদালতের সিনিয়র চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাহাদাত হোসেন গ্রেফতারকৃত আসামিদের তিন দিন করে রিমান্ডে পাঠানোর আদেশ দেন।
রিমান্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- আশিকুর রহমান (২৫), কাইয়ুম (২৫), মোঃ লিমন সরকার (১৯), মোঃ তারেক হোসেন (১৯), মোঃ মানিক মিয়া (২০), এরশাদ আলী (৩৯), নিজুম উদ্দিন (২০), আলমগীর হোসেন (৩৮), মোঃ মিরাজ হোসেন আকন (৪৬), মোঃ আজমল হাসান সগীর (২৬), মোঃ শাহিন মিয়া (১৯) এবং মোঃ নাজমুল (২১)।
চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পরিদর্শক শেখ মোস্তাছিনুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, পুলিশ রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠায় এবং বিচারক প্রত্যেককে তিন দিন করে রিমান্ডের অনুমোদন দেন।
পুলিশ জানায়, গত শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেলে নিহত দিপুর ছোট ভাই অপু চন্দ্র দাস বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ১৪০-১৫০ জনকে আসামি করে ভালুকা থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা রুজুর পর র্যাব ও পুলিশ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে মোট ১২ জনকে গ্রেফতার করে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত বৃহস্পতিবার রাতে ভালুকার জামিরদিয়া এলাকার পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড কারখানায় ধর্ম অবমাননার অভিযোগে দিপুকে জনতা পিটিয়ে আহত করে। পরে তার মরদেহ ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে নিয়ে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। পুলিশ রাত আড়াইটার দিকে অর্ধপোড়া মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়।
ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আইন নিজের হাতে নেওয়ার অধিকার কারও নেই। কেন ওই যুবককে পুলিশের হাতে না দিয়ে জনতার হাতে তুলে দেওয়া হলো, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অপর আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
নিহতের পরিবার দাবি করেছে, উৎপাদন বৃদ্ধি নিয়ে বিরোধের কারণে দিপুকে পরিকল্পিতভাবে মিথ্যা অভিযোগে হত্যা করা হয়েছে। নিহত দিপু চন্দ্র দাস জেলার তারাকান্দা উপজেলার মোকামিয়া কান্দা গ্রামের রবি চন্দ্র দাসের ছেলে। তিনি দুই বছর ধরে ওই কোম্পানিতে চাকরি করছিলেন।


