নিজস্ব প্রতিবেদক : পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীর অংশগ্রহণ বাড়াতে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ কে ২ অনুরোধ জানিয়ে চিঠি পাঠিয়েছে ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন (ডিবিএ)। চিঠিতে মূলধনী আয়ের উপর থেকে বিদ্যমান কর স্থগিত এবং সিকিউরিটিজ লেনেদেনের উপর অগ্রিম আয়কর ০.০৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ০.০২ শতাংশ করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে ডিবিএ।
ডিবিএর প্রেসিডেন্ট সিফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এ চিঠিতে অর্থ উপদেষ্টার উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে, পুঁজিবাজারের স্টক ব্রোকারদের একমাত্র সংগঠন ডিএসই ব্রোকার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ) প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে বাংলাদেশ পুঁজিবাজারের উন্নয়নে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি, ডিএসই, সিডিবিএল, বাংলাদেশ ব্যাংক, এনবিআরসহ বাজার মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি ব্যবসায়ীক সংগঠনের সাথে একযোগে কাজ করে যাচ্ছে। আপনারা জেনে খুশী হবেন যে, পুঁজিবাজারে ইতিবাচক কর্মকান্ডের দরুন ডিবিএ ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক সংগঠন এশিয়া সিকিউরিটিজ ফোরাম (এএসএফ)-এর সদস্যপদ লাভ করেছে এবং আন্তর্জাতিক মহলে স্থান করে নিয়েছে।
বাংলাদেশ পুঁজিবাজার গত কয়েক বছর ধরে কঠিন সময় পার করছে। নানা ঘটনার নেতিবাচক প্রভাব পুঁজিবাজারকে অস্থির করে দিয়েছে। এই প্রতিকূল পরিস্থিতির মাঝে শেয়ার দরে দু‘দফায় ফ্লোর প্রাইস আরোপসহ বেশকিছু সিদ্ধান্ত বাজারের শৃংখলা ও স্বাভাবিক কার্যক্রমকে নষ্ট করে দিয়েছে এবং বাজারের পতন দীর্ঘায়িত করেছে। এই দীর্ঘ পতনের ফলে দেশি বিদেশি বহু বিনিয়োগকারী আস্থা হারিয়ে বাজার থেকে পুঁজি তুলে নিয়েছে।
আস্থার সংকটের সাথে তারল্য সংকট একাকার হয়ে বাজারের ধারাবাহিক পতন দীর্ঘায়িত হচ্ছে। দীর্ঘ এই পতনের ফলে লাখ লাখ বিনিয়োগকারী তাদের পুঁজি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে। বাজার সূচক গত ৪ বছরের মধ্যে সর্বনিম্নে অবস্থান করছে। এই অবস্থায় বিনিয়োগকারীসহ বাজার মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠানগুলো অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। এই সংকট মোকাবিলায় বাজারে বড় বিনিয়োগকারী আনা জরুরী।
১) বিদ্যমান আয়কর আইনে মূলধনী আয়ে ৫০ (পঞ্চাশ) লাখ টাকার অধিক আয়ের উপর স্তরভিত্তিক করারোপ করা হয়েছে। অন্যদিকে বিগত ও বর্তমান বছরে কোন মূলধনী লোকসানের ভবিষ্যৎ মূলধনী আয়ের সাথে সমন্বয় করার বিধান রাখা হয়নি। এই করারোপের ফলে বড় বিনিয়োগকারী বিনিয়োগের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে বাজার বিমূখ হয়ে পড়েছে। মূলধনী আয়ের উপর বিদ্যমান করের ছাড় বাজারে বিনিয়োগকারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করবে। এমতাবস্থায় দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও অগ্রগতির স্বার্থে পুঁজিবাজারকে বিনিয়োগ সমৃদ্ধ করতে মূলধনী আয়ের উপর বিদ্যমান কর কমপক্ষে ২ (দুই) বছর স্থগিত করার জন্য বিনীত অনুরোধ করছি।
২) বর্তমানে ব্রোকারেজ হাউজগুলো দুটি স্তরে কর প্রদান করে থাকে। প্রথমতঃ সিকিউরিটিজ ক্রয়–বিক্রয়ের উপর ০.০৫% এবং দ্বিতীয়তঃ কর্পোরেট আয়কর হিসেবে, যেটি বেশী হয় তা চুড়ান্ত কর হিসেবে গন্য করা হয়। এ দ্বিস্তরের কর ব্যবস্থা মন্দা বাজার পরিস্থিতিতে ব্রোকারদের ক্ষতি করে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ব্রোকারদের আয় না হলেও আয়কর প্রদান করতে হয় এবং মাঝারী বাজারে এই করের হার ৬০% বা তারও বেশী ছাড়িয়ে যায়। এরুপ করনীতি ব্রোকারদের ব্যবসাকে সংকুচিত করে দিয়েছে এবং আর্থিক সংকটের দরুন অনেক ব্রোকারেজ প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এমতাবস্থায় পুঁজিবাজারে ব্রোকারেজ হাউজের ট্রেডিং কার্যক্রম সক্রিয় ও সচল রাখতে রাজস্ব করহার ০.০৫% থেকে কমিয়ে ০.০২% করার জন্য বিনীত অনুরোধ করছি। আপনাকে ধন্যবাদ।