নিজস্ব প্রতিবেদক: মানিকগঞ্জের সিংগাইরে আশংকাজনক হারে বেড়ে গেছে খুনের ঘটনা। একের পর এক খুনের ঘটনায় এলাকায় আতংক বিরাজ করছে। নিরাপত্তা নিয়েও উদ্বিগ্ন উপজেলাবাসী। অপরদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দাবি. পারিবারিক দ্বন্দ্ব, পরকীয়া প্রেম ও মাদক ব্যবসার জের ধরে অধিকাংশ খুনের ঘটনা ঘটলেও রহস্য উন্মোচনসহ জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার পরেও আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে তারা সার্বক্ষনিক কাজ করছেন বলে জানান।
থানা পুলিশ ও বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, গত ২৫ নভেম্বর রাত সাড়ে ৯ টার দিকে উপজেলার বায়রা ইউনিয়নের বাড্ডা গ্রামে সৌদি প্রবাসির স্ত্রী তানিয়া আক্তার পরকীয়া প্রেমের জেরে খুন হন। খুনের সাথে জড়িত মাদরাসা শিক্ষক প্রেমিক মাহাদী হাসান গ্রেপ্তার হয়েছে। গত ৮ নভেম্বর দুপুরে ফোর্ডনগর ধলেশ্বরী নদীর মিলনের ঘাট থেকে রুবেল নামের এক যুবকের লাশ উদ্ধার করেন থানা পুলিশ। খুনের আগে রুবেল প্রতিবেশী ভাতিজা বিজয় ও তার প্রেমিকা শ্রাবনীর আপত্তিকর ছবি দিয়ে ব্ল্যাকমেলিং করার চেষ্টা করলে ৮ নভেম্বর রাতে বাড়ি থেকে ফোনে ডেকে নিয়ে হত্যা কারে লাশ নদীতে ফেলে দেয়। তালেবপুর ইউনিয়নের উত্তর কাংশা গ্রামে ভাবী মনিরার সাথে দেবর ঝন্টু পরকীয়া প্রেমের জের ধরে সিংগাপুর প্রবাসি বড় ভাই উজ্জল নামের এক ব্যক্তিকে ১২ অক্টোবর হত্যা করে লাশ প্লাস্টিকের ড্রামে ভরে নদীতে ফেলে দেয়। ঘটনার ১৮ দিন পর গত ৩০ অক্টোবর বিকেলে নিহতের লাশ উদ্ধার করা হয়। একই দিন সকালে চান্দহর ইউনিয়নের শান্তিপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের কাছ থেকে হত্যার শিকার আবু বক্কর (১৪) অটোরিকসা চালকের লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত আবু বক্কর ঢাকা জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলার কৌলাইল ইউনিয়নের মাসাইল গ্রামের আলম মোল্লার ছেলে। তার খুনের রহস্য পুলিশ এখন পর্যন্ত উদঘাটন করতে পারেনি।
এদিকে গত ৬ অক্টোবর পৌর এলাকার নয়াডাঙ্গী মহল্লায় ছেলের বউ ও তার প্রেমিকার হাতে খুন হন শাশুড়ি হায়াতন নেছা (৬৫)। গত ২০ সেপ্টেম্বর দুপুরে ধল্লা ইউনিয়নের গাজিন্দা বড় পাড়া গ্রামের হজরত আলীকে পূর্ব শক্রতার জের প্রতিবেশীরা পিটিয়ে আহত করে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৬ অক্টোবর মারা যান তিনি। ১৬ সেপ্টেম্বর বিকেলে ধল্লা পাওয়ার জেনারেশন সংলগ্ন ধলেশ্বরী নদী থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেন থানা পুলিশ। গত ১৪ সেপ্টেম্বর ভোরে তালেবপুর গ্রামে চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে মুক্তার মিয়া নামের এক ব্যক্তি নিহত হন।
৩ সেপ্টেম্বর ভোরে ধল্লা ইউনিয়নের খাসের চর লাঙ্গুলিয়া গ্রামের পেঁপে ক্ষেত থেকে জবেদ আলী (৪৫) নামের এক কৃষকের লাশ উদ্ধার করেন পুলিশ।
এ ব্যাপারে সিংগাইর থানার ওসি মোঃ জাহিদুল ইসলাম জাহাঙ্গীর পারিবারিক ও পরকীয়া প্রেমের জেরে এসব খুনের ঘটনা স্বীকার করে বলেন, অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা ও মানুষকে সচেতনতায় শতভাগ কাজ করে যাচ্ছি।