নিজস্ব প্রতিবেদক : সাংবাদিকদের স্বাধীনতায় অন্তর্বর্তী সরকার এক ইঞ্চিও আটকাবে না বলে জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) ‘নতুন বাংলাদেশ গঠনে গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
শফিকুল আলম বলেন, ‘জুলাইয়ের ১৪ তারিখ থেকে আগস্টের ৫ তারিখ পর্যন্ত একটা ভয়াবহ সময় পার করেছি। আমরা ট্রমার মধ্যে ছিলাম। মুখটাকে বন্ধ করতে যা ইচ্ছা তাই করেছে। অনেকে তাদের দালাল হিসেবে কাজ করেছে। সাংবাদিকতা করতে গিয়ে দালালি করেছেন। অনেক সাংবাদিক কিন্তু স্বৈরাচারের সঙ্গে তেলযুদ্ধে পারেননি। কম তেল হলেই আউট। ১৫টি বছর আমরা এভাবে কাটিয়েছি।
কোনো সাংবাদিক আহত হোক, সেটা চান না জানিয়ে শফিকুল আলম বলেন, ‘এমন বাংলাদেশ চাই যেখানে কোনো গণমাধ্যমকর্মী যাতে আহত না হন। যারা সংবাদপত্র চালান তাদের একটা বড় দায় রয়েছে। মালিকপক্ষ সাংবাদিকদের সেফটি ইকুইপমেন্ট পর্যাপ্তভাবে দেন না। ভিজে যে রিস্ক নিয়ে সংবাদ কাভার করেন, সে রিস্ক কেউ নেয় না।’
যারাই সংবাদপত্র চালাবেন, যাদের রাস্তায় পাঠান তাদের যেন সেফটি গিয়ার দেয়া হয়, অন্যথায় প্রতিবাদ করার পরামর্শ দিয়েছে প্রেস সচিব।
তিনি আরও বলেন, ‘কোনো প্রতিবেদককে যেন সেফটি গিয়ার বাদে সংবাদ কাভার করতে না হয়। বাংলাদেশের সবাই যেন প্রত্যেকটা ঘটনা রিস্ক ফ্রি ওয়েতে কাভার করেন।’
শফিকুল আলম বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ হচ্ছে ফ্রিডম অব প্রেস, স্পিচ, অ্যাসোসিয়েশন যেন নিশ্চিত করা হয়। কারও স্বাধীনতায় আমরা এক ইঞ্চি আটকাবো না। এরকম স্বাধীনতা বাংলাদেশের ইতিহাসে হয়নি। কেউ বলতে পারবে না কাউকে আমরা একটা নিউজের ক্ষেত্রে মাথা ঘামিয়েছি। অনেকে বলছেন আমাদের সময়ে মামলা হচ্ছে, কিন্তু গিয়ে দেখেন আমরা কেউ এর মধ্যে আছে কি না।’
অনেক সাংবাদিকের অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাদ পড়েছে, সেটি রিভিউ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব।
তিনি বলেন, ‘আমরা স্বাধীন জার্নালিজমে বিশ্বাস করি। ড. ইউনূস নিজে বলেছেন দরকার হয় আমাদের নিয়েও লেখেন। আপনারা লেখেন, আমাদের ভুলত্রুটি না ধরায় দিলে জানবো কি করে। এপাশ ওপাশ দেখানোর দায়িত্ব সংবাদমাধ্যমের। আপনি জাস্ট সাংবাদিকতা করেন, যেটা এথিক্যাল জার্নালিজম, যাতে কোনো লোকজন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। সজ্ঞানে করবেন না অজ্ঞানেও যেন না করেন।’
মিডিয়া কমিশন গঠন করা হয়েছে জানিয়ে শফিকুল আলম বলেন, ‘আপনারা দেখেন তাদের কাজ কি। সবার সঙ্গে বসে আমরা একটা প্রেস ফ্রিডম গড়তে চাই। যেখানে কোনো অবস্ট্যাকল যেন না থাকে। যেই মালিকই আসুক না কেন তারা যেন আপনার মুখটাকে বন্ধ না করে।’
যারা বেতন দিতে পারবেন না, তাদের গণমাধ্যম না চালানোর আহ্বান জানিয়ে প্রেস সচিব বলেন, ‘অনেক বছর ধরে ওয়েজ বোর্ড গঠন হচ্ছে না। সাংবাদিকদের যদি ইনভেস্ট না করতে পারেন, বন্ধ করে দিন।’