কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক: অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, গণতন্ত্রকে সুসংহত করতে সংবিধানে যেকোনো পদক্ষেপ নেয়া হলে তা মৌলিক কাঠামোর পরিপন্থি হবে না।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) নির্বাচনকালীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরাতে ৯ম দিনের আপিল শুনানিতে এ কথা বলেন তিনি।
প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পূর্নাঙ্গ বেঞ্চে দ্বিতীয় দিনের মত শুনানি করছেন শুনানি করছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের পেছনে যে যুক্তি দেয়া হয়েছিল তা ছিল উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ভ্রান্তপ্রসূত। ‘গুডের’ বিপরীতে ‘ব্যাড’ শব্দের চেয়ে যদি কোনো শব্দ থেকে থাকে, এই সরকার ব্যবস্থা বাতিল করায় তার চেয়েও ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে দেশে।
এর আগে বুধবার (৫ নভেম্বর) প্রায় দেড় ঘণ্টা শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল। শুনানিতে তিনি বলেন, সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে দেওয়া রায় বহাল থাকা উচিৎ হবে না। রায় পরিবর্তন করে সাবেক প্রধান বিচারপতির খায়রুল হক দণ্ডনীয় অপরাধ করেছেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
গত ২৭ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদন মঞ্জুর করেন সর্বোচ্চ আদালত। দেওয়া হয় আপিলের অনুমতি। এরপর ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ ৫ জন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল গোলাম পরওয়ার আপিল করেন।
এর আগে ২০১১ সালে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করে রায় দেন সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের আপিল বিভাগ।
এদিকে গত ২৯ অক্টোবর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন থেকে সৃষ্ট আপিলের ওপর পঞ্চম দিনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে গত রোববার (২ নভেম্বর) ষষ্ঠ দিনের মতো এবং সবশেষ মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) সপ্তম দিনের মতো প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ৭ বিচারপতির বেঞ্চে এ বিষয়ে করা আপিলের ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী জাতীয় সংসদে গৃহীত হয় ১৯৯৬ সালে। এ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে অ্যাডভোকেট এম সলিমউল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন। ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্ট বিভাগ এ রিট খারিজ করেন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বৈধ ঘোষণা করা হয়।
এই সংশোধনীর বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এম সলিমউল্লাহসহ অন্যরা ১৯৯৮ সালে হাইকোর্টে রিট করেন। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল দেন। হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট রায় দেন।


